ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

চট্টগ্রামে নৌ প্রতিমন্ত্রীর বৈঠক

বন্দর সচল রাখতে সব ধরনের পণ্যের কন্টেনার অফডকে সরানো হবে

প্রকাশিত: ০৯:১৩, ২৪ এপ্রিল ২০২০

বন্দর সচল রাখতে সব ধরনের পণ্যের কন্টেনার অফডকে সরানো হবে

স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম অফিস ॥ জাতীয় স্বার্থে যে কোন উপায়ে চট্টগ্রাম বন্দর কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞার কথা ব্যক্ত করেছেন নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। তিনি জানান, ইয়ার্ড খালি করতে সব ধরনের পণ্যবোঝাই কন্টেনার অফডকে (বেসরকারী আইসিডি) সরিয়ে নেয়া হবে। বৃহস্পতিবার বন্দর কর্তৃপক্ষের উর্ধতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের কাছে তিনি এ অবস্থান তুলে ধরেন। এদিকে, কার্যকর কিছু উদ্যোগের ফলে কন্টেনার জট পরিস্থিতি ক্রমশ উন্নতির দিকে বলে জানিয়েছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। তবে মোটামুটি স্বাভাবিক হতে আরও সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা। চট্টগ্রাম বন্দর ইয়ার্ডে কন্টেনার জট দূর করা এখন বড় চ্যালেঞ্জ। করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় গত ২ মার্চ শুরু হওয়া সরকার ঘোষিত ছুটির বিরূপ প্রভাব পড়েছে বন্দরে। কারণ, সবকিছু বন্ধ থাকলেও সারাবছরই চালু থাকে এ বন্দর। পণ্য ডেলিভারিতে ধীরগতির মধ্যেই বন্দরে কন্টেনার নেমেছে অনেকটা স্বাভাবিক নিয়মে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) নির্দেশনা অনুযায়ী কাস্টমসে ২৭ দিন বন্ধ থাকে বাণিজ্যিক পণ্যের শুল্কায়ন। সঙ্কট অনুধাবন করে সকল ধরনের পণ্য শুল্কায়নের সিদ্ধান্ত এলেও ততদিন পরিস্থিতি চলে যায় অনেকটা নিয়ন্ত্রণের বাইরে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে চট্টগ্রাম বন্দরে এসে বৃহস্পতিবার কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এবং মন্ত্রণালয়ের সচিব মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী। বৈঠকে দ্রুততার সঙ্গে প্রায় ১৮ হাজার কন্টেনার অফডকে সরিয়ে নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল শেখ আবুল কালাম আজাদ, বন্দরের সদস্য (প্রশাসন ও পরিকল্পনা) জাফর আলম, বন্দর সচিব মো. ওমর ফারুক ও উর্ধতন কর্মকর্তারা। নৌপরিববহন প্রতিমন্ত্রী জানান, বহির্নোঙ্গরে এখন অপেক্ষমাণ রয়েছে ৩৩টি জাহাজ। এসব জাহাজে আছে ৩ হাজার কন্টেনার। ইয়ার্ডে স্থান না থাকায় কন্টেনার নামানো ব্যাহত হচ্ছে। ইয়ার্ড থেকে কন্টেনারগুলো অফডকে নিয়ে গিয়ে জাহাজের কন্টেনার নামাতে হবে। তিনি বলেন, আমরা চট্টগ্রাম বন্দর সচল রাখতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। করোনার কারণে সৃষ্ট বৈশি^ক সমস্যা মোকাবেলায় আমরা সচেষ্ট। বন্দরের লোকজন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দায়িত্ব পালন করছেন। এ ঝুঁকি আগামী প্রজন্মের জন্য। নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জনগণের সঙ্গে এবং বিশে^র বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে কথা বলেছেন। দেশের জনগণের দায়িত্ব সচেতন হলে এ সঙ্কট মোকাবেলা করা। যেখানে যেমন সহযোগিতা প্রয়োজন সেখানে তা করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, সরকার এবং বন্দর কর্তৃপক্ষ আন্তরিক রয়েছে। বন্দরের শ্রমিকদের নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, কাজ করতে গিয়ে কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হলে কর্তৃপক্ষ তা দেখবে। বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে ইয়ার্ড থেকে সকল ধরনের পণ্য অফডকে নিয়ে যাওয়ার বিষয় আলোচিত হয়। নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী জানান, চট্টগ্রাম বন্দর কখনও বন্ধ হয় না। এ বন্দর দিয়ে দেশের আমদানি রফতানির সিংহভাগ পরিচালিত হয়। ইয়ার্ডে কন্টেনার জট নিরসনে সকল ধরনের পণ্য অফডকে সরিয়ে নেয়া হবে বলে জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা শীঘ্রই সে অনুমোদন পেতে যাচ্ছি। ১৮ হাজার কন্টেনার অফডকে সরিয়ে নেয়া যাবে। এ ব্যাপারে বন্দরের স্টেকহোল্ডার, বিজিএমইএ, বিকেএমইএসহ আমদানিকারকদের যথাযথ ভূমিকা প্রত্যাশা করেন মন্ত্রণালয়ের সচিব।
×