ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

মতবিনিময়ে ওয়াসার এমডি

পয়োনিষ্কাশন ব্যবস্থা রাজধানীর ৮০ ভাগ ভবনে নেই

প্রকাশিত: ২৩:৩৭, ৫ ডিসেম্বর ২০২১

পয়োনিষ্কাশন ব্যবস্থা রাজধানীর ৮০ ভাগ ভবনে নেই

স্টাফ রিপোর্টার ॥ রাজধানী ঢাকা মহানগরীর ৮০ ভাগ আবাসিক-বাণিজ্যিক ভবনে পয়োনিষ্কাশন ব্যবস্থা নেই বলে জানিয়েছেন ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাকসিম এ খান। তিনি বলেন, রাজউক আইনে আবাসিক এবং বাণিজ্যিক ভবনে পয়োবর্জ্য ব্যবস্থাপনার বিধান রয়েছে। কিন্তু ঢাকার মাত্র ২০ শতাংশ ভবনে এই ব্যবস্থা রয়েছে। বাকি ভবনগুলো সিটি কর্পোরেশনের নালায় সরাসরি সংযোগ দেয়া হয়েছে। শনিবার দুপুরে রাজধানীর কাওরানবাজারে ওয়াসা ভবনে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা জানান। চলমান কার্যক্রম নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করে ঢাকা ওয়াসা। মতবিনিময় সভায় ওয়াসা এমডি আরও বলেন, আগামী ছয় মাসের মধ্যে পয়োবর্জ্য ব্যবস্থাপনা ঠিক করতে হবে। এজন্য ৬ মাসের সময় দিয়েছে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি)। এই সময়ের মধ্যে তা না করলে এই নালাগুলো বন্ধ করে দিবে ডিএনসিসি। তিনি বলেন, এই অব্যবস্থাপনা দূর করতে ঢাকা রাজধানীর দাসেরকান্দি, নারায়ণগঞ্জের পাগলা, উত্তরা, রায়ের বাজার ও মিরপুরে পৃথক পাঁচটি প্ল্যান্ট স্থাপনের কাজ হাতে নেয়া হয়েছে। এর মধ্যে দাসেরকান্দির কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। আগামী ২০২৩ সালের মধ্যে এগুলো বাস্তবায়ন হলে খাল-নদী দূষণমুক্ত হবে। ওয়াসা ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, ঢাকা ওয়াসার মূল লক্ষ্য পরিবেশবান্ধব, টেকসই ও গণমুখী পানি ব্যবস্থাপনা। এ লক্ষ্যে ঢাকা ওয়াসা নানামুখী কর্মসূচীর আওতায় নানামুখী উদ্যোগ গ্রহণ করে। তারই পরিক্রমায় ঢাকা ওয়াসা দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে পানি সরবরাহের ক্ষেত্রে একটি রোল মডেল। বর্তমানে ঢাকা ওয়াসার দৈনিক পানি উত্তোলন ও উৎপাদন সক্ষমতা ২৭০-২৭৫ কোটি লিটার এবং দৈনিক ২৬০-২৬৫ কোটি লিটার পানির চাহিদার পুরোটাই ঢাকা ওয়াসা সরবরাহ করছে। বর্তমানে ঢাকা ওয়াসার মোট উৎপাদিত পানির শতকরা ৩৩ ভাগ ভূ-উপরিস্থ উৎস থেকে সংগ্রহ করা হয় জানিয়ে তাকসিম এ খান বলেন, আর ৬৭ ভাগ পানি ভূ-গর্ভস্থ উৎস তথা গভীর নলকূপ হতে আসছে। ২০২৩ সাল নাগাদ ঢাকা শহরে সরবরাহকৃত পানির ৭০ ভাগ আসবে ভূ-উপরিস্থ পানির উৎস থেকে। অবশিষ্ট ৩০ ভাগ ভূ-গর্ভস্থ তথা গভীর নলকূপ থেকে। বর্তমানে ঢাকা ওয়াসার ১৫৬টি পানির পাম্পে এসসিডিএ (সুপারভাইজরি কন্ট্রোল ও ডেটা এ্যাকুইজেশন) স্থাপন করেছে। এতে পাম্পগুলো সার্বক্ষণিক কন্ট্রোল রুমে বসে মনিটরিং ও পরিচালনা করার সুবিধা হয়েছে। মোবাইল এ্যাপের মাধ্যমে পানি সরবরাহ ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। ঢাকা শহরে মোট ১৪৫টি ডিএমএর (ডিস্ট্রিক্ট মিটার্ড এরিয়া) মধ্যে এ পর্যন্ত ৭১টি ডিএমএ স্থাপন করা হয়েছে জানিয়ে তাকসিম এ খান বলেন, অবশিষ্ট ডিএমএগুলোর কাজ চলমান আছে যা জুন, ২০২৩ সালের মধ্যে সম্পন্ন হবে। ডিএমএ হল এলাকা ভিত্তিক পানি সরবরাহ ব্যবস্থার একটি আধুনিক পদ্ধতি। কোন এলাকায় পানির স্বল্পতা দেখা দিলে পার্শ্ববর্তী ডিএমএ হতে স্বয়ংক্রিয়ভাবে পানি ইমপোর্ট হবে অথবা উদ্বৃত্ত হলে পার্শ্ববর্তী ডিএমএতে এক্সপোর্ট হবে। রাজধানীর সবগুলো জোনে গ্রাহকদের সমস্যা এবং অভিযোগ নিষ্পত্তিকল্পে ডিজিটাল কলসেন্টার ওয়াসা লিংক ১৬১৬২ চালু আছে। নগরীর যানজট পরিস্থিতি বিবেচনা করে পাম্প ব্রেকডাউন হলে তা সর্বোচ্চ ১২ ঘণ্টার মধ্যে চালু করার লক্ষ্যে আবারও ৩টি সাব-অফিস চালু করা হয়েছে। পরিবেশবান্ধব পানি ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে ঢাকা ওয়াসার চলমান কয়েকটি প্রকল্পের বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, সায়েদাবাদ পানি শোধনাগার নির্মাণ প্রকল্প, ফেজ-৩ এর প্রস্তুতিমূলক কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে।
×