ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

হৃতিকের স্ত্রীর সঙ্গে পরকীয়া, শাহরুখ-করনের সঙ্গে বন্ধুত্বে ফাটল, অতঃপর.প..

প্রকাশিত: ২৩:১৪, ২৮ মার্চ ২০২০

হৃতিকের স্ত্রীর সঙ্গে পরকীয়া, শাহরুখ-করনের সঙ্গে বন্ধুত্বে ফাটল, অতঃপর.প..

অনলাইন ডেস্ক ॥ মডেলিং বা অভিনয়, কোনওটাই তার করার ইচ্ছা ছিল না ছোটবেলায়। বরং চেয়েছিলেন অ্যাথলেট হতে। কিন্তু জীবনের মোড় ঘুরে গেল দিল্লির একটি পার্টিতে। সেখানে রোহিত পালের নজরে পড়েন অর্জুন রামপাল। রোহিত তাকে পরামর্শ দেন মডেলিং করতে। এরপরই নিজের গ্রুমিং শুরু করেন অর্জুন। মডেলিং দুনিয়ায় দ্রুত উঠে আসেন জনপ্রিয়তার শীর্ষে। সংবাদপত্র, পত্রিকা অথবা ইলেকট্রনিক মাধ্যম, সর্বত্রই বিজ্ঞাপনের মডেল হিসেবে তার চাহিদা ছিল তুঙ্গে। মডেল থেকে সুপারমডেল হয়ে উঠতে সময় লাগেনি অর্জুন রামপালের। এই রকম সময়ই এল অভিনয়ের সুযোগ। অশোক মেহতা এবং শান্তনু সোরে তাকে দু’টি ছবি, ‘মোক্ষ’ এবং ‘জড়’-এ অভিনয়ের প্রস্তাব দিলেন। তাদের কাছে এক বছর সময় চেয়ে নিলেন। গেলেন নিউইয়র্ক। অভিনয় শিখতে। এর পর মুম্বাই ফিরে আবার তিনি অভিনয় আর নাচের প্রশিক্ষণ নেন। কিন্তু বিদেশ থেকে অভিনয় শিখে এসেও লাভ হল না। আসতে পারলেন না জনপ্রিয়তার প্রথম সারিতে। সাবলীল নয়, এ রকমই বলা হত তার অভিনয়কে। এমনও বলা হত, কোনও দৃশ্যে তার উপস্থিতি নিষ্প্রাণ আসবাবের মতো। তবে এ দু’টি ছবির আগে অর্জুন রামপাল অভিনয় করেন আরও একটি ছবিতে। রাজীব রায় পরিচালিত সেই ছবির নাম ‘প্যায়ার ইশক আওর মোহাব্বাত’। শোনা যায়, আন্ডারওয়ার্ল্ডের চাপে এই ছবিতে রাজীব রায় নিয়েছিলেন মনিকা বেদীকে। কিন্তু এই ছবি বক্সঅফিসে মুখ থুবড়ে পড়ে। পর পর অর্জুন রামপালের ছবি ফ্লপ হয়। দর্শকমহলে চরম সমালোচিত হতে থাকে তার অভিনয়। ইন্ডাস্ট্রিতে কিছুটা হলেও তিনি পায়ের নীচে জমি পান ‘আঁখে’ ছবিতে। এখানে অমিতাভ বচ্চনের সঙ্গে স্ক্রিন শেয়ার করেন তিনি। এর পর আবার শুরু ব্যর্থতার পালা। ‘দিল হ্যায় তুমহারা’, ‘দিল কা রিশতা’ ছবি দু’টি ফ্লপ হয়। ক্রমে খাদের কিনারায় এসে পৌঁছায় অর্জুনের ক্যারিয়ার। এই সময় তার কাছে ‘হামরাজ’ ছবির সুযোগ আসে। কিন্তু সেই অফার তিনি ফিরিয়ে দেন। তার বদলে অভিনয় করেন অক্ষয় খন্না এবং ছবিটি সফল হয়। ২০০১ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত মোট ১৪টি ছবিতে অভিনয় করেন। তার মধ্যে ‘আঁখে’ ছাড়া কোনও ছবি সফল হয়নি। জীবনের এই কঠিন সময়ে অর্জুনের পাশে ছিলেন তার স্ত্রী, মেহের জেসিয়া। অভিনয়ে আসার আগেই সুপারমডেল মেহেরের সঙ্গে তার বিয়ে হয়েছিল। তবে যতই ব্যর্থ হন না কেন, অর্জুনের ফ্যান ফলোয়িং-এ ভাটার টান আসেনি। তার সুদর্শন চেহারায় মুগ্ধ ছিলেন নারী দর্শকরা। অভিনয়ে বিশেষ সুবিধা করতে না পেরে ২০০৬ সালে অর্জুন তার স্ত্রী মেহেরের সঙ্গে একটি প্রোডাকশন হাউস শুরু করেন। এই সময়েই তাকে ‘কাভি আলবিদা না কেহনা’ ছবিতে অভিনয়ের সুযোগ দেন করন জোহার। এই ছবিতে অভিনয়ের সূত্রে করন জোহর এবং শাহরুখ খান, দু’জনের সঙ্গে অর্জুনের সম্পর্কের ভীত মজবুত হয়। এর পর ‘ডন’, ‘ওম শান্তি ওম’ ছবিতে অভিনয়ের সূত্রে ইন্ডাস্ট্রিতে পরিচিত পান তিনি। ২০০৮ সালে ‘রক অন’ ছবিতে অর্জুনের অভিনয় পুরো দৃশ্যটা আমূল বদলে দেয়। ইন্ডাস্ট্রির প্রথম সারির নায়কের তালিকায় তিনি উঠে আসেন। পার্শ্বচরিত্রে অভিনয়ের সুবাদে পান জাতীয় পুরস্কার। এর পর আবার ব্যর্থতার টানাপড়েন। অর্জুনকে সাফল্যের স্বাদ দিতে তাকে ‘রা ওয়ান’ ছবিতে খলনায়কের ভূমিকায় মনোনীত করেন শাহরুখ। কিন্তু এই ছবি থেকেই তাদের বন্ধুত্বে ফাটল ধরে। এ সময়ে শাহরুখ-প্রিয়াঙ্কা চোপড়া সম্পর্ক বেশ গুঞ্জরিত ইন্ডাস্ট্রিতে। অর্জুন নাকি শাহরুখকে পরামর্শ দেন এই সম্পর্ক থেকে সরে আসতে। এই পরামর্শ নাকি ভাল ভাবে নেননি শাহরুখ। এ রকম একটা সময়ে আবার নতুন করে বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন অর্জুন রামপাল। ইন্ডাস্ট্রিতে বলা হয়, অর্জুনের জন্যই হৃতিক রোশন আর সুজানের বিচ্ছেদ হয়েছে। কারণ সুজান আর অর্জুন তখন ঘনিষ্ঠ সম্পর্কে ছিলেন। ব্যক্তিগত জীবনে এই বিতর্কের সঙ্গে যোগ হয় নতুন সমস্যা। অভিযোগ ওঠে, অর্জুন তার রেস্তোরাঁর ভাড়া দু’বছর ধরে দেননি। বকেয়া ছিল ৪ কোটি টাকা। তার নামে মামলাও করা হয়। শোনা যায়, তিনি সে সময় দেউলিয়া হয়ে গিয়েছিলেন। যদিও সেই দাবি তিনি পরে অস্বীকার করেন। ক্যারিয়ারের পাশাপাশি ব্যক্তিগত জীবনও তখন যথেষ্ট টালমাটাল। সুজানের সঙ্গে সম্পর্কের গুঞ্জন ওঠার পরে ২০১৫ সালে মেহের জেসিয়া বাড়ি ছেড়ে চলে যান তার বাবা মায়ের কাছে। ক্যারিয়ারে ঘুরে দাঁড়ানোর আশায় নিজের প্রোডাকশন হাউস থেকে অর্জুন রামপাল বানান ‘ড্যাডি’। এই সময় আইপিএল পার্টিতে তার সঙ্গে আলাপ হয় দক্ষিণ আফ্রিকার মডেল গ্যাব্রিয়েলার। আইপিএলে গ্যাব্রিয়েলা চিয়ারলিডার ছিলেন। শোনা যায়, মেহের জেসিয়ার সঙ্গে বিচ্ছেদের আগেই অর্জুনের সঙ্গে সম্পর্কের জেরে সন্তানসম্ভবা হয়ে পড়েছিলেন গ্যাব্রিয়েলা। ২০১৯ সালে জন্ম নেয় সন্তান। কিন্তু বিতর্ক যেন পিছু ছাড়ছিল না অর্জুনের। ২০১৯ সালেই আবার এক কোটি টাকা অনাদায়ের অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে। আবার সে বছরই মেহের জেসিয়ার সঙ্গে তার ২১ বছরের দাম্পত্য শেষ হয়। অর্জুন এখন গ্যাব্রিয়েলার সঙ্গে লিভ ইন করেন। ব্যক্তিগত জীবনে ঝড় কিছুটা শান্ত হলেও ক্যারিয়ারে আর আগের জায়গায় পৌঁছাতে পারেননি তিনি। শাহরুখ এবং করন জোহরের সঙ্গে তার সম্পর্কের তিক্ততার জের এখনও স্পষ্ট তার ক্যারিয়ারের ভাঙা পালে। সূত্র: আনন্দবাজার
×