ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সহকর্মীদের শ্রদ্ধা ভালবাসায় মাহফুজ উল্লাহর চিরবিদায়

প্রকাশিত: ০৯:৪৬, ২৯ এপ্রিল ২০১৯

 সহকর্মীদের শ্রদ্ধা ভালবাসায় মাহফুজ উল্লাহর চিরবিদায়

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সহকর্মী ও বিশিষ্টজনদের শ্রদ্ধা-ভালবাসায় চিরবিদায় নিলেন প্রখ্যাত সাংবাদিক মাহফুজ উল্লাহ। রবিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এই বিশিষ্ট সাংবাদিকের জানাজায় অংশ নিয়ে তার সহকর্মী ও বিশিষ্টজনরা শ্রদ্ধা জানান। প্রেসক্লাবে জানাজা ও শ্রদ্ধাঞ্জলি পর্ব শেষে রাতে মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে তাকে সমাহিত করা হয়। এর আগে রাজধানীর গ্রীন রোডে তার বাসভবন সংলগ্ন মসজিদে প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। শনিবার থাইল্যান্ডের ব্যাঙ্ককের বামরুনগ্রাদ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান সাংবাদিক ও প্রাবন্ধিক মাহফুজ উল্লাহ। শনিবার রাতে মাহফুজ উল্লাহর মরদেহ ঢাকায় এসে পৌঁছে। এরপর তার মরদেহ স্কয়ার হাসপাতালের হিমাগারে সংরক্ষিত ছিল। সেখান থেকে সকালে মরদেহ নেয়া হয় গ্রীন রোডের বাসভবনে। সেখানে জানাজা শেষে মরদেহ নিয়ে আসা হয় জাতীয় প্রেসক্লাব চত্বরে। এখানে দ্বিতীয় দফা জানাজায় সাংবাদিক নেতৃবৃন্দের পাশাপাশি রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনের মানুষেরা অংশ নেন। মাহফুজ উল্লাহর জানাজায় অংশ নেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টাম-লীর সদস্য তোফায়েল আহমেদ এমপি, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ, নজরুল ইসলাম খান ও আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা গীতিকবি গাজী মাজহারুল আনোয়ার। জানাজায় আরও অংশ নেন ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য এমাজউদ্দিন আহমেদ, জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার, অধ্যাপক আসিফ নজরুল, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডাঃ জাফরুল্লাহ চৌধুরী, সাবেক পররাষ্ট্র সচিব শমসের মবিন চৌধুরী, গণসঙ্গীত শিল্পী ফকির আলমগীর প্রমুখ। সাংবাদিকদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অবজারভার সম্পাদক ইকবাল সোবহান চৌধুরী, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি রিয়াজউদ্দিন আহমেদ, মুহম্মদ শফিকুর রহমান এমপি ও কামাল উদ্দিন সবুজ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক কামাল উদ্দিন, সৈয়দ আবদাল আহমেদ বিএফইউজের সাবেক সভাপতি মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল, মানবজমিনের প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী প্রমুখ। উপস্থিত ছিলেন জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি সাইফুল আলম ও সাধারণ সম্পদক ফরিদা ইয়াসমিন। জানাজা ও শ্রদ্ধাজ্ঞাপন অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন জাতীয় প্রেস ক্লাবের যুগ্ম সম্পাদক শাহেদ চৌধুরী। তোফায়েল আহমেদ বলেন, তার সঙ্গে মত ও দলের পার্থক্য থাকলেও সামাজিক একটি সম্পর্ক ছিল। ঊনসত্তরের গণঅভুত্থানে তার ভূমিকা ছিল। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, তিনি ছিলেন একজন রাজনীতি সচেতন মানুষ। তিনি ন্যায় ও নীতি নিয়ে পথ চলেছেন, কথা বলেছেন। পরিবারের পক্ষে মাহফুজ উল্লাহর একমাত্র ছেলে মোস্তফা হাবিব বলেন, আমার বাবা ইচ্ছা করে কারও মনে কোন কষ্ট দেননি। তারপরও কেউ কষ্ট পেয়ে থাকলে তাকে ক্ষমা করে দিয়ে তার জন্য দোয়া করবেন। মুহম্মদ শফিকুর রহমান বলেন, তার সঙ্গে নানা বিষয়ে তর্ক-বিতর্ক হতো। কিন্ত কখনই তা তিক্ততায় পরিণত হয়নি। ইকবাল সোবহান চৌধুরী বলেন, তিনি তার নীতি-আদর্শ ও রাজনীতির বিশ্বাসে অটল ছিলেন। সে সঙ্গে সাংবাদিকতার প্রতি আন্তরিকতা, নিষ্ঠা ও সততার প্রমাণ রেখেছেন। মতিউর রহমান চৌধুরী বলেন, তিনি একজন যুক্তিবাদী মানুষ ছিলেন। যে মতেই তিনি বিশ্বাস করতেন না কেন, তা যুক্তি দিয়েই বিশ্বাস করতেন। ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, তিনি সাংবাদিকদের অভিভাবক ছিলেন। তিনি শুধু মেধাবী সাংবাদিকই ছিলেন না, একজন রাজনৈতিক কর্মী, পরিবেশন আন্দোলনকারীও ছিলেন। জানাজা শেষে বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠন, সামাজিক-সাংস্কৃতিক-রাজনৈতিক সংগঠন মাহফুজ উল্লাহর প্রতি ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানায়। আগামী ১ মে বাদ আছর জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে মাহফুজ উল্লাহর কুলখানি ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে।
×