ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

খালেদার মুক্তি দাবিতে ঢাকায় বিএনপির ঝটিকা মিছিল

প্রকাশিত: ১০:২৪, ৩ ডিসেম্বর ২০১৯

  খালেদার মুক্তি দাবিতে ঢাকায় বিএনপির ঝটিকা মিছিল

স্টাফ রিপোর্টার ॥ কারাবন্দী বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবিতে রাজধানীতে ঝটিকা মিছিল করেছে বিএনপি। সোমবার কলাবাগান বাসস্ট্যান্ড থেকে শুরু করে মিছিলটি ল্যাবএইড হাসপাতালের কাছে গিয়ে শেষ হয়। দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর নেতৃত্বে অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা এতে অংশগ্রহণ করেন। এ সময় খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানান তারা। বিক্ষোভ মিছিল শেষে রুহুল কবির রিজভী বলেন, খালেদা জিয়ার শারীরিক অসুস্থতা ক্রমান্বয়ে অবনতির দিকে যাচ্ছে। সরকার তার চিকিৎসা দেয়ার নামে নানা টালবাহানা করছে। বিশেষায়িত হাসপাতালে চিকিৎসার দাবি উপেক্ষা করা হয়েছে। শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি হওয়া সত্ত্বেও সরকারের পক্ষ থেকে সুস্থ আছেন বলে জনগণকে ধোঁকা দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে বলেন, খালেদা জিয়াকে বন্দী করে বিনা চিকিৎসায় আপনি অমানবিক কষ্ট দিচ্ছেন। এই নিষ্ঠুরতা বিশ্বের স্বৈরশাসকদের আচরণেরই সমতুল্য। আর কষ্ট না দিয়ে তার নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করে রিজভী বলেন, সরকার জনগণের পুঞ্জীভূত ক্রোধ আঁচ করতে পারছেন না বলেই মুক্তি নিয়ে টালবাহানা করছে। ফ্যাসিবাদী সরকারের লোহার খাঁচা ভেঙ্গে দেশনেত্রীকে মুক্ত করার জন্য জনগণ এখন চূড়ান্ত প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। মিছিলে অন্যদের মধ্যে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবু আশফাক, নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সহসভাপতি মাহমুদুর রহমান সুমন, পশ্চিম ছাত্রদল নেতা কামরুজ্জামান জুয়েল এবং যুবদল নেতা সোহেল অংশ নেন। খালেদা জিয়ার নির্ভুল স্বাস্থ্য প্রতিবেদন দেয়ার দাবি মির্জা আব্বাসের এদিকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস আগামী ৫ ডিসেম্বর বেগম খালেদা জিয়ার নির্ভুল স্বাস্থ্য প্রতিবেদন দেয়ার দাবি জানিয়েছেন। সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবে একটি অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে তিনে বলেন, খালেদা জিয়া অসুস্থ। তার সঙ্গে কাউকে এখন আর দেখা করতে দেয়া হচ্ছে না। সন্দেহ হচ্ছে, তাকে চিকিৎসার নামে অপচিকিৎসা করা হচ্ছে কিনা ক্ষতি করার জন্য। খালেদা জিয়ার ক্ষতি হলে তার হিসাব জনগণ পাই পাই করে নেবেন। তিনি খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার সঠিক চিত্র তুলে ধরার দাবি জানিয়ে বলেন, আগামী ৫ তারিখে বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য প্রতিবেদন সুপ্রীমকোর্টে উপস্থাপন করা হবে। চাই এই প্রতিবেদন যে অবস্থায় আছে সেই অবস্থায় উপস্থাপন করা হোক। অবিকৃত অবস্থায় উপস্থাপন করা হোক। পরিবর্তন যেন না করা হয়। তাহলেই দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের প্রকৃত অবস্থা জানা যাবে। তিনি বলেন, বিএনপির কর্মীদের গ্রেফতারের ভয় দেখিয়ে লাভ নেই। আমাদের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে এখন মামলার সংখ্যা ৩৫ লাখ। ৩৫ লাখ নেতাকর্মী গ্রেফতার হওয়ার জন্য প্রস্তুত। তাদের বাবা-মা-ভাই ও বোনরাও রয়েছেন। আওয়ামী লীগের সতর্ক হওয়া উচিত। বাংলাদেশের কোটি কোটি বিএনপির সমর্থক এবং জনগণ ক্ষিপ্ত হয়ে রয়েছে। কখন কী হবে বুঝতে পারছেন না। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে পুলিশ ছাড়া রাজপথে নামার চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বলেন, বিএনপি আন্দোলনে নামার আগেই তো আপনারা ভয় পেয়ে গেছেন। গ্রেফতার শুরু করেছেন। দাঁত ভাঙ্গা জবাব দেয়ার জন্য কামড় দেয়ার সেই দাঁতগুলো আছে? আমি চ্যালেঞ্জ করে বলে দিতে চাই, আওয়ামী লীগের ছোট্ট একটি মটরশুঁটি কামড় দেয়ার যোগ্যতাও নেই। আওয়ামী লীগের পেটোয়া বাহিনীর পুলিশ-র‌্যাব-বিজিবি ছাড়া এক মিনিটও ক্ষমতায় থাকার ক্ষমতা নেই। গ্রেফতারের ভয়ে বিএনপির নেতাকর্মীরা গর্তে লুকিয়ে থাকে না। আমাদের ভয়ের কিছু নেই। পুলিশ ছাড়া আপনাদের ক্ষমতায় থাকার কোন উপায় নেই। দল দিয়ে টিকে থাকবে, সেই দল আওয়ামী লীগ এখন আর নেই। শেখ মুজিবের আমলে যে আওয়ামী লীগ ছিল, সেই আওয়ামী লীগের কথা এখন আপনারা ভুলে যান; সেই আওয়ামী লীগকে আপনারা অনেক আগেই কবর দিয়েছেন। সেই আওয়ামী লীগকে আজকের আওয়ামী লীগ খেয়ে ফেলেছে। পুলিশ ছাড়া রাজপথে আসেন বলে উল্লেখ করেন। বরিশাল গৌরনদী উপজেলা ও পৌর বিএনপি এবং আগৈলঝাড়া উপজেলা বিএনপির উদ্যোগে আয়োজিত এক প্রতিবাদ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমান, যুগ্ম মহাসচিব এ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, পল্লী উন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদক এ্যাডভোকেট গৌতম চক্রবর্তী ও কৃষকদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য লায়ন মিয়া মোহাম্মদ আনোয়ার।
×