এমন বিকেলে ছুরি মেরে দাও আকাশের
তলপেটে
না হলে এইসব ছেঁড়া আগুনের টুকরো
আকাশটাকে পুড়িয়ে মারবে,
চায়ের পেয়ালায় মুখ রাখতে রাখতে
এ রকম হা-করা শূন্য সন্ধ্যায়
ওই দৃশ্যের কাছে স্তব্ধ হয়ে বলো-
আজ যারা তোমার গোধূলি থেকে
নিজেকে তৃষ্ণার্ত করল
একটি জন্ম দিয়ে তুমি তাকে
আকাশের অধিপতি করে দাও
না হয়
স্তব্ধতা
ঝরে
পড়ুক
সুষমাদের বাড়ি,
স্তনের গ্রিবায়
চৈতন্যের লালায়
মানুষেরা শুধু আলোর গবেষণা করে
জেনে যেতে চায়, পাঁচশ’ ফুট নিচের প্রতœনগর,
কুমারীর তলপেটে ভ্রƒণের মিছিল
ক’জন নৃপতি ছিল উষ্ণতায় স্থবির-
হেরেমের নর্তকীর মেদমাংস ছিল কি না;
না হয় স্তব্ধতা
ঝরে পড়ুক
কুমারীর স্তনময়।
অন্ধকারের সঙ্গে কাটাব আগামী বছরগুলো
** একটি রূপকথা
জোছনাজ্বলা রাত্রিতে লালস্কার্ফ পরা একটি মেয়ে। তার হাতে নীল টর্চ-
হঠাৎ জানালার ফাঁক দিয়ে নিয়ন্ত্রিত হলে, তার রং কতদিন পৃথিবীর যুবকদের
সহায়তা করবে, এই ভেবে একজন, কেন যে তাকে ছুঁতে চাইল। এই
ঘটনায় মেয়েটি জোছনায় রূপান্তরিত হলে একটি রূপকথার জন্ম হয়...
আমরা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে এই দৃশ্যে করতালি দেই
ইতিহাস থেকে মহানগরী ক্ষয়ে ক্ষয়ে পড়ে,
এমন গোধূলিকে উস্কে দিয়ে ট্রেসিং পেপারে
বার করি ভোর।
রাতের হত্যাকা- মুছে দিয়ে লিখে যাই নতুন খবর;
পেছনে সভ্যতা বাড়ে, দূরে যায় গ্রাম-
মেঝেতে বিছানা করে সারারাত পাঠ করি
শহরের পাখিদের নাম।
** একটি প্রেমের কবিতা
বিনয়কে নিয়ে আজ একটা লেখা তৈরি করা যায়,
খাবে ভালো, বাজারি লোকদের কাছে নামটা ওর
দিনপঞ্জিকার মতো। পঁচিশ বছর লিখেও এতটা নাম করা
যায় না। বিনয় কর্মকার, তোমাকে ভীষণ দরকার।
ফ্লাশব্যাক
বিনয়কে দেখা যাবে বটতলার নিচে, সকাল সাতটায়
তার মুখে-পৃথিবীর মুখগুলো ভাসিয়া বেড়ায়
বিনয়কে যাবে না পাওয়া, রাত বারোটায়
তখন সে চাঁদকোলে ঘুমঘোর যায়
পলিথিন ব্যাগে কাতলা মাছটার সাদা বুকে রোদ লেগে
চিক্ চিক্্ করে উঠলেই সে বুঝতে পারে, এই বাবুর
অবশ্যই দরকার আছে। মাত্র দেড় টাকায় বিনয়কে
পাশে পাওয়া যায়। আজকাল যদিও আগের মতো
নয়, যতটা বাহাত্তরেও ছিল। রিকশা-ভ্যান আর মালগাড়ি
বিনয়কে বিভক্ত করেছে। একচেটিয়া কারবার আর নেই,
তার উপর মেয়ে দুটো ডাঙ্গর হয়েছে। বউটার শাড়ি আছে তো
ব্লাউজ ছিঁড়েছে। একটা হুইল সাবান চা-ই চাই,
দু’টাকার নারিকেল তেল, একটু সুগন্ধ
না হলে কি পাশে শোয়া যায়...
কাটস্ল্যাপ
হাড্ডিসার বিনয় কর্মকার, দ্রুত হাত রাখে বস্তায়
পায়ে হাঁটা গাড়ি যত তাড়াতাড়ি পৌঁছানো যায়
একটা শ্রমিক-বিড়ির পথ-বিড়িটা মাগনা খায়
রোদেপোড়া আর বৃষ্টি ভেজা বিনয়
পথের মধ্যে খালি ব্যাগ হাতে
ছোট মেয়েটা দাঁড়াবে ঠিক বারোটায়;
পথ যত হোক, বিনয়ের গাড়ি দ্রুত চলে যায়
দুপুর গড়াতে থাকে, তার ভার কমে-গোলার
দীঘিতে আরও কিছু আলগা হয়ে যাওয়া সন্ধ্যায়
বউয়ের প্রতীক্ষা কাঁসার প্লেটে
সাদা ভাতের মতো জড়ো হয়;
বিনয়কে নিয়ে একটা প্রেমের কবিতা লেখা যায়
গত রাতে তাদের দু’জনার ঘটনা সকল
বেওয়ারিশ করেছে নির্লজ্জ চাঁদ
অথচ এই ঘটনা একদিন প্রবাদিত হবে।
রানিংস্ল্যাপ
বারান্দাতে বিনয় ঘুমায়, ঘরের মধ্যে মেয়ে
বউয়ের মধ্যে ঘুমায় বিনয়
চাঁদের দিকে চেয়ে
এই রাত্রে আর কী কী লেখা যায়?
একদিন বিনয়ের হাড়গোড় খোঁজা হবে
আমাদের প্রত্নপাড়ায়।
শীর্ষ সংবাদ: