ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

তবলিগ বিবাদের আরেক বলি হাফেজ রহিম

প্রকাশিত: ১১:০৭, ১১ জুন ২০১৯

 তবলিগ বিবাদের আরেক বলি হাফেজ রহিম

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আবারও তবলিগ জামাতের বিতর্কিত অংশটির সহিংসতার বলি হলেন তবলিগের মূলধারার এক নিরীহ সাথী হাফেজ আবদুর রহিম রাজন (৩০)। জুবায়েরপন্থীদের দেয়া আগুনে দগ্ধ রহিম ২২ দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে সোমবার দুপুরে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় ব্যাপক অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়ে তবলিগ জামাতে শান্তিপ্রিয় সব মুসল্লিদের মাঝে। বার্ন ইউনিটের আবাসিক চিকিৎসক ডাঃ পার্থ শঙ্কর পাল জানান, রাজনের শরীরের পেছনের দিক ঘাড় থেকে কোমড় দু-হাতসহ মুখসহ ২৫ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে। শ্বাসনালী পুড়ে যাওয়ায় তাকে বাঁচানো যায়নি। নিহত আবদুর রহিমের মামা মামুনুর রশিদ জনকণ্ঠকে জানান, গত ১৯ মে রাতে কিশোরগঞ্জ জেলার কটিয়াদি থানার ৫০ গজ অদূরে কলা মহল দরগা জামে মসজিদে তারাবি নামাজের পরপর মসজিদের পাশ দিয়ে হাফেজ আবদুর রহিম রাজন হেঁটে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে জুবায়েরপন্থীর সমর্থক মুফতি ইসমাইল, সোহেল আহমদ, মাহমুদুল হাসান, সাবেক চেয়ারম্যান হাবিব, কাউছার আহমেদ, সোহেল, আরিফুল হক কলিসহ ৭-৮ তাকে ঘিরে ধরে। এক পর্যায়ে কয়েকজন লোকজন রহিমের গায়ে পেট্রোল দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। তার আর্তচিৎকারে স্থানীয় মুসল্লিরা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে কটিয়াদি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখান থেকে তাকে কিশোরগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানকার চিকিৎসকের পরামর্শে ওদিন রাতে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন এ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগে ভর্তি করা হয়। এ বিষয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কটিয়াদি থানার এসআই মঞ্জুর দোহা জানান, আবদুর রহিম রাজনকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টার ঘটনার পরই সোহেল আহমদ, মাহমুদুল হাসান, কাউছার আহমেদ ও সাবেক চেয়ারম্যান হাবিবকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। এসআই মঞ্জুর দোহা জানান, রাজন মারা যাওয়ায় মামলাটি হত্যা মামলা হিসেবে রূপান্তর করা হবে। এদিকে সোমবার রাত সাড়ে ৭টায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ মর্গে হাফেজ আবদুর রহিম রাজন লাশের ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এ সময় তার লাশ দেখতে শত শত তবলিগের মূলধারা সাথীরা মর্গে ভিড় জমান। এ পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় ব্যাপক অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়েছে তবলিগ জামাতে শান্তিপ্রিয় সব মুসল্লিদের মাঝে।
×