
বিমান ওঠানামার সময় কেবিন ক্রুরা প্রায়ই যাত্রীদের সিট সোজা রাখতে অনুরোধ করেন। সাধারণভাবে এটিকে অনেকে নিয়মরক্ষার বিষয় বলে মনে করলেও, এর পেছনে রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ নিরাপত্তাজনিত কারণ।
এ বিষয়ে অ্যাভিয়েশন ট্রেনিং ইন্ডিয়ার প্রতিষ্ঠাতা কর্নেল রাজগোপালন জানান, টেকঅফ এবং ল্যান্ডিং—এই দুটি সময় বিমানের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ধাপ। এ সময় যাত্রীদের যদি সোজা ভঙ্গিতে বসানো যায়, তাহলে কোনো জরুরি পরিস্থিতিতে তাঁরা দ্রুত প্রতিক্রিয়া জানাতে পারেন বা ‘ব্রেস’ পজিশনে যেতে পারেন।
তিনি বলেন, “রিলাক্স করে রিক্লাইন করা সিটে বসলে জরুরি অবস্থায় নিজের প্রতিরক্ষা করা কঠিন হয়ে পড়ে। উপরন্তু, এমন অবস্থায় সামনের সিটে মাথা ধাক্কা লাগার ঝুঁকিও বেড়ে যায়।”
একটি সোজা সিট যাত্রীর দেহের জন্য একটি স্থিতিশীল ভরকেন্দ্র তৈরি করে, যা দুর্ঘটনার সময় আঘাত কমাতে সহায়তা করে। সেইসঙ্গে, সিট লক থাকা অবস্থায় যাত্রীর শরীর সুরক্ষিত অবস্থায় থাকে এবং তা কোনো চোটের সম্ভাবনা কমায়।
এই নিয়ম আন্তর্জাতিক বেসামরিক বিমান চলাচল সংস্থা (ICAO)-র নির্দেশিকা অনুযায়ী ডিরেক্টরেট জেনারেল অফ সিভিল অ্যাভিয়েশন (DGCA) কর্তৃক সব এয়ারলাইনের ক্ষেত্রে বাধ্যতামূলক।
অ্যাভিয়েশন বিশেষজ্ঞ ধৈর্যশীল ভাণ্ডেকর জানান, “উইন্ডো ব্লাইন্ড খোলা রাখা, ট্রে টেবিল গুটিয়ে রাখা এবং সিট ব্যাক সোজা রাখার নির্দেশ শুধুমাত্র নিয়ম নয়, বরং বিপদের সময় যাত্রীদের সঠিকভাবে প্রস্তুত রাখতে এইসব নির্দেশ পালন করা অত্যন্ত জরুরি।”
তাই, পরবর্তীবার যখন কেবিন ক্রু আপনার সিট সোজা করতে বলবেন, তখন মনে রাখবেন—এটি শুধুমাত্র স্বাচ্ছন্দ্যের প্রশ্ন নয়, বরং এটি আপনার এবং আপনার আশেপাশের যাত্রীদের নিরাপত্তার সঙ্গেও জড়িত।
রিফাত