ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

দাম কমায় ভোক্তারা খুশি *প্রতিকেজি কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকায়

শীতের সবজিতে ভরে উঠছে কাঁচা বাজার

প্রকাশিত: ১৯:৪৭, ৩ ডিসেম্বর ২০২১

শীতের সবজিতে ভরে উঠছে কাঁচা বাজার

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ প্রতিদিনই সরবরাহ বাড়ায় শীতের সবজিতে ভরে উঠছে ঢাকার কাঁচা বাজার। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে সবজি। নগরবাসী টাটকা সবজি পেয়ে খুশি। দাম কমে আসায় শাক- সবজি খাওয়া বাড়িয়েছেন ভোক্তারা। হাতবাড়ালেই পাওয়া যাচ্ছে ফুলকপি, বাধাকপি, শিম, লাউ ও বিভিন্ন জাতের শাক, পাতা পেঁয়াজ ও নতুন আলু। কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকা কেজি দরে। অথচ একমাস আগেও এই মরিচ কিনতে ক্রেতাদেরকে ব্যয় করতে হয়েছে ১৮০-২০০ টাকা। বাজার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সেই সময় প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারত থেকে আমদানি করা হয় মরিচ। সবজির সঙ্গে কমতে শুরু করেছে মাছের দাম। তবে চাল, ব্রয়লার মুরগি, আটা-ময়দা, সয়াবিন তেলের দাম বেড়েছে। কমেছে ডিম, দেশী পেঁয়াজ, পামওয়েল, আলু ও রসুনের দাম। স্থিতিশীল রয়েছে চিনি, মসুর ডাল ও গরু-খাসির মাংসের বাজার। শুক্রবার রাজধানীর কাওরান বাজারম, ফকিরাপুল বাজার, খিলগাঁও সিটি কর্পোরেশন মার্কেট, মালিবাগ রেলগেট বাজার ও মুগদা বড় বাজার ঘুরে নিত্যপণ্যের দরদামের এসব তথ্য পাওয়া গেছে। জানা গেছে, রাজধানীতে প্রতিদিনই শীতের সবজির সরবরাহ বাড়ছে। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আগের চেয়ে বেশি সবজিবাহী ট্রাক ও লরি আসছে ঢাকায়। এ কারণে সবজির দাম কমতে শুরু করেছে। দুসপ্তাহ আগেও প্রতিপিস ফুলকপি ৫০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন বিক্রি হচ্ছে ২৫-৩০ টাকায়। একইভাবে অন্যান্য সবজির দাম হ্রাস পেয়েছে। আগে ৭০-৮০ টাকার নিচে সবজি না পাওয়া গেলেও এখন তা ৪০-৫০ টাকার মধ্যে নেমে এসেছে। এ কারণে নগরবাসী সবজি কেনাকাটা বাড়িয়েছেন। শীতের সবজি খেতে স্বাদ ও এর একটি আদি ঐতিহ্য রয়েছে। দেশের মানুষ সারাবছর মুখিয়ে থাকে শীতের সবজির জন্য। হাইব্রিড ফসল উৎপাদন শুরু হওয়ায় বছরের অন্যান্য সময়ে শীতের সবজি পাওয়া গেলেও সেই সবজি খেতে তেমন স্বাদ হয় না। এছাড়া শীতে সবজির উৎপাদন অনেক ভাল হয়ে থাকে। এ প্রসঙ্গে কাওরান বাজারের সবজির পাইকারি বিক্রেতা মো. জসিম জনকণ্ঠকে বলেন, বাজারে শীতের সবজির সরবরাহ অনেক বেড়েছে। সামনে আরও বাড়বে। এ কারণে দাম কমতে শুরু করেছে। এছাড়া বাজারে নতুন আলু উঠতে শুরু করেছে। প্রতিকেজি নতুন আলু বিক্রি হচ্ছে ৬০-৭০ টাকায়। এর সঙ্গে পাতা পেঁয়াজ পাওয়া যাচ্ছে বাজারে। অন্যদিকে, বেশকিছু মুদিপণ্যের দাম বেড়েছে নিত্যপণ্যের বাজারে। এর মধ্যে মাঝারি মানের পাইজাম ও লতা চালে কেজিতে ১ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৪৮-৫৬ টাকা। এছাড়া মোটা মানের স্বর্ণা ও চায়না ইরি ৪৪-৪৮ এবং সরু নাজিরশাইল ও মিনিকেট বিক্রি হচ্ছে ৫৮-৭০ টাকায়। সবেচেয় বেশি বেড়েছে ময়দার দাম। প্রতিকেজি প্যাকেট ময়দা ৫০-৫৬ এবং খোলা ময়দা ৪৫-৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে খুচরা বাজারে। দাম বেড়ে সয়াবিন তেলের লিটার ১৪০-১৪৫, পাঁচলিটারের বোতল ৭৩০-৭৬০ এবং দাম কমে পামওয়েল লুজ ১৩২-১৩৫ টাকা লিটার দরে বিক্রি হচ্ছে। দাম কমে দেশী পেঁয়াজ ৫০-৫৫ এবং আমদানিকৃতটি ৪০-৫০, রসুন আমদানি ১২০-১৩০, দেশীটি ৬০-৮০, প্রতিহালী ডিম ৩২-৩৫, দাম বেড়ে ব্রয়লার মুরগি ১৪৫-১৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে খুচরা বাজারে। এছাড়া মাছের বাজারে সরবরাহ বেড়েছে। বিশেষ করে জাটকা সাইজের ছোট ইলিশ, চান্দিনা, সাডিন জাতের ইলিশ ও মিয়ানমারের ইলিশে ভরপুর বাজার। স্বাদ কম হলেও দাম কম হওয়ায় ক্রেতারা এসব কিনে নিচ্ছেন। নদী-নালা, খালবিল হাওর-বাওর ও পুকুর-ডোবায় পানি কমে আসায় দেশী জাতের মাছের সরবরাহ বেড়েছে। দাম কমে প্রতিকেজি মাঝারি সাইজের চিংড়ি বিক্রি হচ্ছে সাড়ে ৫শ’ থেকে ৬০০ টাকায়। এছাড়া রুই, কাতল, মৃগেল ও অন্যান্য মাছের দামও কিছুটা কমেছে।
×