ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ইরানের সঙ্গে যুদ্ধ এড়াতে চাই

প্রকাশিত: ০৯:১১, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯

ইরানের সঙ্গে যুদ্ধ এড়াতে চাই

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ইরানের সঙ্গে যুদ্ধ এড়াতে চায় যুক্তরাষ্ট্র। তিনি আরও বলেন, সৌদি আরবের তেল শোধনাগারে হামলার পেছনে ইরানের হাত রয়েছে বলে নিশ্চিতভাবেই মনে হচ্ছে। কিন্তু সুনির্দিষ্ট প্রমাণ চায় যুক্তরাষ্ট্র। এদিকে মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টনের বরখাস্ত সম্পর্কে ইরান বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রের উচিত বাগযুদ্ধ এড়িয়ে চলা। আলজাজিরা। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সোমবার বলেছেন, সৌদি আরবের তেল স্থাপনায় শনিবারের হামলার জন্য ইরান দায়ী বলেই মনে হচ্ছে। কিন্তু তিনি যুদ্ধ এড়িয়ে চলতে চান। ইরান হামলা করেছে বলে তিনি বিশ্বাস করেন কি নাÑ এমন প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, ‘এই মুহূর্তে নিশ্চিতভাবে সেটাই মনে হচ্ছে।’ এ বিষয়ে কোন তথ্যপ্রমাণ উপস্থাপন না করতে পারলেও ট্রাম্প বলেন, আমরা ইতোমধ্যে জেনেছি এবং নিশ্চিতভাবেই মনে হচ্ছে এটা ইরানের কাজ। কিন্তু আরও প্রমাণ চায় ওয়াশিংটন। ওভাল অফিসে ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা সুনির্দিষ্টভাবে খুঁজে বের করতে চাই কারা এ হামলা চালিয়েছে।’ এই ওভাল অফিসেই বাহরাইনের যুবরাজ সালমান বিন হামাদ বিন ঈসা আল-খলিফার সঙ্গে বৈঠক করছিলেন ট্রাম্প। তিনি বলেন, ‘শীঘ্রই এ বিষয়ে সবিস্তারে জানতে পারবেন। সবকিছুর সঠিক অবস্থান আমাদের কাছে আছে।’ তিনি বলেন, ‘যা বলা হয়েছে, আমরা নিশ্চিতভাবেই যুদ্ধ এড়াতে চাই। আমি কারও সঙ্গে যুদ্ধ চাই না। তবে যে কারও চেয়ে বেশি প্রস্তুত আছি আমরা। সৌদি আরবের প্রধান দুটি তেলক্ষেত্রে শনিবার ভোরে হামলার জন্য ইরানকে দোষারোপ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। তবে হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছে তেহরান। ওই হামলার ফলে বিশ্বের মোট অপরিশোধিত তেল উৎপাদন পাঁচ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। ইরান সমর্থিত ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীরা এই হামলার দায় স্বীকার করেছে। এই হুতি বিদ্রোহীরা ২০১৫ সাল থেকে সৌদি নেতৃত্বাধীন বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে আসছে। তারা সৌদি আরবকে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছে, তাদের হামলা অব্যাহত থাকবে। সৌদি আরবের সামরিক বাহিনীর এক মুখপাত্র সোমবার বলেন, প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, হামলায় ইরানের অস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে। হামলার পেছনে ইরানের হাত রয়েছে অভিযোগ অস্বীকার করে তেহরান জানায়, ইরানের বিরুদ্ধে নেয়া পদক্ষেপ বৈধ করতেই এসব অভিযোগ করা হচ্ছে। মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী মার্ক এসপার সোমবার সকালে বলেন, এই হামলা নজিরবিহীন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ মিত্র দেশগুলো আন্তর্জাতিক আইন সুরক্ষায় কাজ করছে। সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে টেলিফোনে আলাপকালে প্রতিরক্ষামন্ত্রী মার্ক এসপার বলেন, হামলার জবাব কিভাবে দেয়া যায়, সে বিষয়ে সব ধরনের বিকল্প পর্যালোচনা করছে যুক্তরাষ্ট্র। রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা এসপিএ জানায়, হামলার পর সৌদি আরবের প্রতি পূর্ণ সমর্থন ব্যক্ত করেছেন এসপার। ট্রাম্প রবিবার বলেন, যুক্তরাষ্ট্র তদন্ত করতে রাজি নয়। কিন্তু সৌদির কাছ থেকে শুনতে চায়, কারা এই হামলার পেছনে জড়িত বলে তারা বিশ্বাস করে। তবে তাৎক্ষণিক সামরিক অভিযানের বিষয়ে সতর্কতা উচ্চারণ করেছে কংগ্রেস। কংগ্রেস সদস্যরা ইরানকে ব্যাপক তিরস্কার করেন। তবে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক পদক্ষেপের বিষয়ে সতর্কতা উচ্চারণ করেন। বিশেষ করে শনিবারের হামলার পেছনে কারা জড়িত সেটা নিশ্চিত হওয়ার আগে সামরিক পদক্ষেপের বিষয়ে সতর্কতা উচ্চারণ করেন তারা। ট্রাম্পের অনুসারী রিপাবলিকানরা তেহরানকে তড়িঘড়ি করে দোষারোপ করেন। মার্কিন সিনেটের সংখ্যাগরিষ্ঠ নেতা মিচ ম্যাককনেল এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সাড়া দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। অনেক কংগ্রেস সদস্য প্রত্যয় ব্যক্ত করে বলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের যুদ্ধ ঘোষণা করার অধিকার নেই, এ অধিকার রয়েছে কংগ্রেসের। তারা দ্রুততার সঙ্গে যেকোন সামরিক অভিযানের বিরুদ্ধে সতর্কতা উচ্চারণ করেন।
×