ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

তালেবানের সঙ্গে চুক্তি করতে পম্পেওকে পাঠালেন ট্রাম্প

প্রকাশিত: ০৯:০৪, ১ মার্চ ২০২০

তালেবানের সঙ্গে চুক্তি করতে পম্পেওকে পাঠালেন ট্রাম্প

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শুক্রবার বলেছেন, তিনি আফগানিস্তান থেকে হাজার হাজার মার্কিন সৈন্য প্রত্যাহার শুরু করার লক্ষে এবং যুদ্ধে ১৮ বছরের যুদ্ধ অবসানের উদ্দেশে আফগান তালেবানের সঙ্গে একটি চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার জন্য পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেওকে পাঠিয়েছেন। এপি। ট্রাম্প বলেন, প্রেসিডেন্টের নির্দেশে পম্পেও তালেবানের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে শীঘ্রই উপস্থিত থাকবেন। এটি এমন এক অনুষ্ঠান যেখানে শীর্ষস্থানীয় মার্কিন কর্মকর্তারা প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে জঙ্গী নেতাদের সঙ্গে উপস্থিত থাকবেন। এ জঙ্গীরা ৯/১১ এর হামলার আগে আল কায়েদাকে নিরাপদ আশ্রয় দিয়েছিল এবং মার্কিন সামরিক বাহিনীর কয়েক হাজার সদস্য, পুরুষ ও নারীর মৃত্যুর জন্য দায়ী। ট্রাম্প বলেন, প্রতিরক্ষামন্ত্রী মার্ক এসপার আফগান সরকারের সঙ্গে একটি যৌথ ঘোষণা দেবেন। চুক্তি কোথায় স্বাক্ষরিত হবে সে বিষয়ে ট্রাম্প কিছু বলেননি। কিন্তু এর আগে এক রিপোর্টে বলা হয়েছে যে, চুক্তি স্বাক্ষর হবে শনিবার কাতারের দোহাতে। যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন বাহিনী ও তালেবান সহিংসতা হ্রাসে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হওয়ার এক সপ্তাহ পর চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হচ্ছে। চুক্তির শর্তানুযায়ী যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তানে অবস্থিত প্রায় ১৩ হাজার সৈন্যের মধ্যে সেনা সংখ্যা ৮ হাজার ৬ শ’তে নামিয়ে আনবে। পরিকল্পনাটির বেশির ভাগই অনিশ্চিত হয়ে পড়বে যদি না উল্লেখ করা হয় যে, আমেরিকান সৈন্য প্রত্যাহার করা হবে এবং তালেবান যুক্তরাষ্ট্রের বা এর সহযোগীদের ওপর হামলার জন্য দেশটির চরমপন্থীদের আক্রমণের মঞ্চ হিসেবে ব্যবহার না করার প্রতিশ্রুতি দেয়। স্বাক্ষরের ১০ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে তালেবান ও সরকারসহ আফগান সমাজের সকল শাখার প্রতিনিধিরা যুদ্ধোত্তর আফগানিস্তানের জন্য একটি কাঠামো আলোচনার জন্য বৈঠকে বসবেন। আরও স্থায়ী একটি অস্ত্রবিরতি ও নারী ও সংখ্যালঘুসহ বিভিন্ন বিষয় আলোচ্যসূচীতে অন্তর্ভুক্ত থাকবে। ট্রাম্প এক বিবৃতিতে বলেন, তালেবান ও আফগানিস্তানের সরকার এ প্রতিশ্রুতিগুলো মেনে চললে আমরা আফগানিস্তানে যুদ্ধ অবসানে এগিয়ে যাওয়ার জন্য একটি শক্তিশালী পথ খুঁজে পাব। তিনি বলেন, আল-কায়েদা, আইএস ও অন্য যেকোন সন্ত্রাসী গ্রুপ থেকে মুক্ত এক নতুন আফগানিস্তানে এক টেকসই শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণে প্রতিনিধিতে থাকবে এ প্রতিশ্রুতিগুলো। যুক্তরাষ্ট্র-তালেবান চুক্তি মার্কিন নিরাপত্তার প্রতি ঝুঁকিপূর্ণ হবে না, এ মর্মে নিশ্চয়তা চেয়ে ২০ জনের বেশি কংগ্রেস সদস্য সম্প্রতি একটি চিঠি লিখেছেন পম্পেও ও এসপারের কাছে। প্রতিনিধি পরিষদের সদস্য উইল হার্ড (আর-টেক্সাস) বলেন, আমি সিআইএয়ে আমার দায়িত্বকালীন অনেক খারাপ লোককে দেখেছি এবং একটা বিষয় আমি বুঝেছি যে, অতীতের কার্যকলাপ ভবিষ্যত কোন কর্মকা-ের জন্য বেশ ভাল নির্দেশনা দেয়। উইলহার্ড আফগানিস্তানে সিআইএয়ের একজন ছদ্মবেশী কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি বলেন, আফগানিস্তানে যুদ্ধের অবসান হওয়া উচিত এবং এর সামর্থ্য রয়েছে তালেবানের হাতে। কিন্তু তালেবান শান্তি প্রতিষ্ঠায় সত্যিকার অংশীদার হতে চায়নি কখনও। তালেবান নেতারা এপিকে বলেছে যে, পরিকল্পনা অনুযায়ী সবকিছু অগ্রসর হলে সকল মার্কিন সৈন্য ১৪ মাসের মধ্যে আফগানিস্তান থেকে প্রত্যাহার করা হবে। কিন্তু ওয়াশিংটন এ ধরনের কোন সময়রেখা নিরূপণে নিশ্চয়তা দেয়নি। চুক্তিতে আফগান সরকারের কারগারে বন্দী ৫ হাজার তালেবানকে মুক্তি দেয়ার শর্তও রয়েছে। কিন্তু আফগান সরকার সম্মত হবে কিনা তা স্পষ্ট নয়।চুক্তি অনুযায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য একটি পরিকল্পনা তৈরি করা হবে এবং শুরু হবে যুক্তরাষ্ট্র ও তালেবানের মধ্যে আলোচনা যা এর আগে ভেঙ্গে গিয়েছিল। পেন্টাগন কয়েক মাস ধরে বলে এসেছে যে, তারা আফগানিস্তানে সৈন্যসংখ্যা ৮ হাজার ৬শ’তে নামিয়ে আনতে প্রস্তুত। কিন্তু মার্কিন কর্মকর্তারা বলেছেন, যে কোন সেনা হ্রাসের জন্য কয়েক মাস সময় লাগতে পারে।
×