ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

চট্টগ্রামে গণঅবস্থান কর্মসূচী পালিত

মন্ডপে হামলাকারীদের ট্রাইব্যুনালে বিচার দাবি

প্রকাশিত: ২১:৪২, ২৪ অক্টোবর ২০২১

মন্ডপে হামলাকারীদের ট্রাইব্যুনালে বিচার দাবি

স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম অফিস ॥ দেশের বিভিন্ন স্থানে পূজাম-পে প্রতিমা ভাংচুর, হিন্দু বাড়িতে হামলা, অগ্নিসংযোগ, হত্যা ও সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশ হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রীস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত। পরিষদের আহ্বানে শনিবারের অর্ধদিবস গণঅবস্থান ও গণঅনশন কর্মসূচীতে বক্তব্যে তিনি এ দাবি জানান। চট্টগ্রামে আয়োজিত সমাবেশ থেকে আগামী ৪ নবেম্বর শ্যামাপূজায় হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের দীপাবলী উৎসব বর্জনের ঘোষণাও দেয়া হয়। এছাড়া তিনি বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশন গঠনসহ ১১ দফা দাবি তুলে ধরেন। চট্টগ্রাম মহানগরীর আন্দরকিল্লা এলাকায় এ কর্মসূচী অনুষ্ঠিত হয়। এতে ব্যাপক লোক সমাগম ঘটে। গণঅবস্থান ও গণঅনশন কর্মসূচী শেষে ঐক্য পরিষদ, পূজা উদ্যাপন পরিষদসহ বিভিন্ন সংগঠনের ব্যানারে বিরাট এক মিছিল বের হয়, যা মহানগরীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে। কর্মসূচীর কারণে আন্দরকিল্লা এবং সংলগ্ন এলাকায় যানবাহন চলাচল ব্যাহত হয়। এ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত ১১ দফা দাবির উল্লেখ করতে গিয়ে বলেন, সুপ্রীমকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির নেতৃত্বে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশন গঠন করতে হবে। বস্তুনিষ্ঠ নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে সাম্প্রদায়িক হামলাকারী ও ইন্ধনদাতাদের অবিলম্বে গ্রেফতার করে বিশেষ ক্ষমতা আইন ও সন্ত্রাস দমন আইনের আওতায় ট্রাইব্যুনাল গঠন করে শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। এছাড়া অন্য দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানে সাম্প্রদায়িক উস্কানিদাতাদের বিশেষ ক্ষমতা আইনে বিচার, সাম্প্রদায়িক হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত মন্দির ও বাড়ি পুনর্নির্মাণ, গৃহহীনদের পুনর্বাসন, ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের যথাযথ ক্ষতিপূরণ, আহতদের চিকিৎসার ব্যবস্থা ও নিহত প্রত্যেকের পরিবারকে ২০ লাখ টাকা করে আর্থিক ক্ষতিপূরণ এবং পরিবারের এক সদস্যকে যোগ্যতা অনুযায়ী সরকারী চাকরি প্রদান। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার পরও প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর যেসব সদস্য দায়িত্ব পালনে গাফিলতি ও অবহেলা করেছেন এবং যে সকল জনপ্রতিনিধি সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসীদের মোকাবেলায় এগিয়ে আসেননি তাদের চিহ্নিত করে শাস্তিমূলক ও সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিও জানানো হয়েছে সমাবেশ থেকে। গণঅবস্থান কর্মসূচীতে রানা দাশগুপ্ত আগামী ৪ নবেম্বর শ্যামাপূজায় দীপাবলী উৎসব বর্জনসহ বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন পরিষদের প্রতিবাদী কর্মসূচীর সঙ্গে সংহতি প্রকাশেরও ঘোষণা দেন। এছাড়া গণঅবস্থান থেকে ঘোষিত দাবির অগ্রগতি পর্যালোচনা রেখে প্রয়োজনে আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে দাবির সমর্থনে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় অভিমুখে পদযাত্রার ঘোষণা দেন। দেশব্যাপী কর্মসূচীর অংশ হিসেবে শনিবার সকাল ৬টা থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত এ কর্মসূচী পালিত হয়। চট্টগ্রাম মহানগরী এবং বিভিন্ন উপজেলা থেকে সকল বয়সী লোকজন এসে আন্দরকিল্লা মোড়ে সমবেত হয়। কর্মসূচীতে আরও বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক রণজিৎ কুমার দে, জাসদ নেতা ইন্দু নন্দন দত্ত, কাউন্সিলর জহরলাল হাজারী, মহানগরী পূজা উদ্যাপন পরিষদের সভাপতি আশীষ কুমার ভট্টাচার্য প্রমুখ।
×