ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

পারিবারিক আক্রোশের শিকার শিক্ষক দম্পতি, বেতন নিয়ে অনিশ্চয়তা

প্রকাশিত: ১৬:১৫, ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১

পারিবারিক আক্রোশের শিকার শিক্ষক দম্পতি, বেতন নিয়ে অনিশ্চয়তা

স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী ॥ রাজশাহীর বাগমারার বীরকয়া নিম্ন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রফাতুল্লাহ’র বিরুদ্ধে পারিবারিক বিরোধের জের ধরে এক শিক্ষক দম্পতির ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার (ইএফটি) ফরম জমা না করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভূক্তভোগী শিক্ষক দম্পতি প্রধান শিক্ষকের ছোট ভাই ও তার স্ত্রী। এ সংক্রান্ত একটি অভিযোগ আজ রবিবার উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন দফতরে দেওয়া হয়েছে। বেতন নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন অভিযোগকারীরা। তবে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক দাবি করেছেন তারা (শিক্ষক-দম্পতি) সময়মত কাগজ জমা দিতে পারেননি। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এসএম মাহমুদ হাসান বলেন, প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে শিক্ষক দম্পতির ইএফটি ফরম পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে। এদিকে লিখিত অভিযোগ ও স্থানীয় লোকজনের দেওয়া তথ্য মতে, বীরকয়া নি¤œ মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রফাতুল্লাহর ছোট ভাই আবদুস সাত্তার ও তার স্ত্রী নুরুন নাহার খাতুন একই প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। এরমধ্যে আব্দুস সাত্তার অফিস সহকারী ও তার স্ত্রী নুরুন নাহার খাতুন সহকারী শিক্ষক। গত ২০ ফেব্রুয়ারি পারিবারিক বিষয় নিয়ে ছোট ভাইয়ের সঙ্গে প্রধান শিক্ষকের বিরোধ দেখা দেয়। এ নিয়ে উভয় পক্ষ থানায় পাল্টাপাল্টি অভিযোগ দেন। পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করছে। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরের (মাউশি) আওতায় এমপিভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীর সরকারী বেতনের অংশ মার্চ মাস থেকে ইএফটি এর মাধ্যমে দেওয়ার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। সে মোতাবেক ২২ ফেব্রুয়ারির মধ্যে এমপিভুক্ত শিক্ষক কর্মচারীদের ৩৪ রকমের তথ্য প্রদান করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়। সে মোতাবেক নির্দিষ্ট সময়ের আগেই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নুরুন নাহার খাতুন ও তার স্বামী অফিস সহকারী আব্দুস সাত্তার ফরম পূরণ করে প্রধান শিক্ষকের কাছে জমা দেন। তবে প্রধান শিক্ষক তাদের বাদ রেখে (আবদুস সাত্তার ও নুরুন নাহার খাতুন) অন্য ১২ জনের তথ্য অনলাইনের মাধ্যমে প্রদান করেন। বিষয়টি জানার পর প্রধান শিক্ষকের কাছে অনুরোধ করেও কোনো লাভ হয়নি। নিরুপায়ে শিক্ষা কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন দফতরে লিখিত অভিযোগ দেন। আজ রবিবার দুপুরে শিক্ষক দম্পতি সাংবাদিকদের তাদের অসহায়ের কথা জানান। তারা উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, পারিবারিক বিবাদের জের ধরে তাদের চাকরির ওপর যে আঘাত করা হয়েছে তা অমানবিক। বড়ভাই হিসাবে প্রধান শিক্ষকের কাছে ক্ষমা চেয়ে ফরম পাঠানোর অনুরোধ করেও লাভ হয়নি। গোপন নম্বর (পাসওয়ার্ড) তাদের কাছে নেই। এজন্য নিজেরাও পাঠাতে পারেননি ফরমটি। আগামি মাস থেকে বেতন না পেলে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে তাদের মানবেতর জীবন যাপন করতে হবে। এসময় তারা কান্নায় ভেঙে পড়েন। সাংবাদিকদের কাছেও অভিযোগের অনুলিপি সরবরাহ করেন। অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করে প্রধান শিক্ষক রফাতুল্লাহ বলেন, সামান্য বিষয় নিয়ে পারিবারিক বিরোধ হয়েছে। তবে অভিযোগকারী তার ছোট ভাই ও তার স্ত্রী নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাগজপত্র সরবরাহ করতে পারেননি, এজন্য পাঠানো হয়নি। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এসএম মাহমুদ হাসান বলেন, লিখিত ও মৌখিক অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ রয়েছে। শিক্ষক-দম্পতি যাতে ক্ষতির শিকার না হন সে ব্যবস্থা করা হবে।
×