ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সাকিবের সফলতার কারণ জেনে অনুপ্রাণিত ইমরুল

প্রকাশিত: ০০:৪২, ২৯ জুলাই ২০২০

সাকিবের সফলতার কারণ জেনে অনুপ্রাণিত ইমরুল

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশ ক্রিকেটে জ্বলজ্বলে তারকা সাকিব আল হাসান। তিনি খেলা মানেই একাধারে বাংলাদেশ দল পেয়ে যায় একজন নির্ভরযোগ্য ব্যাটসম্যান এবং একজন আস্থা রাখার মতো বোলার। এই মুহূর্তে অবশ্য নিষেধাজ্ঞায় আছেন একসময় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের তিন ফরমেটেই বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব। তবে তিনি দলের সতীর্থদের জন্যও যে অনুপ্রেরণা এবং বাড়তি উজ্জীবনী শক্তি তার প্রমাণ পাওয়া যায় সতীর্থদের কথা থেকেই। বাঁহাতি ওপেনার ইমরুল কায়েসও এমনটা বলেছেন। সাকিবের সফলতার কারণটা বুঝতে পেরেছেন এবং তাতে অনুপ্রাণিতও হয়েছেন ইমরুল। ২০০৮ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে যাত্রা শুরু হয়েছে ইমরুলের। সে হিসেবে এখন ১২ বছর পেরিয়েছে তার বাংলাদেশের জার্সিতে। কিন্তু এ বাঁহাতি নিয়মিত হতে পারেননি অন্যদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায়। ৩৯ টেস্টে ২৪.২৮ গড়ে ১৭৯৭ আর ৭৮ ওয়ানডেতে ৩২.০২ গড়ে ২৪৩৪ রান করতে পেরেছেন এখন পর্যন্ত। প্রায় সমসাময়িক ক্রিকেটার তামিম ইকবাল অপরিহার্য হিসেবে কখনই বাদ পড়েননি। কিন্তু ইমরুল পারফর্মেন্সের কারণে, ইনজুরির কারণে এবং অন্যদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়ে অনেক সময়ই সাইডবেঞ্চে থেকেছেন। শাহরিয়ার নাফীস, জুনায়েদ সিদ্দিকী, শামসুর রহমান শুভদের সঙ্গে একসময় জায়গা পাওয়া নিয়ে যেমন তার লড়তে হয়েছে, তেমনি এখন তার লড়তে হয় লিটন কুমার দাস ও সৌম্য সরকারদের সঙ্গে। তবে তামিম একপ্রান্তে সবসময়ই ছিলেন। তার সঙ্গী বারবার বদলালেও ক্রিকেটবোদ্ধারা বিভিন্ন সময়ে বলেছেন এবং পরিসংখ্যানটাও বলে যে তামিমের যোগ্য ওপেনিং সঙ্গী ইমরুল। কিন্তু তবু তিনি নিয়মিত হতে পারেননি। অনেক সময় হতাশায়ও ভুগেছেন। কিন্তু সাকিবের মতো ক্রিকেটার যে দলটিতে আছেন তাকে দেখে অনুপ্রাণিত হওয়ার এবং নতুন কিছু করার ইচ্ছাটা কখনই দমে যায় না। এ বিষয়ে ইমরুল বলেন, ‘একজন খেলোয়াড় কতটা নিবেদিতপ্রাণ হলে বা ভাল করার কতটা ইচ্ছা থাকলে এমন সফল হতে পারে। আমি ওর কথাতেই বুঝে গেছি, কেন বিশ্বকাপে এত ভাল করেছে।’ বিশ্বকাপের বেশ কিছুদিন আগে থেকেই ওয়ানডাউন ব্যাটসম্যান হিসেবে নিয়মিত হয়েছেন সাকিব। দীর্ঘ সময় ধরে বাংলাদেশ দল ৩ নম্বর ব্যাটিং পজিশন নিয়ে দুশ্চিন্তায় ভুগেছে। তবে সাকিব এই পজিশনে নিয়মিত হওয়ার পর দলকে আর ওয়ানডাউন নিয়ে চিন্তাই করতে হয়নি। কারণ এ পজিশনে দুর্দান্ত সাকিব। পুরো ক্যারিয়ারে যত পজিশনে ব্যাটিং করেছেন তার মধ্যে ৩ নম্বরে তিনি সবচেয়ে সফল। এর সবচেয়ে বড় নিদর্শন তিনি দেখান ২০১৯ বিশ্বকাপে ৬০৬ রান করে। পাশাপাশি বল হাতেও ১১ উইকেট নেন। তবে দলগতভাবে ভাল করেনি বাংলাদেশ। এ বিষয়ে ইমরুল সাকিবকে বলেছিলেন, ‘তুই যে খেলা খেলেছিস এরপর এটা আমাদের দুর্ভাগ্য যে দলীয়ভাবে ভাল করতে পারিনি, দল ভাল করলে তোর আরও বড় ইনিংস দেখতে পারতাম। তোর মাইন্ড সেটআপ কী ছিল?’ এ বিষয়ে তখন সাকিবের উত্তর শুনে মুগ্ধ এবং অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন ইমরুল। তিনি বলেছিলেন, ‘আমি যখন আইপিএলে বসেছিলাম, হায়দরাবাদের হয়ে ম্যাচ খেলিনি, তখন আমার ভেতরে কাজ করছিল যে আমি আলাদাভাবে আমার পারফর্মেন্স দেখাব।’ এমন এক অলরাউন্ডারকেও বসে থাকতে হয়েছে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লীগ (আইপিএল) টি২০ আসরে অনেকগুলো ম্যাচে। কিন্তু তবু সাকিবের ভেতরে দারুণ কিছু করার যে আকাক্সক্ষা ছিল এতেই অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন ইমরুল। সাকিব বলেছিলেন, নিজের জন্য নয় দেশের জন্য ক্রিকেট খেলব। সেই কথাটাও ইমরুলের হৃদয়ে গেঁথে যায়।
×