ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

রাইসি ইরানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে এগিয়ে রয়েছেন

প্রকাশিত: ১১:৩২, ১৯ জুন ২০২১

রাইসি ইরানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে এগিয়ে রয়েছেন

অনলাইন ডেস্ক ॥ বিচারক ইব্রাহিম রাইসি ইরানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে এগিয়ে রয়েছেন। বিচারক রাইসি অবশ্য যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞায় আছেন। রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের বরাত দিয়ে রয়টার্স জানিয়েছে, শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত দুই কোটি ২০ লাখ ভোটার ভোট দিয়েছেন, যা মোট ভোটারের ৩৭ শতাংশ। তবে ভোটার উপস্থিতির সংখ্যা নিশ্চিত করেনি সেদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। দেশটিতে মোট ভোটার ৫ কোটি ৯০ লাখের বেশি। শনিবার দুপুর নাগাদ প্রাথমিক ফল জানা যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। নিজ কেন্দ্রে ভোট দেয়ার পর এগিয়ে থাকা প্রার্থী রাইসি বলেন, “যার যা রাজনৈতিক মতাদর্শ থাকুক, তাই নিয়েই সবাইকে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি আমি। আমাদের জনগণের প্রতি সুশাসনের ঘাটতি একটি বাস্তবতা, কিন্তু এই কারণে ভোটদান থেকে বিরত থাকা ঠিক নয়।” স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ভোটগ্রহণের সময়সীমা ইরানের সময় শুক্রবার মধ্যরাত পর্যন্ত বাড়ানো হয়। ইরানের স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমগুলো জানিয়েছে, ভোটকেন্দ্রের বাইরে বিপুল সংখ্যক ভোটারকে অপেক্ষায় থাকতে দেখা গেছে। সরকারী জনমত জরিপের তথ্যানুযায়ী, ৪৪ শতাংশ ভোটার ভোট দিতে পারেন যা ২০১৭ সালের ৭৩ দশমিক ৩ শতাংশের চেয়ে অনেক কম। রাজধানী তেহরানে ভোট দেওয়ার পর ইরানের শীর্ষ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ খোমেনি সব ভোটারকে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, “প্রতিটি ভোটই গণনা করা হবে ... আসুন এবং ভোট দিয়ে আপনার প্রেসিডেন্টকে বেছে নিন।” ৬০ বছরের রাইসিই বর্তমান প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানির স্থলাভিষিক্ত হতে চলেছেন। ইরানের সংবিধান অনুযায়ী দুই মেয়াদের বেশি ক্ষমতায় থাকা বেআইনি হওয়ায় রুহানি তৃতীয়বার নির্বাচনে অংশ নিতে পারছেন না। ২০১৯ সালে ইরানের বিচার বিভাগের প্রধান হিসেবে রাইসিকে নিয়োগ দেন আয়াতুল্লাহ খোমেনি। ইরানের প্রভাবশালী ‘রেভুলোশনারি গার্ড’দেরও সমর্থন রয়েছে রাইসির পেছনে। প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের অঙ্গীকার করা রাইসি যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার আওতায় আছেন। কয়েক দশক আগে রাজনৈতিক বন্দিদের হত্যার ঘটনায় তিনি জড়িত এমন সন্দেহে তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে ওয়াশিংটন। ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানতে পেরেছে রয়টার্স। তেহরানের কাছাকাছি কারাজের একজন ভোটার মরিময় (৫২) বলেন, তিনি ভোট দেবেন না কারণ “আমি পুরো ব্যবস্থাটির ওপর আস্থা হারিয়ে ফেলেছি।” “অতীতে প্রতিবার আমি ভোট দিয়েছি এই আশায় যে আমার জীবনযাত্রার মান উন্নত হবে। কিন্তু আমি আশা হারিয়ে ফেলেছি যখন আমি দেখেছি পরিবর্তন আনতে ব্যর্থ হয়ে দেশের শীর্ষ রাজনীতিকরা পদত্যাগ করার মতো সাহস রাখেন না।” ইরানের দক্ষিণাঞ্চলের একটি ভোটকেন্দ্রে একজন ভোটার মোহাম্মদকে (৩২) জিজ্ঞেস করা হয় তিনি কোন প্রার্থীকে পছন্দ করেন। জবাবে তিনি বলেন, “সত্যি কথা বলতে, আমি কাউকেই পছন্দ করি না। কিন্তু পার্লামেন্টে আমাদের প্রতিনিধি বলেছে, পরিস্থিতির উন্নতি ঘটাতে চাইলে রাইসিকে ভোট দেওয়া উচিত।” ১৯৭৯ সালে ইরানে ইসলামি বিপ্লবে যারা নিহত হয়েছিলো তাদের এবং সেদেশের রাজনৈতিক বন্দিদের স্বজনরা এই নির্বাচন বয়কটের আহ্বান জানিয়েছে। অন্যদিকে ক্ষমতাসীনদের ধর্মীয় অনুসারী কট্টর সমর্থক গোষ্ঠী রাইসির পক্ষে ভোট দেওয়ার ডাক দিয়েছে।
×