ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

অভিযোগ মেয়র আতিকের

পরিচ্ছন্নতা অভিযানে সহযোগিতা পাওয়া যাচ্ছে না

প্রকাশিত: ১০:১৬, ২৭ আগস্ট ২০১৯

 পরিচ্ছন্নতা অভিযানে সহযোগিতা পাওয়া যাচ্ছে না

স্টাফ রিপোর্টার ॥ রাজধানীতে এডিস মশার প্রজননস্থল ধ্বংস করতে চলমান পরিচ্ছন্নতা তথা চিরুনি অভিযানে বাড়ির মালিকদের সঠিক সহযোগিতা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেছেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মোঃ আতিকুল ইসলাম। একইসঙ্গে কোন ব্যক্তি নিজ বাসস্থান ও কর্মস্থল পরিষ্কার না রাখলে জরিমানার পাশাপাশি আইনের আশ্রয় নেয়া হবে বলেও জানান। সোমবার রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকায় ডেঙ্গু দমনে চিরুনি অভিযান পরিচালনার সময় তিনি এসব কথা বলেন। এদিকে একইদিনে অপর এক অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুর মতো করে দেশকে ভালবাসার আহ্বান জানিয়েছেন ডিএনসিসি মেয়র। রাজধানীর বনানীতে ফারইস্ট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি আয়োজিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৪তম শাহাদাতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আলোচনা ও রক্তদান কর্মসূচী অনুষ্ঠানে মেয়র এসব কথা বলেন। পরিচ্ছন্নতা অনুষ্ঠানে মেয়র বলেন, এডিস মশা নিধনে সিটি কর্পোরেশনের অভিযানে রাস্তা ও আশপাশের এলাকা পরিষ্কারের পর আবারও সেসব জায়গায় ময়লা ফেলা হচ্ছে। নাগরিকদের উদ্দেশে মেয়র বলেন, আমরা বলেছি, সরকারী কাজে বাধা দিলে আমরা পেনাল কোডে যাব, আইন অনুযায়ী যেতে বাধ্য হব। আমি শুধু বলব, আমাদের বাধ্য করবেন না। সকালে আমরা পরিষ্কার করার পরপরই আবার দোকান খুলে ময়লা বাইরে ফেলে দেয়া হয়, বাসা-বাড়ি থেকে রাস্তায় ময়লা ফেলা হয়। তিনি বলেন, পরিষ্কার করার দায়িত্ব শুধু সরকারের না, জনগণেরও আছে। নিজের বাড়ির ময়লা নিজেরাই পরিষ্কার করুন। যার যার দায়িত্ব সবাইকে পালন করতে হবে। আমাদের সিটি কর্পোরেশনের দায়িত্ব আছে, সেটা আমরা পালন করছি। এ সময় দুই বাড়ির মাঝখানের ময়লা পরিষ্কারের জন্য এলাকাবাসীর সহযোগিতা চান মেয়র। আতিকুল ইসলাম বলেন, গতকাল (রবিবার) চিরুনি অভিযানে ১০ হাজার বাড়িতে অভিযান করার টার্গেট ছিল। আমরা ৯ হাজার ৭০০ বাড়িতে গিয়েছি। ২৫২ বাড়িতে আমরা লার্ভা পেয়েছি। এই অভিযান ২০ দিন চলবে। এ সময় মেয়র নূরজাহান রোডের মালিকদের উদ্দেশে বলেন, দুই বাড়ির ময়লা এ বারের মতো ডিএনসিসির পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা পরিষ্কার করে দিচ্ছে। তবে ভবিষ্যতে কমিউনিটির লোকজনকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে। বাসার বাইরে কোনভাবেই ময়লা ফেলা ঠিক নয়। বাড়ির মালিক ও সোসাইটিগুলোকে এ বিষয়ে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। মেয়র বলেন, নিজস্ব স্থাপনার ভেতরে এডিস মশা যাতে বংশবিস্তার করতে না পারে সেজন্য মেট্রোরেলসহ সব প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষকে আহ্বান জানাচ্ছি। এ সময় ডিএনসিসির ২৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম রতন, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা ক্যাপ্টেন মনসুর হোসেন, অঞ্চল-৫ এর নিবার্হী কর্মকর্তা মাসুদ হোসেন, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মৌসুমী বাইন হীরা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। বনানীর শোক দিবসের অনুষ্ঠানে মেয়র বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশকে যে পরিমাণ ভালবাসতেন তার কিয়দাংশও যদি আমরা বাসতে পারি তবেই বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়া সম্ভব। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু সারাজীবন দেশের জন্য, দেশের মানুষের জন্য কাজ করেছেন, এই দেশকে, দেশের মানুষকে ভালবেসে, দেশের জন্য জেল খেটেছেন, এমনকি নিজের জীবন দিতেও পিছু পা হননি। কিন্তু ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট আমরা সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হারিয়েছি। মহান আল্লাহ যেন বঙ্গবন্ধুসহ ১৫ আগস্ট নিহত তাঁর পরিবারের সকল সদস্য ও অন্যদের জান্নাতবাসী করেন। এদিকে ডিএনসিসির চলমান চিরুনি অভিযানের দ্বিতীয় দিনে সোমবার ৩৬ ওয়ার্ডের মোট ১০ হাজার ৭২০ বাড়ি ও স্থাপনা পরিদর্শন করে ২৯৮ বাড়ি ও স্থাপনায় এডিস মশার লার্ভা পাওয়া যায়। এসব বাড়ি ও স্থাপনায় এডিস মশার লার্ভা পাওয়া গিয়েছে লেখা স্টিকার লাগানো হয়। এ ছাড়া ৫ হাজার ১৩ বাড়ি ও স্থাপনায় এডিস মশার বংশবিস্তার উপযোগী স্থান বা জমে থাকা পানি পাওয়া যায়। এছাড়া এডিস মশার লার্ভা পাওয়ায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাজিদ আনোয়ার ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে গুলশানের এক্সিকিউটিভ ইন লিমিটেডকে ৩ লাখ টাকা এবং মিরাকি রেস্টুরেন্ট কে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। একই অপরাধে অঞ্চল-৩ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মীর নাহিদ আহসান গুলশানে শান্তা প্রোপার্টিজকে ১ লাখ টাকা, শাহজাদপুরে অনওয়ার্ড প্রোপার্টিজ’কে ৫০ হাজার টাকা ও একই এলাকার একটি ব্যক্তিগত নির্মাণাধীন ভবন মালিককে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন।
×