ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

বেসরকারী মেডিক্যাল ও ডেন্টাল কলেজ আইনের খসড়া অনুমোদন

প্রকাশিত: ২২:৫৮, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২০

বেসরকারী মেডিক্যাল ও ডেন্টাল কলেজ আইনের খসড়া অনুমোদন

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ বেসরকারী মেডিক্যাল ও ডেন্টাল কলেজগুলোকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে ‘বেসরকারী মেডিক্যাল ও ডেন্টাল কলেজ আইন, ২০২০’ এর খসড়ায় নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সোমবার ভার্চুয়াল মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ অনুমোদন দেয়া হয়েছে। গণভবন থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সচিবালয় প্রান্ত থেকে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীরা অংশ নেন। বৈঠক শেষে সচিবালয়ে ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম একথা বলেন। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বৈঠকে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে ভ্যাকসিন নিয়ে আলোচনা হয়। আমাদের দেশে টিকা আনার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে নির্দেশ দেন। তিনি বলেন, ভ্যাকসিন বাজারে আসার সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশে আসতে হবে। এ বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, চীন, রাশিয়া, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমরা যোগাযোগ রাখছি। বাজারে আসার সঙ্গে সঙ্গে আমরা পেয়ে যাব। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এতদিন বেসরকারী মেডিক্যাল ও ডেন্টাল কলেজ দুটি নীতিমালার মাধ্যমে চলত। এখন দেখা যাচ্ছে যে শুধু নীতিমালা দিয়ে সবকিছু সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করা সম্ভব হচ্ছে না, সুনির্দিষ্ট আইন প্রয়োজন। স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে আইনের খসড়া নিয়ে আসা হয়েছে। তিনি বলেন, বেসরকারী মেডিক্যাল কলেজ ও ডেন্টাল কলেজের একাডেমিক অনুমোদন, নবায়ন, শিক্ষা কার্যক্রম এবং কত ছাত্র থাকবে ও কী সুবিধাদি থাকবে, শিক্ষকের কী যোগ্যতা থাকবে, কলেজগুলো কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে থাকবে, অর্থ ব্যবস্থাপনা কেমন থাকবে- এ বিষয়গুলো আইনে উল্লেখ করা হয়েছে। মেডিক্যাল কলেজে প্রতি ১০ জন ছাত্রের জন্য একজন শিক্ষক এবং ন্যূনতম ছাত্র থাকতে হবে ৫০ জন। প্রত্যেক বিষয়ে ন্যূনতম পাঁচজন করে শিক্ষক থাকতে হবে। নীতিমালায় অনেক কিছু পরিষ্কার না থাকায় অনেক মেডিক্যাল কলেজ অস্থায়ী শিক্ষক দিয়ে চালানো হয় জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ২৫ শতাংশের বেশি খ-কালীন শিক্ষক রাখা যাবে না, ৭৫ শতাংশ স্থায়ী শিক্ষক থাকতে হবে। ডেন্টাল কলেজের জন্য দুই কোটি এবং মেডিক্যাল কলেজের জন্য তিন কোটি টাকা রিজার্ভ ফান্ড রাখার বিধান রয়েছে। আর মেডিক্যাল কলেজে ২৫০ শয্যা এবং ডেন্টালে কমপক্ষে ৫০ শয্যার মধ্যে বিনা পয়সায় চিকিৎসায় ১০ শতাংশ শয্যা গরিব মানুষের জন্য রাখতে হবে। আইনে বর্জ্য ব্যস্থাপনার বিধান রাখা হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, মেডিক্যাল বর্জ্যগুলো খুবই ঝুঁকিপূর্ণ, নরমাল ডাম্পিংয়ে রাখলে হবে না। এখান থেকে ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়া বা রোগ-জীবাণু ব্যাপক প্রসারিত হয়। মেডিক্যাল ও ডেন্টাল কলেজের জন্য অবশ্যই নিষ্কণ্টক জমি থাকতে হবে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, মেট্রোপলিটনে কমপক্ষে দুই একর এবং মেট্রোপলিটনের বাইরে চার একর জমি থাকতে হবে। আইন লঙ্ঘন করলে দ-ের কথা উল্লেখ রয়েছে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, দুই বছর কারাদ- বা ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানা বা উভয় দ- হতে পারে। আইনের শর্ত না মানলে মেডিক্যাল বা ডেন্টাল কলেজের অনুমোদন বাতিল করে দেয়া হবে। এখন যে ভাড়া বাসায় মেডিক্যাল কলেজ রয়েছে সেগুলোর বিষয়ে কী হবে- প্রশ্নে মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, আইনে বিস্তারিত থাকে না। এজন্য বিধিমালা করার ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। বিধিমালা বা নীতিমালায় স্পষ্ট করে দেয়া হবে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, বর্তমানে বেসরকারী মেডিক্যাল কলেজের সংখ্যা ৭০টি এবং ডেন্টাল কলেজের সংখ্যা ২৬টি। আর সরকারী মেডিক্যাল কলেজ ৩৬টি এবং সরকারী ডেন্টাল কলেজ একটি। তিনি আরও বলেন, যে বিভাগের যে মেডিক্যাল বা ডেন্টাল কলেজ থাকবে সেই বিভাগের মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে থাকবে। ঢাকায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে এবং যে বিভাগের মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় নেই সেখানে সার্কুলার দিয়ে বলে দেয়া থাকবে কার অধীনে থাকবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা ও এইচএসসি পরীক্ষার বিষয়ে মন্ত্রণালয়ই সিদ্ধান্ত নেবে ॥ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা ও এইচএসসি পরীক্ষার বিষয়ে মন্ত্রণালয়ই সিদ্ধান্ত নিতে পারবে। এরপরও এ বিষয়ে মন্ত্রিসভা বা প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ চাইলে তা জানানো হবে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। সোমবার মন্ত্রিসভা বৈঠকের ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রিপরিষদ সচিব এ কথা জানান। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত হয়েছে কিনা- জানতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, আমরা বলে দিয়েছি, যে কোন সেক্টরে দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রণালয়কে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে, যারা কর্তৃপক্ষ তারা তাদের নিজ বিবেচনায় ব্যবস্থা নেবেন। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা এবং এইচএসসি পরীক্ষার বিষয়ে মন্ত্রণালয় বলছে সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে সিদ্ধান্ত না আসলে তারা সিদ্ধান্ত জানাবে না- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রী অনুমোদন করার পর আমরা জানিয়ে দিয়েছি, এরপরও তারা যদি মনে করে যে সাজেশন দরকার বা কোন রুলিং দরকার ক্যাবিনেটের বা প্রধানমন্ত্রীর, আমাদের যদি রেফার করে তাহলে সেটা ওভাবেই বিবেচনা করা হবে। কিন্তু এখন অথরিটি তাদের কাছেই দিয়ে দেয়া আছে।
×