ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ভাস্কর্য দেশের ইতিহাসকে ধারণ করে ॥ ড. কামাল

প্রকাশিত: ২২:২০, ২০ ডিসেম্বর ২০২০

ভাস্কর্য দেশের ইতিহাসকে ধারণ করে ॥ ড. কামাল

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দুপক্ষের পাল্টাপাল্টি অবস্থানের কারণে ভাঙ্গনের মুখে থাকা গণফোরামের সর্বশেষ অবস্থান জানাতে শেষ পর্যন্ত দল প্রধান ড. কামাল হোসেন প্রকাশ্যে কথা বললেন। তিনি জানালেন, গণফোরামে কোন সমস্যা নেই। একইসঙ্গে তিনি জানান, আগামী ৯ জানুয়ারি তার দলের কাউন্সিল ও অন্যান্য বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন করা হবে। শনিবার দুপুরে রাজধানীর বেইলি রোডের বাসভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন কামাল হোসেন। গণফোরাম নেতা বলেন, দেশ ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। ঘুষ, দুর্নীতি, বিদেশে অর্থ পাচারসহ নানা ঘটনার মধ্য দিয়ে দেশ আজ এ ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। বর্তমানে দেশে অস্বস্তিকর রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিরাজমান। ঘুষ-দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমরা জনগণকে নিয়ে মাঠে কাজ করব। এজন্য কর্মিসভা করার কথা জানান কামাল হোসেন। গণফোরামে ভাঙ্গন প্রসঙ্গে সংবিধান বিশেষজ্ঞ ড. কামাল বলেন, ‘দলে কোন সমস্যা নেই। এমন কিছুই হয়নি। যদি থেকেও থাকে সেটি এখন নেই বলেও জানান তিনি।’ কামাল হোসেন বলেন, ‘দেশে করোনাকালীন এই দুর্যোগময় মুহূর্তে গণফোরামের নেতাকর্মীরা রাজধানীসহ সারাদেশে চাল, ডাল, আলু, তেলসহ প্রয়োজনীয় দ্রব্য বিতরণ করছে। ভবিষ্যতে এ ধারা অব্যাহত থাকবে।’ সূত্রে জানা গেছে, দলের সাধারণ সম্পাদক রেজা কিবরিয়াকে নিয়ে প্রায় দেড় বছর ধরে দলে অভ্যন্তরীণ সঙ্কট দেখা দেয়। এক পর্যায়ে ভাঙ্গনের মুখে পড়ে ২৭ বছরের দলটি। চলে বহিষ্কার ও পাল্টা বহিষ্কার। দুপক্ষের মুখোমুখি অবস্থানের মধ্যে পৃথক পৃথকভাবে কাউন্সিলের ঘোষণা দেয়া হয়। আওয়ামী লীগ থেকে পদত্যাগ করে বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক সহচর কামাল হোসেন গণফোরাম প্রতিষ্ঠা করেন। তবে কামাল হোসেনের মধ্যস্থতায় ইতোমধ্যে দলের কিবরিয়া পক্ষ তাদের সম্মেলন স্থগিত করার ঘোষণা দেয়। মন্টু গ্রুপের পক্ষ থেকে সম্মেলন স্থগিত করার কথা রয়েছে। সভায় দলের সিনিয়র নেতাদের অনুপস্থিতি প্রসঙ্গে কামাল হোসেন বলেন, ‘আমাদের অধ্যাপক আবু সায়ীদ সাহেব, সুব্রত চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক রেজা কিবরিয়া আইসোলেশনে। এই কারণে তারা সভায় উপস্থিত হতে পারেননি।’ সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন গণফোরামের নেতা মোস্তফা মোহসীন মন্টু, জগলুল হায়দার, মোকাব্বির খান, শফিকুল্লাহ, মহসীন রশিদ প্রমুখ। কামাল হোসেন বলেন, সম্প্রতি গণফোরামের অভ্যন্তরে ভুল বোঝাবুঝির কারণে অনাকাক্সিক্ষত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল। উদ্ভূত সমস্যা সমাধানকল্পে সহকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে গণফোরামের জাতীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হবে। এরইমধ্যে দলের অভ্যন্তরে যে বহিষ্কার-পাল্টা বহিষ্কার হয়েছে তা অকার্যকর বলে গণ্য হবে। সংবাদ সম্মেলন কামাল হোসেনের পক্ষে লিখিত বক্তব্যে মোস্তফা মোহসীন মন্টু বলেন, ‘গণফোরামের কাউন্সিল সামনে ঘোষণা দেয়া হবে। কাউন্সিলে পূর্ণ সিদ্ধান্ত হবে। কী কী সমস্যা আছে সেগুলো চিহ্নিত করা হয়েছে। আর এসব তুলে ধরা হবে ৯ জানুয়ারির সংবাদ সম্মেলনে।’ উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ২৬ এপ্রিল বিশেষ কাউন্সিলের পর গণফোরামে বিরোধ প্রকাশ্যে আসে। মোস্তফা মোহসীন মন্টুর স্থলে ড. রেজা কিবরিয়াকে সাধারণ সম্পাদক করার পর গণফোরাম দুটি অংশে বিভক্ত হয়ে পড়ে। একটি অংশ কামাল হোসেনকে কেন্দ্র করে এবং দ্বিতীয় বিদ্রোহী অংশটি মন্টু-সুব্রত চৌধুরীর নেতৃত্বে পরিচালিত হয়ে আসছিল। গত ১৩ ডিসেম্বর এক বিজ্ঞপ্তিতে ড. কামাল হোসেন ঘোষণা করেন, গণফোরামে গত কয়েক মাসে ঘটে যাওয়া সব বহিষ্কার-পাল্টা বহিষ্কার অকার্যকর করা হচ্ছে। সংবাদ সম্মেলনে ফেস শেড পরা অবস্থায় বাসার পোশাকে হাজির হন কামাল হোসেন। এক পর্যায়ে শেড খুলে সাংবাদিকদের নানা প্রশ্নের জবাব দেন তিনি। ভাস্কর্য কোন বিতর্কের বিষয় নয়-এটা সেটেল ইস্যু ॥ যে পটভূমিতে ভাস্কর্য নিয়ে বিতর্ক হচ্ছে, সে পটভূমিতে ভাস্কর্যের সঙ্গে কোন সম্পর্ক নেই। এক প্রশ্নের জবাবে ড. কামাল হোসেন বলেন, ভাস্কর্য নিয়ে যতটা ক্লারিফাই করার চেষ্টা করা হবে, ততটা ঘোলাটে হবে। ধর্মের সঙ্গে ভাস্কর্যের কোন সম্পর্ক নেই। তিনি বলেন, ভাস্কর্য একটি দেশের ইতিহাস ঐতিহ্যকে ধারণ করে।
×