ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১১ অক্টোবর ২০২৪, ২৫ আশ্বিন ১৪৩১

বায়ান্ন বাজার তিপ্পান্ন গলি

মোরসালিন মিজান

প্রকাশিত: ০০:১০, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪

বায়ান্ন বাজার তিপ্পান্ন গলি

ঢাকার সড়কে বিশৃঙ্খলা। দেখার কেউ যেন নেই

ঢাকার রাস্তাগুলোর কী যে বাজে অবস্থা হয়েছে! কোনো ধরনের শৃঙ্খলা নেই। আইন মেনে গাড়ি চালানোর প্রবণতা কমে প্রায় শূন্যের কোটায় নেমে এসেছে। চালকরা যে যার মতো করে গাড়ি চালাচ্ছেন। বাধা দেওয়ার কেউ নেই। ফুটপাতে দেদার উঠছে মোটরসাইকেল। গাড়ি ফেলে রাখা হচ্ছে ফুটপাতে। এমনকি উল্টো পথে গাড়ির চালানোর দৃশ্য চোখে পড়ছে হরহামেশা। আর ব্যাটারি চালিত রিক্সার কথা তো না বললেই নয়।

এই রিক্সা ঢাকার প্রায় সব প্রধান সড়ক দিয়ে চলাচল করছে। সিনেমায় নায়িকারা যেভাবে কোমর দুলিয়ে নাচ করেন, অনেকটা সেভাবেই ডানে একবার বাঁয়ে একবার চলছে রিক্সাগুলো। ফলে মহা বিশৃঙ্খলা দেখা দিচ্ছে সড়কে। অলিগলির অবস্থাও খারাপ। এমন নৈরাজ্যকর পরিস্থিতির কারণে যানজট বেড়ে কয়েকগুণ হয়ে গেছে। কিন্তু দেখার কেউ যেন নেই। কিছু দিন আগে আন্দোলনের সময় ট্রাফিক পুলিশদের নির্বিচারে পেটানো হয়েছে। আগুন দেওয়া হয়েছে পুলিশ বক্সে।

তার পর অনেকদিন কাজে যোগ দেননি তারা। বর্তমানে যোগ দিলেও, আগের মতো তৎপর হতে দেখা যাচ্ছে না। সড়কে যত বিশৃঙ্খলা সবই তাদের সামনে ঘটছে। তারা নিয়ন্ত্রণে আনতে পারছেন না। যেভাবে খুশি গাড়ি চালানোর পরও মামলা হচ্ছে না চালকের বিরুদ্ধে। অদ্ভুত স্বাধীনতা বটে! অবস্থা বেগতিক দেখে যানজট নিয়ন্ত্রণ করে সড়কপথে গণমানুষের ভোগান্তি কমাতে ১১ দফা সুপারিশ প্রস্তাব করেছে যাত্রী অধিকার আন্দোলন।

সংগঠনের পক্ষ থেকে সম্প্রতি দেওয়া এক বিবৃতিতে সুপারিশ জানিয়ে বলা হয়, রাজধানীর প্রধান সড়কে রিক্সা, অটোরিক্সা ও ব্যাটারিচালিত রিক্সা চলাচল নিষিদ্ধ করতে হবে। বিশেষ করে সকাল ৭টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ ও কম গতির এসব বাহন প্রধান সড়ক অতিক্রম করতে পারবে না। রিক্সা এলাকাভিত্তিক বাইপাস সড়ক, সাইড সড়ক, গলিপথ ও যেসব সড়কে বাস চলাচল করে না সে সব রাস্তায় চলাচল করবে। কিন্তু যারা এসব দাবি নিয়ে কাজ করবেন তারা কোথায়? কী ভাবছেন? কে বলবে! 
শরৎকালেও লোডশেডিং ॥ গত কিছু দিন ধরে ভীষণ গরম। ভ্যাপসা গরমে ঘরে-বাইরে কোথাও টেকা যাচ্ছে না। হয়তো বৃষ্টি হচ্ছে, এর পর পরই গরম। এই অবস্থায় আবার শুরু হয়ে গেছে লোডশেডিং! যখন তখন বিদ্যুৎ চলে যাচ্ছে। ফলে বড় দুর্ভোগে পড়েছেন রাজধানীবাসী। বিগত বছরগুলোতে নির্বিঘœ ছিল বিদ্যুৎ সরবরাহ। গ্রীষ্মেও তেমন দুর্ভোগ পোহাতে হয়নি। সত্যি যেন জাদুঘরে চলে গিয়েছিল লোডশেডিং।

কিন্তু বর্তমানে বস্তুটাকে কীভাবে যেন ফিরিয়ে আনা হয়েছে। শরৎকালে এমন দুর্গতি কল্পনাও করতে পারেননি নগরবাসী। অথচ পরিস্থিতির শিকার হচ্ছেন তারা। কেন এই অবস্থা? এটা জরুরি প্রশ্ন। উত্তরও দেওয়ার চেষ্টা করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। তবে সমাধান সহসাই হচ্ছে না। হচ্ছে না যে, তা বোঝা গেছে সরকারের বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খানের বক্তব্যে।

গত বুধবার সচিবালয়ে বিদ্যুৎ বিভাগের সভাকক্ষে তিনি বলেছেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে ২০ দিনের মতো সময় লাগবে। তার মানে, সেপ্টেম্বর 
মাসজুড়েই থাকবে লোডশেডিং। গরমের এই সময়টা স্বস্তিতে কাটানোর কোনো সুযোগ থাকবে না। আর যদি এ সময়ের মধ্যে নতুন কোনো সমস্যা সংকট দেখা দেয় তা হলে দুর্ভোগ আরও লম্বা হতে পারে।

×