ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ইউএস ট্রেড শো’তে কোকাকোলা থেকে মাইক্রোসফট একছাদের নিচে

প্রকাশিত: ০৬:২৭, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০

ইউএস ট্রেড শো’তে কোকাকোলা থেকে মাইক্রোসফট একছাদের নিচে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ কোমলপানীয় কোকাকোলা থেকে শুরু করে মাইক্রোসফটের মতো বিশ্বখ্যাত প্রযুক্তি কোম্পানিকে একসঙ্গে পাওয়া যাচ্ছে ইউএস ট্রেড শো’তে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সব বড় বড় কোম্পানি ঢাকার সোনারগাঁ হোটেলের একছাদে বসে সেবা দিচ্ছে। রাজধানী ঢাকার দর্শনার্থীরা ঘুরে ঘুরে দেখছেন থরে থরে সাজানো আমেরিকার তৈরি কসমেটিক্স জর্দানা, কালারম্যাক্স কসমেটিক্স, জনসন এ্যান্ড জনসনের মতো পণ্যসামগ্রী। আরও আছে এক্সন মবিল কর্পোরেশন, মাস্টার কার্ড, আমেরিকান লাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানি (মেটলাইফ), বিশ্বখ্যাত ফাস্টফুড কোম্পানি ইয়াম! রেষ্টুরেন্ড ইন্টারন্যাশনালসহ ৪৮টি কোম্পানি। এছাড়া ভিসা ওয়ার্ল্ড ওয়াইড পিটিই লিমিটেড, ট্রান্সফাস্ট, পেপসিকো ইন্টারন্যাশনালসহ ইউএস সরকারী প্রতিষ্ঠানের স্টল রয়েছে ট্রেড শোতে। ঘুরে দেখার পাশাপাশি দর্শনার্থীরা পছন্দমতো পণ্য কিনতে পারছেন কিংবা অর্ডার করতে পারছেন। আমেরিকার সব পণ্য একসাথে পাওয়া যাচ্ছে বলে, উদ্বোধনের পরই জমে উঠেছে ট্রেড শো। তিনদিনের এই ট্রেড শো চলবে আগামী ২৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। এদিকে, বৃহস্পতিবার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন। আমেরিকান চেম্বার অব কমার্স (অ্যামচেম) এবং বাংলাদেশে মার্কিন দূতাবাসের যৌথ উদ্যোগে ২৭তম ইউএস ট্রেড শো অনুষ্ঠিত হচ্ছে। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন, ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের চার্জ দ্য অ্যাফায়ার্স জোনি ওয়ানগার, অ্যামচেমের সভাপতি সৈয়দ এরশাদ আহমেদ, বিডা’র নির্বাহী পরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম প্রমুখ। বক্তারা বলেন, ইউএস ট্রেড শো’র মাধ্যমে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও বিনিয়োগ আরও বাড়বে। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগ এদেশে আরও বেশি পরিমাণে বৃদ্ধি পাবে। শুধু তাই নয়, আমেরিকান পণ্যসামগ্রী সম্পর্কেও এদেশের মানুষ একটি ধারণা পাবে ট্রেড শো’র মাধ্যমে। এবারের ট্রেড শো’তে যুক্তরাষ্ট্রের অনেকগুলো বিশ্ববিদ্যালয় অংশগ্রহণ করেছে। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে রয়েছে হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটি, জনসন হপিং ইউনিভার্সিটি, নিউইয়র্ক ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি, পেনিসেলভেনিয়া ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি অব ম্যারিল্যান্ড, ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া, ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাস প্রভৃতি। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকতারা বলছেন, বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের ব্যাপারে তাদের আগ্রহ রয়েছে। বাংলাদেশ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বেশি বেশি ছাত্রছাত্রী প্রত্যাশা করছে। টিউশন ফিসহ নানা ধরনের সুযোগ-সুবিধার প্রস্তাব দেয়া হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর পক্ষ থেকে। এদিক, বাংলাদেশে বিনিয়োগকারী দেশগুলোর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র শীর্ষ স্থানে রয়েছে বলে জানিয়েছেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন। তিনি বলেন, দেশে বৈদেশিক বিনিয়োগকে আকৃষ্ট করতে বাণিজ্য ব্যবস্থার উদারীকরণ করা হয়েছে এবং নন-শুল্ক বিধিনিষেধকে উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস করা হয়েছে। তিনি বলেন, শিল্পনীতি ২০১৬-এ দেশের সর্বত্র বিশেষত রফতানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলসমূহে বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণের জন্য বিশেষ ইনসেন্টিভ ও সুবিধা নিশ্চিত করা হয়েছে। নীতিতে জ্বালানী, অবকাঠামো, যোগাযোগ, কৃষি ব্যবসা, আইসিটি, শিক্ষা, পর্যটন, রিয়েল এস্টেটসহ অন্যান্য ক্ষেত্রে প্রচুর সুযোগ নিশ্চিত করা হয়েছে। শিল্পমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের ৫২তম বৃহৎ বাণিজ্যিক অংশীদার। ২০১৯ সালে মোট বাণিজ্যের পরিমাণ ৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি ছিল। যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের দ্বি-পাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং বাণিজ্য ঘাটতি ধীরে ধীরে কমে আসছে। শিল্পমন্ত্রী বলেন, বৈচিত্র্য্যময় শিল্পখাতে বিদ্যমান বিশাল সম্ভাবনার সন্ধানের জন্য সরকার ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের কাজ চলমান রয়েছে। সে সঙ্গে রাসায়নিক, প্লাস্টিক, চামড়া, সিরামিক, অটোমোবাইল, খাদ্য এবং অন্যান্য অনেক শিল্প স্থাপনের কাজ চলমান রয়েছে। শিল্পমন্ত্রী দ্বি-পাক্ষিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়াতে দু’দেশের ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের মধ্য পারস্পরিক যোগাযোগ আরও বৃদ্ধি করার আহবান জানান। ইউএস ট্রেড শো দু’দেশের অর্থনৈতিক সম্ভাবনা এবং সুযোগগুলোকে কাজে লাগিয়ে বিদ্যমান বাণিজ্যিক সম্পর্ক সম্প্রসারণে ভূমিকা রাখবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। প্রতিদিন ট্রেড শো সকাল দশটা থেকে শুরু হয়ে রাত্রি ৮ টা পর্যন্ত চলবে। এবার দর্শনার্থীদের জন্য ত্রিশ টাকার প্রবেশ টিকিট করা হয়েছে। তবে ছাত্রছাত্রী শিক্ষার্থীদের কোন টিকেট লাগবে না।
×