ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

বেক্সিমকোর রেমডেসিভির বাজারে

প্রকাশিত: ২২:৪৭, ২২ মে ২০২০

বেক্সিমকোর রেমডেসিভির বাজারে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সরকারী হাসপাতালে বিনামূল্যে সরবরাহের মধ্য দিয়ে দেশে প্রথম রেমডেসিভির বাজারজাত শুরু করল দেশে শীর্ষস্থানীয় ফর্মাসিটিক্যালস কোম্পানি বেক্সিমকো ফার্মা। প্রতিষ্ঠানটি দাবি করেছে বহুল প্রতীক্ষিত এই ওষুধটির জেনেরিক সংস্করণ তারাই প্রথম বাজারে এনেছে। বৃহস্পতিবার ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর ওষুধটি ব্যবহারের অনুমোদন দিলে সঙ্গে সঙ্গেই স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে এক হাজার ডোজের প্রথম চালানটি হস্তান্তর করা হয়। রেমডিসিভির এর উচ্চমূল্য নিয়ে অনেকেই চিন্তিত ছিলেন। কিন্তু করোনা আক্রান্ত রোগীদের বিনামূল্যে ওষুধটি সরবরাহ করায় এখন এসব নিয়ে আর কোন দুশ্চিন্তা থাকছে না। স্বল্পোন্নত দেশগুলোতে রোগীদের জন্য সহজলভ্য ওষুধ সরবরাহ করা এখন দুরূহ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। বেক্সিমকোর প্রস্তুত করা রেমডিসিভিরের ব্রান্ড নেইম রেমসিভির। বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে ওষুধটি বাজারজাত শুরু করার ঘোষণা দিয়েছে বেক্সিমকো। যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য এবং ওষুধ নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা (এফডিএ) করোনাভাইরাস প্রতিরোধে রেমডিসিভির প্রয়োগে ভাল ফল পাওয়ার ঘোষণা দেয়ার ২১ দিনের মধ্যে দেশের বাজারে এলো রেমডিসিভির। বৃহস্পতিবার স্থাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের উপস্থিতিতে বেক্সিমকো ফার্মার ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাজমুল হাসান এমপি রেমডিসিভিরের প্রথম ব্যাচ হস্তান্তর করেন। করোনাভাইরাস প্রতিরোধে বেক্সিমকোর এই উদারতাকে সাধুবাদ জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী। ওষুধটি সম্পর্কে জানতে চাইলে বেক্সিমকোর চীফ অপরারেটিং অফিসার রাব্বুর রেজা জনকণ্ঠকে বলেন, আমরা সরকারী হাসাপতালে যাদেরই প্রয়োজন হবে তাদেরই বিনামূল্যে ওষুধটি সরবরাহ করব। আজ প্রথম ব্যাচে এক হাজার রেমডিসিভির হস্তান্তর করা হয়েছে। এটি শেষ নয় এটি অব্যাহতভাবে বেক্সিমকো সরবরাহ করতে থাকবে। অন্যদিকে বেসরকারী হাসাপাতালগুলোর ক্ষেত্রে কি হবে জানতে চাইলে বলেন, করোনা চিকিৎসার পুরো দায়িত্ব নিয়েছে সরকার। এর বাইরে বেসরকারী হাসপাতালে তেমন রোগী নেই। এরপরও সেখানে রেমসিভির প্রয়োজন হলে আমরা চার হাজার ৮০০ টাকায় সরবরাহ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ওষুধ প্রশাসন রেমডিসিভির এর প্রতি ডোজের দাম ৫ হাজার ৫০০ টাকা বেঁধে দিয়েছে। বিভিন্ন দেশে ক্লিনিক্যাল ট্রায়েলে ভাল ফলাফল পাওয়ার দাবি করে রেমডিসিভির এর উদ্ভাবক প্রতিষ্ঠান মার্কিন প্রতিষ্ঠান গিলিয়াড সায়েন্স। এরপর গত ৩০ এপ্রিল আমেরিকাতে রেমডিসিভির ব্যবহারের অনুমোদন দেয়া হয়। তবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে চলা ক্লিনিক্যাল ট্রায়েলে ভাল ফল পাওয়ার খবরে দেশের কয়েকটি ওষুধ প্রস্তুতকারী কোম্পানি রেমডিসিভির তৈরি করার উদ্যোগ নেয়। এরমধ্যে সবার আগে বেক্সিমকোই প্রথম ওষুধটি প্রস্তুত করে ওষুধ প্রশাসনের অনুমোদনের জন্য গত ৭ এপ্রিল জমা দেয়। ওষুধ প্রশাসন মন্ত্রণালয়ের তরফ থেকে এর আগে জানানো হয়েছিল ২০ মে থেকে দেশে রেমডিসিভির প্রয়োগ শুরু হবে। কেবলমাত্র গুরুতর অসুস্থ ব্যক্তিদের রেমডিসিভির প্রয়োগ করা হবে। যাদের শ্বাসকষ্ট হচ্ছে এবং নিবিড় পরিচর্যায় রয়েছেন তাদেরই ওষুধটি প্রয়োগ করা হবে বলে জানা গেছে। বেক্সিমকো ফার্মার ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাজমুল হাসান বলেন, কোভিড-১৯ চিকিৎসায় বিশ্বের প্রথম জেনেরিক ওষুধ প্রস্ততকারী কোম্পানি হতে পেরে আমরা আনন্দিত। সামাজিক দায়বদ্ধ প্রতিষ্ঠান হিসেবে আমরা সরকারের কাজে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করতে প্রস্তুত রয়েছি। আমরা কেবলমাত্র দেশের করোনা চিকিৎসা হাসপাতালগুলোতে ওষুধটি সরকরাহ করব। কোন ফার্মেসিতে ওষুধটি সরবরাহ করা হবে না। রেমডিসিভির হস্তান্তর অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে স্বাস্থ্য সচিব মোঃ আসাদুল ইসলাম, স্বাস্থ্য শিক্ষা এবং পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব মোঃ আলী নূর, ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোঃ মাহবুবুর রহমান, ডাঃ এবিএম আব্দুল্লাহ এবং কেন্দ্রীয় ওষুধাগারের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ শহিদুল্লাহ উপস্থিত ছিলেন।
×