ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ০৯ মে ২০২৫, ২৬ বৈশাখ ১৪৩২

জিও ব্যাগ তৈরিতে অনিয়মের অভিযোগ ॥ ধরলার তীর সংরক্ষণ প্রকল্পে অবৈধ বালু উত্তোলন

প্রকাশিত: ১৭:৪২, ২৬ এপ্রিল ২০২১

জিও ব্যাগ তৈরিতে অনিয়মের অভিযোগ ॥ ধরলার তীর সংরক্ষণ প্রকল্পে অবৈধ বালু উত্তোলন

স্টাফ রিপোর্টার, কুড়িগ্রাম ॥ ধরলা নদীর তীর সংরক্ষণ প্রকল্পে জিও ব্যাগ বসানোর কাজে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে ঠিকাদারী প্রতিষ্টানের বিরুদ্ধে । তা ছাড়াও তীর রক্ষার পাশে একাধিক অবৈধ ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন করছেন তারা। এলাকাবাসীর বাধা দেয়ার শর্তে নি¤œমানের তৈরি ৫০ হাজার জিও ব্যাগ বসানোর কৌশল খাটিয়ে যাচ্ছে ঠিকাদারী প্রতিষ্টান। এতে করে বাধঁ রক্ষা প্রকল্পটির ভবিষ্যত নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে সবর্ত্রে। জানা গেছে, প্রতিবছর ধরলার ভাঙ্গনে ফুলবাড়ী উপজেলার ৪টি ইউনিয়নের ব্যাপক ক্ষতি হয়ে আসে। অনেকের বাড়ী ঘর হারিয়ে নিস্ব হয়ে পড়ে। হারিয়ে যায় উপজেলার কয়েকটি গ্রামের মানচিত্র। এ জন্য ভাঙ্গন রোধে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড ধরলা নদীর তীর সংরক্ষণ প্রকল্প নকসা তৈরি করে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠায়। সে অনুযায়ী ৫৪ কোটি ৫০ লাখ ৯০ হাজার টাকা ব্যয়ে ধরলা নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রন বাধসহ বাম ও ডান তীর সংরক্ষণ প্রকল্পের কাজ অনুমোদন হয়। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড কুড়িগ্রাম অফিসের উদ্যোগে ফুলবাড়ী উপজেলার সোনাইকাজী এলাকা থেকে সাহেববাজার পর্যন্ত আড়াই কিলোমিটার পর্যন্ত পৃথক পাঁচটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে এ কাজ করার জন্য আর্দেশ দেন কর্তৃপক্ষ। গত মার্চ মাসে শুরু হয় তীর রক্ষার কাজ। শুরুতেই ঠিকাদাররা বাধ নির্মানের স্থানে একাধিক অবৈধ ড্রেজার বসিয়ে বালু তুলে প্রায় ৫০ হাজার জিও ব্যাগ ভর্তি করে। পরে নদীর তীর স্লোভ করে যেনতেন ভাবে ওই জিও ব্যাগ গুলো বসানো শুরু করলে স্থানীয়রা সিডিউল অনুযায়ী ব্যাগ বসানোর দাবী জানান। কিন্তু নিয়ম নীতি উপেক্ষা করে ঠিকাদাররা কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন। সোনাইকাজি গ্রামের মমিনুল ইসলাম (৪৫) গোলাম মোস্তফা (৫৫) ও নজরুল ইসলাম (৪৮) জানান, ১০ মিটার দুরে জিওব্যাগ বসানোর নিয়ম থাকলেও ৩ থেকে ৪ মিটার দুরে ব্যাগ ফেলছে ঠিকাদাররা। মোটাবালু দিয়ে জিও ব্যাগ ভর্তি না করে যে স্থানে বাধ হবে সেখানেই অবৈধ ড্রেজার বসিয়ে নি¤œমানের চিকন বালু তুলে জিওব্যাগ ভর্তি করেছে। প্রকল্পের ব্যয় এলাকায় সিটিজেন চার্টারের মাধ্যমে টাঙ্গানো হয়নি। এ জন্য আমরা কাজ বন্ধ করার জন্য বাধা দিয়েছি। তা না হলে সরকারের কোটি কোটি টাকা নদীতে ভেস্তে যাওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। ওই প্রকল্পের ২নম্বর সাইডের ঠিকাদার দাবীকারী মইনুল হক জানান, নদীর পাড় ধসে পড়া বন্ধ করতে জিওব্যাগ ফেলা হচ্ছে। পরে সঠিকভাবে কাজ করা হবে। প্রকল্প এলাকায় অবৈধ ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করায় পাড় ধসে পড়ছে কিনা, এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি হাসি দিয়ে তা উড়িয়ে দেন। কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোডের্র নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম বলেন, আগামী ২০২২ সালের জুন মাসে প্রকল্পের কাজ শেষ হবে। সাময়িক ভাঙ্গন থেকে তীর রক্ষার জন্য জিওব্যাগ ফেলা হচ্ছে। তবে এটা ১০ মিটার দুরে নয়, ১০ মিটারের মধ্যে কাজ হচ্ছে। পরে শুকনো মৌসুমে ব্যাগ গুলো সরিয়ে সঠিকভাবে কাজ করা হবে।
×