ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

চলতি মাসের মধ্যে সব শিক্ষার্থীকে টিকার আওতায় আনার টার্গেট বছরের মাঝামাঝিতে এসএসসি পরীক্ষা

স্কুল কলেজ বন্ধ হচ্ছে না, টিকার ওপর জোর দেয়া হবে ॥ শিক্ষামন্ত্রী

প্রকাশিত: ২৩:১৭, ১১ জানুয়ারি ২০২২

স্কুল কলেজ বন্ধ হচ্ছে না, টিকার ওপর জোর দেয়া হবে ॥ শিক্ষামন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ করোনার প্রকোপ বাড়লেও আপাতত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হচ্ছে না বরং টিকা কর্মসূচী জোরদার করা হবে। পাশাপাশি স্বাস্থ্যবিধি মানার কার্যক্রমে মনিটরিং আরও জোরদার করা হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি। তিনি বলেছেন, আমাদের বেশিরভাগ শিক্ষার্থীই টিকার আওতায় এসেছে। তাই আপাতত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ না করে আমরা টিকা কর্মসূচী জোরদার করব। স্বাস্থ্যবিধি মানার কার্যক্রমে মনিটরিং আরও জোরদার করব। যেভাবে সীমিত পরিসরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো চলছিল সেভাবেই চলবে। সোমবার সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রী আরও বলেন, করোনার সংক্রমণ বিবেচনায় বছরের মাঝামাঝি হবে এ বছরের এসএসসি পরীক্ষা। শুধু তাই নয়, ২০২১ সালের মতো ২০২২ সালের এইচএসসি পরীক্ষাও সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি। তিনি বলেছেন, ২০২০ সালে আমরা এসএসসি পরীক্ষা নিতে পেরেছিলাম। কিন্তু করোনার কারণে এইচএসসি পরীক্ষা নিতে পারিনি। কিন্তু ২০২১ সালে সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে হলেও এসএসসি এবং এইচএসসি পরীক্ষা নিয়েছি। করোনার প্রকোপ আবার বাড়ছে। তাই, ২০২২ সালেও এসএসসি পরীক্ষা সংক্ষিপ্ত সিলেবাসেই হবে। করোনা সংক্রমণ দ্রুত বেড়ে যাওয়ায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা থাকবে কিনা, কিংবা কীভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে, তা নিয়ে রবিবার রাতে করোনা নিয়ন্ত্রণে গঠিত সরকারের পরামর্শক কমিটির সঙ্গে সভা করেন শিক্ষামন্ত্রী। ওই সভার সূত্র ধরে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, গতকালের (রবিবার) আলোচনায় যেটি এসেছে, আমরা যখন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দিয়েছিলাম তখন আমাদের সংক্রমণের হার ছিল ৭ বা তার কাছাকাছি। এখনও সে পর্যায়ে রয়েছে। তবে যখন খুলেছিলাম তার থেকে এখন ভাল অবস্থানে আছি। কারণ, তখন কোন ভ্যাকসিন ছিল না। এখন আমাদের শিক্ষার্থীদের একটি বড় অংশ টিকার আওতায় চলে এসেছে। এ মাসের মধ্যে আশা করছি সবাই টিকার আওতায় চলে আসবে। অন্তত এক ডোজ টিকা সবার হয়ে যাবে। এ পরিস্থিতিতে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, এখন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করব না। তবে, টিকা কর্মসূচী আরও জোরদার করা হবে বলে জানান তিনি। দীপু মনি বলেন, যেভাবে সীমিত পরিসরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো চলছিল সেভাবেই চলবে। পরামর্শক কমিটির সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখব। সাতদিন পরেই আবার বসছি। যদি কোন সময় আমাদের কাছে মনে হয়, তাহলে বন্ধ করে দেব। আশা করছি, টিকাদান ব্যাপকহারে ঘটলে সে প্রয়োজনটা হয়ত হবে না। তিনি বলেন, ওমিক্রনের যে ট্রেন্ড, যখন কেউ আক্রান্ত হচ্ছে পুরো বাড়ি ধরে। অর্থাৎ পুরো পরিবার আক্রান্ত হচ্ছে। আমি আমার শিক্ষার্থীকে বাসায় রাখলেও তার আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকছেই। গত দেড় বছরে যে ঘাটতি হয়েছে সেটা পূরণে আমাদের চেষ্টা করতে হবে, সামনে যাতে ঘাটতি না হয় সে চেষ্টা করতে হবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তারা যতক্ষণ থাকবে তাদের সুরক্ষিত রাখতে আমরা চেষ্টা করব। কেউ সংক্রমিত কিনা তার নিজেরও কোন উপসর্গ আছে কিনা সেটাও আমরা মনিটর করব। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, কিছু শিক্ষার্থী থাকতে পারে যাদের ঝুঁকি বেশি। তাদের আমরা বলব, তারা হয়ত না এসে অনলাইনেই ক্লাস করতে পারে। এরা কারা যারা ইমিউন কম্প্রেমাইজড অর্থাৎ ক্যান্সার প্যাশেন্ট, কারও যদি ক্রনিক কিডনি অসুখ থাকে বা কারও যদি এ্যাজমা থাকে (শিক্ষার্থী-শিক্ষক)। আমরা বলব, তাদের অনেক বেশি সতর্ক থাকতে। আমাদের বিকল্প যে পদ্ধতি সেগুলোও আমরা চালিয়ে যাব। কেবিনেট থেকে সিদ্ধান্ত এসেছে, ১২ জানুয়ারির পর থেকে টিকা না দেয়া কেউ যেন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে না আসে। আমরা টিকা কার্যক্রম চালিয়ে যাব। ৩১ জানুয়ারির মধ্যে শেষ হয়ে যাবে, আশা করছি আমরা। এ সময়ের মধ্যে যাদের টিকা দেয়া হয়েছে তারা ক্লাসে আসবে, যাদের দেয়া হয়নি তারা এ কদিন অনলাইনে বা টেলিভিশনে ক্লাস করবেন। টিকা পেয়ে যাওয়ার পর তারা ক্লাস করবেন সরাসরি। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণীর পাশাপাশি আগের নিয়মেই প্রাক-প্রাথমিক ও প্রাথমিক শ্রেণীতেও ক্লাস চলবে বলে জানিয়ে ডাঃ দীপু মনি বলেন, ১২ বছরের কম বয়সীদের ক্ষেত্রে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এখনও টিকার অনুমোদন দেয়নি। আমরা তাদের সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষা করব। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় যেটা বলেছে, তারা কঠোর মনিটরিং করছেন এবং এখন পর্যন্ত কোথাও সংক্রমণের কিছু পাননি। এখন আপাতত তারা ক্লাস চালিয়ে যাবেন। এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, নতুন বছর ২০২২ সালেও আমরা পরীক্ষা নিতে চাই। যারা পরীক্ষা দেবে তারা পড়াশোনা করতে পারেনি। আমরা একটা আভাস দিয়েছি যে বছরের মাঝামাঝি নেব। ক্লাস করিয়ে নিয়ে সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে বছরের মাঝামাছি পরীক্ষা নেব, আমাদের সিদ্ধান্ত সে জায়গায় আছে। সুনির্দিষ্ট তারিখে দেয়া সম্ভব নয়। আমরা পর্যযক্ষেণ করব, ক্লাস করাতে থাকব, যখন নেয়ার মতো হয় তখন নেব। দুই/তিন মাস আগে আমরা জানতে পারব।
×