স্টাফ রিপোর্টার ॥ বিদ্যুত খাতে সহযোগিতা সংক্রান্ত বাংলাদেশ-নেপাল জয়েন্ট স্টিয়ারিং কমিটির ৩য় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার ভার্চুয়ালি আয়োজিত সভায় বাংলাদেশের পক্ষে বিদ্যুত বিভাগের সচিব মোঃ হাবিবুর রহমান এবং নেপালের পক্ষে বিদ্যুত, পানিসম্পদ ও সেচ সচিব দেবেন্দ্র কার্কি নিজ নিজ দেশের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন। এ সময় দুদেশের বিদ্যুত খাতে অধিকতর সহযোগিতার বিষয়ে গুরুত্ব আরোপ করে বলা হয়, নেপালে জলবিদ্যুত কেন্দ্র স্থাপনের বিপুল সম্ভাবনা এবং উভয় দেশের বিদ্যুতের প্রয়োজনীয়তা বিবেচনায় এই সম্ভাবনা কাজে লাগানো হবে। শুধু তাই নয় উভয় দেশের মধ্যে ঋতু ভেদে বিদ্যুত চাহিদার তারতম্যের আলোকে পারস্পরিক বিদ্যুত বাণিজ্যের বিষয়টিও গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা হবে।
এ সময় নেপালে জলবিদ্যুত কেন্দ্রে বিনিয়োগের সম্ভাবনা খতিয়ে দেখা ও বাংলাদেশের বেসরকারী খাতের নেপালের বিদ্যুত উৎপাদনে বিনিয়োগের বিষয়ে আলোচনা হয়। বলা হয়, নেপাল সরকার সেদেশে সম্ভাব্য যে ৫টি জলবিদ্যুত প্রকল্প চিহ্নিত করেছে তার কোনটিতে বাংলাদেশী প্রতিষ্ঠানের বিনিয়োগের সুযোগ থাকবে সে বিষয়ে নেপালের চলমান সমীক্ষার পর সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। সভায় জানানো হয়, নেপালে বিদ্যুত কেন্দ্রে অর্থায়ন ও যৌথভাবে প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সম্ভাব্য প্রকল্প চিহ্নিত করার পাশাপাশি উভয় দেশের মধ্যে বিদ্যুত আমদানি-রফতানির পন্থা নির্ধারণ এবং আন্তঃদেশীয় বিদ্যুত সংযোগের মাধ্যমে বিদ্যুত সঞ্চালনের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের লক্ষ্যে উভয় দেশের প্রতিনিধিদের নিয়ে গঠিত জয়েন্ট টেকনিক্যাল টিম (জেনারেশন) ও জয়েন্ট টেকনিক্যাল টিম (ট্রান্সমিশন) কাজ করছে। তবে সঞ্চালন লাইনের অংশ বিশেষ ভারতের ভূখ-ের মধ্যে নির্মিত হবে তাই বাংলাদেশ-ভারত-নেপাল ত্রিপক্ষীয় সমঝোতার মাধ্যমে বিষয়টি নির্ধারণ হবে বলে মত প্রকাশ করা হয়। এ সময় নেপালের পক্ষ থেকে বর্তমান সঞ্চালন লাইন ব্যবহার করে ভারতের মাধ্যমে নেপাল থেকে ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুত বাংলাদেশে রফতানির প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়।
ভারতের জিএমআর গ্রুপ কর্তৃক নেপালে বাস্তবায়িত হতে যাওয়া ৯০০ মেগাওয়াট আপার কার্নালি জলবিদ্যুত কেন্দ্রের উৎপাদিত বিদ্যুত থেকে ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুত বাংলাদেশে আমদানির অগ্রগতির বিষয়ে সভায় আলোচনা হয়। বাংলাদেশ বিদ্যুত উন্নয়ন বোর্ড, জিএমআর এবং এনভিভিএন এর মধ্যে এ সংক্রান্ত স্বাক্ষরিত হতে যাওয়া চুক্তিটি চূড়ান্ত করার প্রক্রিয়ায় রয়েছে বলে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে জানানো হয়। এ সময় বাংলাদেশ ও নেপালে নবায়নযোগ্য জ্বালানির সম্প্রসারণের অভিজ্ঞতা, জ্ঞান ও দক্ষতা বিনিময়ে উভয় দেশের মধ্যে সহযোগিতার বিষয় পর্যালোচনা করা হয়। বাংলাদেশের সোলার হোম সিস্টেম কার্যক্রম ও নেট মিটারিং কার্যক্রমের অভিজ্ঞতা তুলে ধরার পাশাপাশি এ বিষয়ে পারস্পরিক সহযোগিতা ও কার্যক্রম গ্রহণের লক্ষ্যে বাংলাদেশের স্রেডা এবং নেপালের অল্টারনেটিভ এনার্জি প্রমোশন সেন্টার এর মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের বিষয়েও আলোচনা হয়। এছাড়া বিদ্যুত খাতে ক্যাপাসিটি বিল্ডিং এর কার্যক্রম গ্রহণের বিষয়ে উভয় দেশ সম্মতি প্রকাশ করে। এ সময় বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বিপিএমআই এর প্রশিক্ষণ সক্ষমতার বিবরণ তুলে ধরা হয়।
