ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

আমফান মোকাবেলায় স্থানীয় সরকারের ব্যাপক প্রস্তুতি

প্রকাশিত: ২২:৪৪, ২১ মে ২০২০

আমফান মোকাবেলায় স্থানীয় সরকারের ব্যাপক প্রস্তুতি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ঘূর্ণিঝড় আমফান মোকাবেলায় স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় ব্যপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। বিশুদ্ধ পানিপ্রাপ্তি, সচিবালয়ে ও প্রতিটি জেলার নির্বাহী প্রকৌশলীর অফিসে নিয়ন্ত্রণ কক্ষ স্থাপন, পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট প্রদান, ৫ হাজার জেরিকেন স্থাপন, মোবাইল ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট স্থাপন, ওয়াটার ক্যারিয়ার, ১০০০টি নতুন নলকূপ স্থাপনের প্রস্তুতি, প্রতিটি জেলায় ৫০০টি অস্থায়ী টয়লেট নির্মাণ করা, প্রতি জেলায় ২০০০টি নলকূপ জীবাণুমুক্তকরণের মালামাল পাঠানো ও প্রতি জেলায় ২০০০টি নলকূপ উঁচুকরণের মালামাল পাঠানোসহ ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় আমফান মোকাবেলায় মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন দফতর বা সংস্থাসমূহও ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। স্থানীয় সরকার বিভাগ বাংলাদেশ সচিবালয়ে নিয়ন্ত্রণ কক্ষ চালু করেছে। নিয়ন্ত্রণ কক্ষের টেলিফোন নং-৯৫৭৩৬২৫। স্থানীয় সরকার বিভাগের আওতাধীন জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর সম্ভাব্য ক্ষতিগ্রস্ত জেলাসমূহে ইতোমধ্যে বিশুদ্ধ পানীয় জলপ্রাপ্তি নিশ্চিত করতে খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম ভা-ার বিভাগে ১৫ ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট এবং ১০ লাখ পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট মজুদ করেছে। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর কর্তৃক ঢাকায় এবং প্রতিটি জেলায় নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয়ে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। এছাড়া সম্ভাব্য ক্ষতিগ্রস্থ প্রতিটি জেলায় ২ লাখ পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট পাঠিয়েছে। সম্ভাব্য আক্রান্ত প্রতিটি বিভাগের স্টোরে ১০ লাখ পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট মজুদ রাখা হয়েছে। প্রতিটি জেলায় প্রতি ঘণ্টায় ২ হাজার লিটার ক্ষমতাসম্পন্ন ৩টি মোবাইল ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট পাঠানো হয়েছে। প্রতি জেলায় ১০ লিটার ধারণক্ষমতা সম্পন্ন ৫০০০টি জেরিকেন ও ৫০০টি করে হাইজিন কিট, একটি করে ওয়াটার ক্যারিয়ার, নলকূপ মেরামতের প্রয়োজনীয় খুচরা যন্ত্রাংশ, সাবান, হ্যান্ড স্যানিটাইজার এবং ব্লিচিং পাউডার, ১০০০টি নতুন নলকূপ স্থাপনের মালামাল, ৫০০টি অস্থায়ী টয়লেট নির্মাণের মালামাল, ২০০০টি নলকূপ জীবাণুমুক্তকরণের মালামাল, ২০০০টি নলকূপ উঁচুকরণের মালামাল ও পার্শ্ববর্তী জেলা হতে প্রতি জেলায় অতিরিক্ত নলকূপ মেকানিক প্রেরণ করা হয়েছে। এদিকে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর (এলজিইডি) দুর্যোগকালীন দেশব্যাপী পল্লী সড়ক নেটওয়ার্ক নিরাপদ ও নিরবচ্ছিন্ন রাখতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশ দিয়েছে। একই সঙ্গে উপকূলীয় জেলাসমূহে কর্মরত এলজিইডির সকল কর্মকর্তা/কর্মচারীদের দুর্যোগকালীন অবস্থা স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত এবং কোভিড-১৯ এর কারণে সরকার ঘোষিত সাধারণ ছুটিকালীন স্ব-স্ব কর্মস্থলে অবস্থান করে দায়িত্ব পালনের জন্য নির্দেশ হয়েছে। দুর্যোগকালীন আশ্রয়কেন্দ্রসমূহে/নিরাপদ স্থানে দ্রুত ও নিরাপদে পৌঁছানোর জন্য আশ্রয়কেন্দ্র সংযোগকারী সড়কসহ দেশব্যাপী পল্লী সড়ক নেটওয়ার্ক সচল ও নিরবচ্ছিন্ন রাখার ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। উপজেলা/ইউনিয়ন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সঙ্গে আলোচনা করে এলজিইডির আওতায় নির্মিত আশ্রয়কেন্দ্রে বিশুদ্ধ পানি, সৌর বিদ্যুত ও পয়ঃব্যবস্থাপনা সচল রাখার ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়প্রবণ এলাকায় অবস্থিত রাস্তাসমূহ জলোচ্ছ্বাসের পানিতে দীর্ঘদিন নিমজ্জিত থাকায় রাস্তার বিভিন্ন স্তর নরম হয়ে যায়। উক্ত অবস্থায় প্রবেশ পথে ভারি যানবাহন প্রবেশ রোধকল্পে, প্রতিবন্ধকতা (যেমন- খুটি পুঁতে রাখা, সাইনবোর্ড স্থাপন ইত্যাদি) তৈরির ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। ৪) সড়কের জরুরী রক্ষণাবেক্ষণের জন্য প্রয়োজনে সকল যানবাহন চালু অবস্থায় (ট্রাক, পিক-আপ ইত্যাদি) ড্রাইভারসহ কর্মস্থলে রাখা হয়েছে। ৫) প্রয়োজনীয় নির্মাণ যন্ত্রপাতি যেমন, বুলডোজার, এস্কাভেটর ইত্যাদি চালু অবস্থায় রাখতে হবে এবং ঝড়ে পড়ে যাওয়া গাছ কাটার প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি তৈরি রাখা হয়েছে। সদর দফতরে পিএমই ইউনিটে একটি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। প্রয়োজনে তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (পিএমই/পরিকল্পনা/রক্ষণাবেক্ষণ) (মোবাইল নম্বর-০১৭৩২-৬০২৫৪০/ ০১৭১২-৫৩১৪৩৪/ ০১৭১১-০০৭৭৬৫) এর সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হবে। ৭) জলোচ্ছ্বাস/বর্ষার আপদকালীন রাস্তার যে কোন জায়গায় বা অংশে যে কোন সময় ক্ষতিগ্রস্ত বা ভেঙ্গে গেলে এলজিইডির পল্লী সড়ক ও কালভার্ট মেরামত কর্মসূচী বাস্তবায়ন নির্দেশিকাতে আপদকালীন জরুরী পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করা হবে।
×