ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

স্থগিত টেস্ট সিরিজ ফিরে পাচ্ছে বাংলাদেশ

প্রকাশিত: ২৩:৩৭, ৩১ জুলাই ২০২০

স্থগিত টেস্ট সিরিজ ফিরে পাচ্ছে বাংলাদেশ

মিথুন আশরাফ ॥ এক এক করে আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের চারটি টেস্ট সিরিজ স্থগিত হয়েছে বাংলাদেশের। এই স্থগিত চারটি টেস্ট সিরিজই আবার ফিরে পাচ্ছেন মুমিনুল হক, তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদরা। করোনাভাইরাসের প্রভাবে যে টেস্ট ম্যাচ, সিরিজগুলো স্থগিত হওয়ার পর আর না হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছিল সেই ম্যাচ ও সিরিজগুলোই আলোর মুখ দেখতে চলেছে। ভারতের বিরুদ্ধে টেস্ট দিয়ে গত বছর নবেম্বরে আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ খেলা শুরু করে বাংলাদেশ। দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজও খেলে। এ বছর ফেব্রুয়ারিতে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজের একটি টেস্ট ম্যাচও খেলে। যে দ্বিতীয় টেস্টটি খেলার সময় হয় তখনই করোনাভাইরাসের কারণে ম্যাচটি স্থগিত হয়ে যায়। সেই শুরু। এরপর জুনে দেশের মাটিতে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ স্থগিত হয়। আগস্ট-সেপ্টেম্বরে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধেও টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের দুই টেস্ট ছিল। তাও স্থগিত হয়ে যায়। শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে জুলাই-আগস্টে তিন ম্যাচের টেস্ট সিরিজ ছিল। তাও শেষ পর্যন্ত স্থগিত হয়। এ বছর বাংলাদেশের আটটি টেস্ট খেলার কথা ছিল। সবকটি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ম্যাচ ছিল। কিন্তু করোনাভাইরাসের প্রভাবে খেলা হয়নি। এখন সামনে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে স্থগিত হওয়া তিন টেস্টের সিরিজটি হওয়ার সম্ভাবনা উজ্জ্বল দেখা যাচ্ছে। অক্টোবরে হতে পারে সিরিজটি। শ্রীলঙ্কার মাটিতে গিয়ে খেলবে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) ও শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট বোর্ডের (এসএলসি) মধ্যে এ নিয়ে আলোচনাও হচ্ছে। দ্রুত সিদ্ধান্তও হয়ে যেতে পারে। তবে শঙ্কা ছিল বাকি টেস্ট সিরিজগুলো নিয়ে। যদিও পাকিস্তানের বিরুদ্ধে পাকিস্তানে গিয়ে একটি টেস্ট খেলা হতো। সময় সুযোগ বুঝে তা খেলা হতো। কিন্তু অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে সিরিজ দুটি আইসিসির সিদ্ধান্ত ছাড়া হওয়া কঠিনই ছিল। টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের যে ম্যাচগুলো স্থগিত হয়েছে সেগুলো আবার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আইসিসি। টি২০ বিশ্বকাপ স্থগিত হওয়াতে সেই সুযোগ দেখছে ক্রিকেট নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সংস্থা (আইসিসি) এমন সিদ্ধান্তের কথাই জানিয়েছে। শুধু বাংলাদেশের স্থগিত হওয়া টেস্ট সিরিজগুলোই নয় স্থগিত হওয়া ছয়টি সিরিজ যথাসময়ে মাঠে গড়াবে বলে জানিয়েছে আইসিসি। বাংলাদেশ-পাকিস্তান, বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়া, বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা এবং বাংলাদেশ-নিউজিল্যান্ড সিরিজ স্থগিত হওয়ার সঙ্গে শ্রীলঙ্কা-ইংল্যান্ড ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ-দক্ষিণ আফ্রিকার সিরিজ স্থগিত হয়। প্রথম টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ শেষ হবে আগামী বছরের মার্চে। ১০ থেকে ১৪ জুন ইংল্যান্ডের লর্ডসে পয়েন্ট তালিকায় থাকা সেরা দুই দলের মধ্যকার ফাইনাল টেস্ট হওয়ার কথা রয়েছে। এরমধ্যেই আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ম্যাচগুলো শেষ করার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। তবে এ জন্য তাড়াহুড়ো করবে না আইসিসি। আইসিসির জেনারেল ম্যানেজার জিওফ এ্যালারডাইস জানিয়েছেন, ‘আমরা সদস্য দেশগুলোর সঙ্গে স্থগিত হওয়া সিরিজগুলো পুনরায় শুরুর ব্যাপারে আলোচনা শুরু করেছি।’ তিনি আরও বলেন, ইংলিশ গ্রীষ্মের পরে ওয়েস্ট ইন্ডিজ-দক্ষিণ আফ্রিকার টেস্ট সিরিজটি আলোচনায় আছে। এরপর আবার নবেম্বরে নিউজিল্যান্ডে সিরিজ (সিপিএল, আইপিএলের কারণে) দিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গন খুলবে। বোর্ড মেম্বারই সেই সম্ভাবনা ধরে এগোচ্ছেন। ইংল্যান্ডের সিরিজ তাদের বিশ্বাস দিয়েছে পরিকল্পনা করে এগোতে পারলে মার্চের মধ্যে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের প্রথম অংশ সম্পন্ন করা সম্ভব। এ্যালারডাউস কয়েকদিন আগে বলেছিলেন, ‘বিশ্বজুড়ে করোনা সংক্রমণের কারণে যে সিরিজগুলো স্থগিত হয়েছে সেগুলোর পরিবর্তিত সূচী কিভাবে তৈরি করা যায় তা নিয়ে সদস্য দেশগুলোর সঙ্গে আলোচনা চলছে আমাদের। আমরা স্থগিত সিরিজগুলো নিয়ে বেশি ভাবছি। স্থগিত হওয়া সফরের পুনরায় সূচী তৈরি করতে হবে। তবে এটা তৈরি করবে সদস্য দেশগুলোই। আইসিসি নয়। দেখতে হবে কতগুলো দেশের জন্য নতুন সময়সূচী তৈরি করা যায়। আইসিসি চেষ্টা চালাচ্ছে যাতে আগামী বছরেই টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল করা যায়। তবে সম্ভব কি না তা এখনই বলা যাচ্ছে না।’ তিনি বলেছেন, ‘বিগত কয়েক মাসে আমরা দেখেছি পরিস্থিতি খুবই দ্রুত পাল্টে গেছে। কোন কোন সপ্তাহে মনে হয়েছে কোন ধরনের খেলাই সম্ভব নয়। তবে দেশের সরকারের পক্ষ থেকে ছাড়পত্র দেয়া শুরু হয়েছে। এখন আবার সিরিজ শুরু করা সম্ভব মনে হচ্ছে। এখন আমরা তাই অনেকগুলো সিরিজ নিয়েই আলোচনা শুরু করেছি। নবেম্বর-ডিসেম্বর, জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এখন ছয় থেকে আট মাস বাকি। আগামী এক-দুই মাসের মধ্যে পুনরায় সূচী নির্ধারণের ব্যাপারে ধারণা পাওয়া যাবে।’ ক্রিকইনফোকে দেয়া সাক্ষাতকারে আইসিসির জেনারেল ম্যানেজার আরও বলেন, ‘আমাদের আলোচনায় বেশ অগ্রগতি রয়েছে এবং প্রতিটি সদস্য দেশের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় সব আপডেট নিচ্ছি। এই মুহূর্তে সবই সঠিকভাবে চলছে। ইংল্যান্ডে যে সিরিজ অনুষ্ঠিত হচ্ছে সেগুলোও টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের অধীন।’ স্থগিত হওয়া সিরিজ পুনরায় হলে সবচেয়ে বেশি লাভবান বাংলাদেশই হবে। স্থগিত হওয়া ছয় সিরিজের চারটিই যে বাংলাদেশের।
×