শামসুর রাহমান কবি। শামসুর রাহমান সাংবাদিক। ছোটদের কাছে তাঁর আরেকটি পরিচয় আছে-- ছড়াকার। ছোটদের জন্য চমৎকার সব ছড়া লিখেছেন তিনি। তাঁর জন্মদিন ১৯২৯ সালের ২৩ অক্টোবর। তিনি ২০০৬ সালের ১৭ আগস্ট মারা যান। চলো বন্ধুরা তাঁর কয়েকটি ছড়া পড়ি -
*
চরকাবুড়ি
চরকাবুড়ি চরকাবুড়ি চাঁদের ঘরে ব’সে
মেঘের পেঁজা তুলো নিয়ে চরকা ঘোরাও কষে।
নেই পাজামা, নেইকো জামা গোটা শহরটায়,
চাঁদের ঘরে কী করে যাই আজকে আদুল গায়?
চরকাবুড়ি টুকটুকে লাল একটা জামা দিয়ো,
তার বদলে শুকনো গালে হাজার চুমো নিয়ো।
*
ট্রেন
ঝক ঝক ঝক ট্রেন চলেছে
রাত দুপুরে অই।
ট্রেন চলেছে, ট্রেন চলেছে
ট্রেনের বাড়ি কই?
একটু জিরোয়, ফের ছুটে যায়
মাঠ পেরুলেই বন।
পুলের ওপর বাজনা বাজে
ঝন ঝনাঝন ঝন।
দেশ-বিদেশে বেড়ায় ঘুরে
নেইকো ঘোরার শেষ।
ইচ্ছে হলেই বাজায় বাঁশি,
দিন কেটে যায় বেশ।
থামবে হঠাৎ মজার গাড়ি
একটু কেশে খক।
আমায় নিয়ে ছুটবে আবার
ঝক ঝকাঝক ঝক।
*
খোকন সোনা দোলে
চাঁদ দোলে সুয্যি দোলে,
দোলে নদীর জল।
দোলে আমার খোকন সোনা,
দোলে হীরের ফল।
সোনার গাছে ডাকছে ব’সে
কোন সে পাখি বল?
হীরামনের মিতা বুঝি
নামায় সুরের ঢল।
চাঁদ দোলে সুয্যি দোলে
দোলে ফুলের দল।
জোছনা-দড়ির দোলনা দোলে,
দেখবি সবাই চল।
*
খোকন গেছে ক্ষীরসাগরে
আলুর পাতা আলুথালু বেগুন পাতায় দই,
সাতটা কাকে খেয়ে গেল, খোকন গেল কই?
খোকন গেছে পাঠশালাতে লাল গামছা গায়,
বইগুলো সব রইল পড়ে বুড়ো বটের ছায়,
খোকন গেছে ক্ষীরসাগরে ময়ূরপঙ্খি নায়।
*
আঁটুল বাঁটুল ছড়া
আঁটুল বাঁটুল শামলা সাঁটুল, শামলা গেছে হাটে।
কুঁচবরণ কন্যা যিনি, তিনি ঘুমান খাটে।
খাট নিয়েছে বোয়াল মাছে, কন্যে বসে কাঁদে,
ঘটি বাটি সব নিয়েছে, কিসে তবে রাঁধে?
আর কেঁদো না, আর কেঁদো না, ছোলা ভাজা খেয়ো,
মাটির ওপর মাদুর পেতে ঘুমের বাড়ি যেয়ো।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: