ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ট্রাকে ২৫ টাকা কেজিতে আলু বিক্রি করবে টিসিবি

প্রকাশিত: ২২:০২, ১৯ অক্টোবর ২০২০

ট্রাকে ২৫ টাকা কেজিতে আলু বিক্রি করবে টিসিবি

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ স্বল্প আয়ের মানুষের সুবিধার্থে সরকারী বাজার নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা টিসিবি প্রতিকেজি ২৫ টাকা দরে আলু বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যতদিন দাম স্বাভাবিক না হয়, ততদিনই টিসিবি ভর্তুকি মূল্যে ট্রাকসেলে আলু বিক্রি করবে। এছাড়া সরকার নির্ধারিত দাম ৩০ টাকায় খুচরা বাজারে আলু বিক্রি করতে হবে বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। তিনি বলেন, সরকার নির্ধারিত দাম অবশ্যই কার্যকর করা হবে। অতিরিক্ত দামে আলু বিক্রি করার কোন সুযোগ নেই। যেসব ব্যবসায়ী, হিমাগার মালিক ও আড়তদার সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে আলু বেশি মূল্যে বিক্রি করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিতে সরকার বাধ্য হবে। নিত্যপণ্যের দাম বাড়ানোর কোন সুযোগ নেই। রবিবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে কোল্ডস্টোরেজ মালিক, আলুর আড়তদার ও পাইকারি ব্যবসায়ী ও সংশ্লিষ্ট সরকারী অন্য কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ কৃষি বিপণন অধিদফতর থেকে তিন স্তরে যে দাম নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে, সেটা কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করা হবে। তারা কোল্ডস্টোরেজ পর্যায়ে ২৩ টাকা, পাইকারি পর্যায়ে ২৫ টাকা ও খুচরা পর্যায়ে ৩০ টাকা নির্ধারণ করে দিয়েছে। বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, দেশে আলুর কোন ঘাটতি নেই। প্রচুর আলুর আবাদ হয়েছে। বন্যা ও বৃষ্টির কারণে সবজির আবাদ কিছুটা ক্ষতি হবার কারণে আলুর চাহিদা বেড়েছে। তবে সরকার নির্ধারিত মূল্যের বেশি আলুর দাম হবার কোন কারণ নেই। বাণিজ্য সচিব ড. মোঃ জাফর উদ্দীনের সঞ্চালনায় ওই সভায় সভাপতিত্ব করেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। ওই সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন, কৃষি বিপণন অধিদফতরের মহাপরিচালক মোহাম্মদ ইউসুফ, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে অতিরিক্ত সচিব (রফতানি) মোঃ ওবায়দুল আজম, অতিরিক্ত সচিব (আইআইটি) মোঃ হাফিজুর রহমান, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের মহাপরিচালক বাবলু কুমার সাহা, বাংলাদেশ ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) এর চেয়ারম্যান ব্রি. জে মোঃ আরিফুল হাসান, রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর ভাইস চেয়ারম্যান এ এইচ এম আহসান, বাংলাদেশ কোল্ডস্টোরেজ এ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট মোঃ মোস্তাক হোসেন, ট্রেড এ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের সদস্য শাহ মোঃ আবু রায়হান আল-বেরুনি, র্যাব, ডিজিএফআই, এনএসআই-এর প্রতিনিধি, কোল্ডস্টোরেজ এ্যাসোসিয়েশন এবং পাইকারি আলু ব্যবসায়ীদের প্রতিনিধিগণ। এদিকে, রবিরারও ঢাকাসহ দেশের অন্যান্য জেলায় বাড়তি দামে আলু বিক্রি হয়েছে। ঢাকায় ৫০ টাকার নিচে কোন আলু বিক্রি হয়নি। এছাড়া আলু উৎপাদনকারী অঞ্চলের অনেক কোল্ডস্টোরেজ থেকে আলু সরিয়ে ফেলা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এছাড়া কোল্ডস্টোরেজ থেকে কেউ কোন আলু বিক্রি করছে না। তবে হিমাগার ও বিভিন্ন বাজারে ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান পরিচালনা অব্যাহত রেখেছে। এরপরও অসাধু ব্যবসায়ীরা সরকার নির্ধারিত দাম কার্যকর করেনি। আলু ব্যবসায়ে সিন্ডিকেট অসাধু ব্যবসায়ীদের তৎপরতা বেড়ে গেছে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। আর এ কারণে আলুর দাম কমছে না। প্রসঙ্গত আগামী দু’মাসের মধ্যে বাজাওে নতুন আলু পাওয়া যাবে। প্রতিমাসে প্রায় সাড়ে ৮ লাখ টন আলুর চাহিদা রয়েছে, বিপরীতে মজুদ রয়েছে ৩২ লাখ টনের বেশি। ওই হিসেবে নতুন আলু ওঠার পরও ৮ লাখ টন আলু অবিক্রীত থেকে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ কারণে এখন আলু বিক্রি করা হলে হিমাগার মালিক, পাইকারি ব্যবসায়ী সর্বোপরি আলু উৎপাদনকারী কৃষক সবচেয়ে বেশি লাভবান হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
×