ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১

দাউদকান্দিতে কষ্ঠে দিন কাটাচ্ছে মুচি সম্প্রদায়

প্রকাশিত: ১৩:৫২, ৪ আগস্ট ২০২১

দাউদকান্দিতে কষ্ঠে দিন কাটাচ্ছে মুচি সম্প্রদায়

নিজস্ব সংবাদদাতা, দাউদকান্দি ॥ বৈশ্বিক মহামারি করোনা পরিস্থিতিতে চলমান কঠোর লকডাউনে দাউদকান্দিতে কষ্ঠে দিন কাটাচ্ছেন মুচি সম্প্রদায়। পরিবার পরিজন নিয়ে দুশ্চিন্তায় দিন কাটছে তাদের। নিম্ন আয়ের মানুষের আয় কমে গেছে। অনেকেই এখন ঘরে বসে অলস সময় কাটাচ্ছেন। এতে করে বিপদে পড়েছেন মুচি সম্প্রদায়। কঠোর লকডাউনে মরার উপর খাঁড়ার ঘা হিসেবে দেখা দিয়েছে দাউদকান্দি মুচি সম্প্রদায়ের জন্য। দাউদকান্দি পৌর সদরের পোষ্ঠ অফিস (ডাকঘরের) সামনে বসা কয়েকজন মুচি সম্প্রদায়েরর লোকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, সরকার তো আমাদের ভালোর জন্য লকডাউন দিয়েছে। কিন্তু আমাদের তো একদিন কাজ না করলে খাবার জোটে না। কাম কাইজ কম। বউ ছেলে মেয়েদের নিয়ে ক্যামনে চলুম। কেউ তো আমাদের একটু সাহায্য সহযোগিতা করে না। যাও আবার করে সামান্যটুকু, তা দিয়ে আমাদের দুই/তিন চলে। তার পড়ে আবারও আগের অবস্থা। এক সময় তো দিনে ৫০০ টাকা কামাইতাম। এখন তো লকডাউনের কারনে লোকজন বাজারে না আসায় ১০০ টাকার কামও হয় না। ম্যাজিস্ট্রেট, বিজিপি ও পুলিশ আসলে দৌড়িয়ে পালানো লাগে। এভাবেই নিজের অসহায়ত্বের কথাগুলো বলছিলেন দাউদকান্দি উপজেলার পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ডের সতান্দী মুচি বাড়ীর স্বপন চন্দ দাস। ৩২ বছর ধরে জুতা সেলাই কাজ করেন তিনি। স্কুলে পড়াশোনা করেন নাই। বাপ দাদার পেশা ছিল জুতা সেলাই করা। দুই যুগেরও বেশি সময় আগে এ পেশার সাথে জড়িয়ে পড়েন তিনি। একসময় কোনরকমে জীবনযাপন করলেও করোনার কারণে আর আগের মতো রোজগাড় নেই। এতে বিপাকে পড়েছেন তিনি। তার মত অনেকেই এখন দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন। আয় কমে যাওয়ায় দুর্দিনে থাকলেও নেই তেমন কোন সরকারি বেসরকারি সহায়তা। পরেশ চন্দ দাস বলেন, বাপ দাদার পেশা হিসেবে নিজেও জুতা সেলাই কাজ শুরু করেন এক যুগ আগে। করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের কারণে দীর্ঘদিন দোকান বন্ধ রেখেছেন। কয়েকদিন যাবৎ দোকান খুলেছেন। তবে প্রসাশনের টহল দেওয়ার কারণে প্রতিনিয়ত দোকান বন্ধ করে দিতে হয়। অভাব অনটনে এখন দিন কাটাচ্ছেন। এক সময় ৪০০/৫০০ টাকা আয় করতেন এই কাজ করে। লকডাউনের কারণে এখন ১০০/১৫০ টাকা আয় করাও সম্ভব না। আরও কয়েকজন মুচি জানায়, ঠাকুর চন্দ দাস নামের এক মুচি দীর্ঘ ৩৫ বছর ধরে জুতা সেলাই করে চালাতো তার সংসার বর্তমানে তিনি পঙ্গু অবস্থায় বিছনায় শয্যাশায়ী। চলমান কঠোর লকডাউনে মানবেতর জীবনযাপন করেছেন পরিবার নিয়ে। তেমন কোনো সহায়তাও মেলেনি তার। এতে পরিবার নিয়ে বিপাকে পড়েছেন তিনি।
×