ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

গাছ না কেটে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে

প্রকাশিত: ২৩:৩৩, ২৫ জুন ২০২১

গাছ না কেটে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ গাছ না কেটে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে চলমান স্বাধীনতা স্তম্ভ নির্মাণ (তৃতীয় পর্যায়) প্রকল্প বাস্তবায়নে সচেষ্ট থাকতে হবে বলে জানিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। রাজধানীর গণপূর্ত মিলনায়তনে ঢাকাস্থ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে স্বাধীনতা স্তম্ভ নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় চলমান কার্যক্রম অবহিতকরণ ও উদ্যানকে সবুজায়নের বিষয়ে উদ্ভিদবিদ, পরিবেশবিদ, স্থপতি, প্রকৌশলী ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধি সমন্বয়ে সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃৃতায় তিনি একথা জানান। মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের সচিব খাজা মিয়ার সভাপতিত্বে সেমিনারে অন্যদের মধ্যে গণপূর্ত অধিদফতরের প্রধান প্রকৌশলী মোঃ শামীম আক্তার, জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের মহাপরিচালক মোঃ জহুরুল ইসলাম রোহেল, স্থাপত্য অধিদফতরের অতিরিক্ত প্রধান স্থপতি আসিফ আহমেদ ভ‚ইয়া, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জসীমউদ্দীন, অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আলমুজাদ্দাদি আলফাসানি, প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আজমল হোসেন ভ‚ইয়া, মৃত্তিকা, পানি ও পরিবেশ বিভাগের অধ্যাপক ড. হারুনুর রশিদ খান, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. কাজী শাখাওয়াত হোসাইন, ভ‚গোল ও পরিবেশ বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ আব্দুল কাদেরসহ সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ মতামত ব্যক্ত করেন। সেমিনারে আলোচনার বিভিন্ন সুপারিশের আলোকে মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা অর্জনে বিভিন্ন সময়ের আন্দোলন ও ঘটনাসহ মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস ভবিষ্যত প্রজন্ম ও বিশ্ববাসীর নিকট তুলে ধরার উদ্দেশে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আওতায় ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ইতোমধ্যে শিখা চিরন্তন, স্বাধীনতা স্তম্ভ ও ভ‚-গর্ভস্থ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর প্রভৃতি নির্মাণ করা হয়েছে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মহান মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস সংরক্ষণ, আধুনিক নগর উপযোগী সবুজের আবহে দৃষ্টিনন্দন ও আন্তর্জাতিকমানে গড়ে তোলা ও দেশী-বিদেশী পর্যটকদের আকৃষ্ট করার লক্ষ্যে ‘ঢাকাস্থ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে স্বাধীনতা স্তম্ভ নির্মাণ’ (৩য় পর্যায়)’ শীর্ষক মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়িত হচ্ছে। সেমিনারে জানানো হয়, পাকিস্তানী শাসনবিরোধী ২৩ বছরের মুক্তিসংগ্রাম ও ৯ মাসের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সম্বলিত ভাস্কর্য স্থাপন, ৭ই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণের স্থানে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য স্থাপন, পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর আত্মসমর্পণের স্থানে ভাস্কর্য স্থাপন, ইন্দিরা মঞ্চ নির্মাণ, ওয়াটার বডি ও ফাউন্টেইন নির্মাণ, ভ‚-গর্ভস্থ ৫০০ গাড়ির কার পার্কিং, ৭টি ফুড কিয়স্ক (মহিলা, শিশু ও প্রতিবন্ধীদের পৃথক টয়লেট ফ্যাসিলিটিসহ) ও শিশুপার্ক নির্মাণসহ বিভিন্ন নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। এরমধ্যে ৫০০ গাড়ির ধারণক্ষমতাসম্পন্ন ভ‚-গর্ভস্থ কার পার্কিংয়ের ভৌত অগ্রগতি ৮০ শতাংশ, ওয়াটার ফাউন্টেন নির্মাণের ভৌত অগ্রগতি ৮০ শতাংশ, ৭টি ফুড কিস্ক নারী, পুরুষ ও প্রতিবন্ধীদের জন্য আলাদা টয়লেট ফ্যাসিলিটিসহ নির্মাণের ভৌত অগ্রগতি ৭৫ শতাংশ, ওয়াকওয়ে নির্মাণের ভৌত অগ্রগতি ২৫ শতাংশ এবং মসজিদ নির্মাণের ভৌত অগ্রগতি ৮০ শতাংশ হয়েছে মর্মে জানানো হয়। মন্ত্রী বলেন, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে স্বাধীনতা স্তম্ভ প্রকল্পটি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বিশেষ একটি কর্তৃপক্ষ তৈরি করা হবে। তিনি বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য প্রতিদিন অন্তত ১০ হাজার মানুষ এ প্রকল্প দেখতে আসবেন। যাদের মধ্য থেকে দুই হাজার দর্শনার্থী শিক্ষার্থীদের দেশের বিভিন্ন প্রান্ত হতে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে আনা হবে। এই বিশালসংখ্যক মানুষের জন্যই স্বাধীনতা স্তম্ভ তৈরি করা হচ্ছে। মন্ত্রী বলেন, এত বড় এলাকায় এত মানুষের সমাগম হয় তাতে কোন টয়লেট ফ্যাসিলিটিজ এবং রিফ্রেশমেন্টের কোন ব্যবস্থা ছিল না। পরিবারসহ দর্শনার্থীবৃন্দ উদ্যানে যাতে ভ্রমণ করতে পারে এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানার পাশাপাশি নিরাপদ ও মানসম্পন্ন পরিবেশে কয়েক ঘণ্টা সময় কাটাতে পারে তার সকল ব্যবস্থা এখানে করা হচ্ছে।
×