ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

শ্রমিক ছাঁটাইয়ের পরিণতি হবে ভয়াবহ

বিজিএমইএ-র বক্তব্যে সিপিবির হুঁশিয়ারি

প্রকাশিত: ২০:০০, ৬ জুন ২০২০

বিজিএমইএ-র বক্তব্যে সিপিবির হুঁশিয়ারি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)’র সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শাহ আলম এক বিবৃতিতে, বিজিএমইএ সভাপতির ব্যাপক হারে শ্রমিক ছাঁটাইয়ের সাম্প্রতিক ‘হুমকি’কে ‘চরম ঔদ্ধত্যপূর্ণ’ ও ‘উসকানিমূলক’ বলে উল্লেখ করেছেন। শনিবার দলের পক্ষ থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে সিপিবির নেতৃবৃন্দ মালিকশ্রেণিকে হুঁশিয়ার করে দিয়ে বলেছেন, গণবিরোধী সরকার শ্রমিকের স্বার্থ পদদলিত করে মালিকের মুনাফার স্বার্থ রক্ষা করছে। আর তাই বিজিএমইএ শ্রমিক ছাঁটাইয়ের ‘হুমকি’ দেয়ার স্পর্ধা দেখাচ্ছে। সরকারের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদদে বিজিএমইএ শ্রমিকদের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে। এই খেলা অচিরেই শেষ হবে। শ্রমিক ছাঁটাইয়ের যেকোনো চক্রান্ত রুখে দেয়া হবে। লুটেরাদের পালানোর সব পথ দেশবাসী বন্ধ করে দেবে। মালিকদের অন্যায় আবদার মেটাতে সরকার নতজানু থাকলেও, শ্রমিকশ্রেণী মতলববাজ মুনাফালোভীদের আস্তাকুড়ে নিক্ষেপ করবে। শ্রমিক ছাঁটাইয়ের পরিণতি হবে ভয়াবহ, যা বিজিএমইএ ও সরকারের কল্পনার বাইরে। নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, মুনাফার লালসায় লুটেরা মালিকশ্রেণী কতটা বেপরোয়া, দায়িত্বহীন, হিংস্র হতে পারে, তা চলমান করোনা-মহাসংকটকালে আবারও স্পষ্ট হয়েছে। বছরের পর বছর শ্রমিকদের নির্মম শোষণ করে গার্মেন্টস মালিকরা দেশে-বিদেশে সম্পদের পাহাড় গড়েছে। আর এখন সংকটের দোহাই দিয়ে সরকারের কাছ থেকে নানা সুবিধা আদায় করে নিচ্ছে। সরকারের কাছ থেকে ৫ হাজার কোটি টাকা প্রণোদনা নিয়েও, অন্যায়ভাবে শ্রমিকদের বেতন-বোনাস কেটে রেখেছে। অনেক গার্মেন্টে বকেয়া বেতন পরিশোধ করা হচ্ছে না। মহামারির মধ্যেই অনেক গার্মেন্টে অন্যায়ভাবে লে-অফ করা হয়েছে। ছাঁটাই করে আইনসম্মত প্রাপ্য থেকে শ্রমিকদের বঞ্চিত করা হচ্ছে। বাজেটকে সামনে রেখে সরকারকে চাপে ফেলে নতুন করে সুবিধা আদায় করতে চাইছে নির্লজ্জ গার্মেন্টমালিকরা। বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, করোনা-মহাসংকটে গার্মেন্টস মালিকরা মুনাফার স্বার্থে ছুটির মধ্যেও চালু রেখে শ্রমিকদের মৃত্যুঝুঁকিতে ফেলে দিয়েছে। সরকারের সঙ্গে যোগসাজসে মালিকরা, চাকরিচ্যূতির ভয় দেখিয়ে হাজার হাজার শ্রমিককে শত শত মাইল পায়ে হেঁটে আসতে বাধ্য করেছিল। ব্যাপক প্রতিবাদের মুখে অসহায় শ্রমিকদের আবার বাড়িতে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু পরবর্তী সময়ে সুরক্ষার ব্যবস্থা না করেই গার্মেন্টস খুলে দিয়ে হাজার হাজার শ্রমিককে মৃত্যুকূপে ঠেলে দিয়েছে মালিকরা। ফলে গার্মেন্টস শ্রমিকরা ব্যাপকভাবে করোনায় সংক্রমিত হয়েছে। ‘অর্ডার বাতিল হয়ে যাবে’ এই যুক্তি দেখিয়ে গার্মেন্ট চালু করা হয়েছিল। আর এখন ব্যাপক হারে শ্রমিক ছাঁটাইয়ের কারণ হিসেবে অর্ডার না থাকার কথা বলা হচ্ছে। বিবৃতিতে সিপিবির নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, চলমান মহামারিতে শ্রমিকশ্রেণিকে সবচেয়ে বেশি ত্যাগ করতে হচ্ছে। করোনাভাইরাসের আতঙ্কের মধ্যেই বকেয়া বেতনের দাবিতে প্রতিদিনই গার্মেন্টস শ্রমিকদের রাস্তায় নামতে হচ্ছে। ন্যায্য পাওনা পরিশোধ না করে উল্টো শ্রমিকদের ওপর নির্যাতন চালানো হচ্ছে, মামলা দেয়া হচ্ছে। নির্যাতন, মামলা করে শ্রমিকশ্রেণির আন্দোলন ঠেকানো যাবে না। দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলে শ্রমিকশ্রেণীর বিরুদ্ধে মালিকশ্রেণী আর সরকারের যৌথ আক্রমণের যথাযথ জবাব দেয়া হবে।
×