ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

করোনায় কেনাকাটা অর্ধেক কমে গেছে

প্রকাশিত: ০৯:২৩, ১৫ মার্চ ২০২০

করোনায় কেনাকাটা অর্ধেক কমে গেছে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ দেশে নতুন করে করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগী না পাওয়া গেলেও জনমনে আতঙ্ক যেন কাটছে না। এর প্রভাবে কমে গেছে জনসমাগম, গণপরিবহনে যাত্রী চলাচল। প্রায় শূন্যের কোঠায় চলে এসেছে অভিবাদন জানানোর অন্যতম মাধ্যম হ্যান্ডশেক করা। বাইরে চলাচলকারীর অধিকাংশই এখন মাস্ক ব্যবহার করছেন। কমিয়ে দিয়েছেন ফুটপাথে সিগারেট বা চা পান করা। করোনাভাইরাসের প্রভাব পড়েছে শপিংমলগুলোতেও। বিক্রেতারা বলছেন, গণমাধ্যমে দেশে করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগীর নিউজ প্রকাশের পর অর্ধেকে কমেছে বেচাকেনা। তবে শপিংমলে বিক্রি কমলেও ফুটপাথগুলোতে কিছুটা বেচাকেনা হচ্ছে। তবে বিক্রি তুলনামূলক কম হচ্ছে বলে জানান বিক্রেতারা। রাজধানীর মিরপুর শপিং সেন্টার, শাহ আলী মার্কেট, মুক্তবাংলা মার্কেট, কো-অপারেটিভ মার্কেট, ফরচুন শপিংমল, মৌচাক মার্কেট, আনারকলি মার্কেট, ইস্টার্ন প্লাজা, গাজী ভবন শপিং সেন্টার, পাওয়েল মার্কেট ঘুরে এসব চিত্র উঠে এসেছে। এসব মার্কেট ঘুরে দেখা যায়, এক মাস আগে মার্কেটগুলোতে যেমন জনসমাগম থাকত, বিক্রেতারার ব্যস্ত থাকতেন পণ্য বিক্রিতে; এখন তার উল্টো চিত্র, মার্কেটে ক্রেতার উপস্থিতি নেই বললেই চলে। অর্ধেকের কমে নেমে এসেছে বেচাকেনা। অলস সময় কাটাতে দেখা গেছে দোকান মালিক ও কর্মচারীদের। দোকানিরা বলছেন, এখন ঈদের সিজন না হলেও দিনে ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা পণ্য বিক্রি হয়। কোথাও আবার ৫০ থেকে লক্ষাধিক টাকার পণ্য বিক্রি হয়। তবে দেশের মধ্যে তিনজন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী পাওয়া পর পরই বেচাকেনা কমেছে অর্ধেক। কোন কোন দোকানে আবার অর্ধেকের কম বিক্রি হচ্ছে। মিরপুর শপিং সেন্টারে আফসার আলী নান্টুর দুটি দোকান রয়েছে। তার দুটি দোকান থেকে দিনে ৭০ হাজার থেকে লক্ষাধিক টাকার বিক্রি হতো। এখন তার দিনে বেচাকেনার পরিমাণ ৩০ হাজার টাকার কম। তিনি বলেন, করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগী দেশের মধ্যে পাওয়া এবং গণমাধ্যমে খবর প্রকাশের পর থেকে ক্রেতারা আর মার্কেটেও আসছেন না। শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত দুটি দোকানে তিন হাজার ৫০০ টাকার বিক্রি হয়েছে। অথচ ভ্যাট বাদেই দুটি দোকানে দিনে খরচ চার হাজার টাকা। এমন চলতে থাকলে খরচ যোগান দেয়া কষ্টকর হয়ে পড়বে। একই কথা জানান মৌচাক মার্কেটের বিক্রেতা হাজী ইকবাল হোসেন। তিনি বলেন, এর আগে বাচ্চারা দোকানে এলে আমরা আদর করে পছন্দের পোশাক কিনতে সহযোগিতা করতাম। এখন ক্রেতা নেই, আবার বাচ্চার শরীরে হাত দিলে অভিভাবক রাগ করছেন। করোনাভাইরাসের সংক্রমণের পর থেকেই এমন হচ্ছে। তাদের মতো একই অবস্থা রয়েছে ঢাকার অন্য সব মার্কেটে। তবে ভিন্নতা লক্ষ্য করা গেছে ফুটপাথ মার্কেটে। সেখানে বিক্রির পরিমাণ সামান্য কমেছে। বিক্রেতারা বলছেন, মাসের শুরুতে বিক্রি ভাল হয়, মাঝামাঝি সময়ে বিক্রি কিছুটা কমে আসে। এটা করোনাভাইরাসের কারণে নয় বলে জানান তারা। পল্টন বায়তুল মোকাররম এলাকার ফুটপাথ ব্যবসায়ী কালু বলেন, আমাদের বিক্রি ভাল ধরা যায়, এমনিতেই মাসের মাঝামাঝি সময়ে বিক্রি কম থাকে শুরুতে বিক্রি ভাল থাকে। এটা করোনাভাইরাসের কারণে নয়।
×