ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

শ্রমিক সংকট যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে, ইউরোপ জুড়ে জ্বালানির অভাব

প্রকাশিত: ১১:০৭, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২১

শ্রমিক সংকট যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে, ইউরোপ জুড়ে জ্বালানির অভাব

অনলাইন ডেস্ক ॥ সাম্প্রতিক এক জরিপ বলছে টিকাদান কর্মসূচীর পাশাপাশি কোভিড পরিস্থিতি অনেকটা স্বাভাবিক হয়ে আসার পর অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার কর্মসূচী বাস্তবায়নের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের কলাম্বিয়াতে শ্রমিক সংকট অর্থনীতিবিদদের জন্যে মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ক্যারিয়ার ক্লাউডের জরিপে বলা হচ্ছে, প্রতিজন বেকার ব্যক্তির বিপরীতে কর্ম খালি রয়েছে দ্বিগুনেরও বেশি অর্থাৎ ২.৩৭ শতাংশ। হাওয়াইতে এর পরিমান শুণ্য দশমিক ৪১ শতাংশ। আবার যুক্তরাষ্ট্রে কাজের বাইরে আছে ৮০ লাখেরও বেশি মানুষ। যুক্তরাষ্ট্রে শ্রমবিভাগের তথ্য বলছে কর্মের সুযোগ বাড়ছে অথচ শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না এ পরিস্থিতি প্রতিনিয়ত আরও কঠিন হচ্ছে। অনেকে বেকার ভাতা ছাড়াও কোভিডের সময় বিশেষ অর্থ সাহায্যকে শ্রমিক সংকটের কারণ বলে দায়ী করছেন। আবার আশি লাখেরও বেশি মানুষ কাজের বাইরে রয়েছেন অন্তত ৬ মাস ধরে। এর পাশাপাশি ২৭ লাখ মানুষ নিয়মিত তাদের বেকার ভাতা পাচ্ছেন। তবে তারা সপ্তাহে অতিরিক্ত ৩শ ডলারের সম্পুরক সহায়তা পাচ্ছেন না। ম্যানপাওয়ার গ্রুপ বলছে একই সময়ে মার্কিন কোম্পানিগুলো জানিয়েছে তাদের লোকবল ভীষণ প্রয়োজন। যুক্তরাষ্ট্রের অন্তত ১২টি শিল্পখাতে লোকবলের চাহিদা গত ১২ বছরে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। একই অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে ব্রিটেনে। ব্রিটেনে শ্রমিক সংকটের সঙ্গে যোগ হয়েছে জালানি সংকট। শ্রমিকের অভাবে শপিংমলগুলোতে চাহিদা অনুসারে পণ্য সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে না। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে ব্রিটেনের অভিবাসন আইন ও কোভিডকালীন সংকট। ব্রিটেনে শুধু গাড়ি চালকের অভাব রয়েছে এখন অন্তত ১ লাখ। বছরে ৫০ হাজার পাউন্ড বেতন দেওয়ার কথা বললেও চালক মিলছে না। বিশেষ করে ট্রাক বা লরি চালকের ভীষণ চাহিদা রয়েছে। জ্বালানি সংকটে এর দাম বেড়ে যাওয়া তা নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে খাদ্যপণ্যের ওপর। একই সঙ্গে কার্বনডাই অক্সাইডের ব্যবহারের ওপর বিধি নিষেধে এর প্রভাব পড়েছে প্যাকেজিং ও মাংস উৎপাদনের ওপর। সার কারখানা বন্ধ করে দেওয়ার কারণে খাদ্য শিল্পে প্রভাব স্পষ্ট হয়ে উঠছে। শতাধিক খাদ্যপণ্যে কার্বনডাই অক্সাইডের ব্যবহার ব্রিটেনে প্রশ্নের মুখে পড়ায় এধরনের পণ্যের যোগান কমে গেছে। খুচরা বিক্রেতারা এরই মধ্যে ক্রিসমাস ট্রি এবার অতিরিক্ত মূল্যে কিনতে হবে বলে ঘোষণা দিয়েছে। ম্যাকডোনাল্ডস, কেএফসি, গ্রেগস, সাবওয়ে ও নান্দোসের মত বড় বড় খাদ্য কোম্পানিগুলো চালক সংকটে ভুগছে।ব্রিটেনের সবচেয়ে বড় দুগ্ধজাত পণ্য সরবরাকারী আর্লা বলছে তাদের একচতুর্থাংশ পণ্য সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে না চালকের অভাবে। টেসকো, সেইন্সবারি, মরিসন্স, কো-অপ এন্ড আইচল্যান্ড ফুডস কোম্পানিরও একই অবস্থা। হ্যালফোর্ডের সাইকেল বিক্রি কমেছে ২৩ শতাংশ। আবার সরবরাহ দিতে না পারায় জিনিসপত্রের দামও বেড়েছে ২০ শতাংশ। ইউরোপের অন্যান্য দেশে একই ধরনের পরিস্থিতি সৃষ্টি হচ্ছে। খোদ যুক্তরাষ্ট্রে জালানির দাম বাড়তে থাকায় খুব সহজেই এর নেতিবাচক পড়ছে ইউরোপে। কারণ এখনো জালানির ওপর ইউরোপ অনেকটাই যুক্তরাষ্ট্রের ওপর নির্ভরশীল। গত বছরের তুলনায় যুক্তরাষ্ট্রে গ্যাসের দাম দ্বিগুণেরও বেশি বেড়েছে। জালানি রফতানি হ্রাসের দাবি বাড়ছে খোদ যুক্তরাষ্ট্রেই। একই ধরনের উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে চীনেও। কয়লার অভাবে বাধ্য হয়ে চীনের অনেক কারখানায় বয়লার বন্ধ করে দিতে হচ্ছে।
×