ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

রাকিবুল হাসান

‘বিমূর্ত মুক্তিযুদ্ধ’

প্রকাশিত: ০৭:০০, ৩০ ডিসেম্বর ২০১৮

‘বিমূর্ত মুক্তিযুদ্ধ’

বাঙালী জাতির ইতিহাস স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস। তারই মূর্ত প্রতীক ভাস্কর শ্যামল চৌধুরীর ‘বিমূর্ত মুক্তিযুদ্ধ’। বায়ান্ন থেকে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ পর্যন্ত মধ্যবর্তী সময়ে সংগঠিত সকল ঐতিহাসিক ঘটনাবলী বিভিন্ন প্রতীকীর মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে ভাস্কর্যটিতে। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) প্রধান ফটকের সামনে দাঁড়িয়ে রয়েছে ভাস্কর্যটি। ভাস্কর্যটি তিনটি অংশে বিভক্ত। প্রধান অংশটি ২৬ ফুট ব্যাসের একটি বৃত্তের ওপর অবস্থিত যা ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসের প্রতীকী নির্দেশ করে। এর উপরেই ২১ ফুট ব্যাসের বৃত্তটি বায়ান্নর ভাষা অন্দোলনের ২১ ফেব্রুয়ারিকে নির্দেশ করে। এর উপরে ১১ ফুট ব্যাসের বৃত্তটি একটি ৭ ফুট উচ্চতার হাতের উপর অবস্থিত যেখানে বৃত্তটি ঐতিহাসিক ১১ দফার প্রতীকী নির্দেশ করে এবং হাতটি বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ এবং একই সঙ্গে স্বাধীনতার ৭ বীরশ্রেষ্ঠের প্রতীকী নির্দেশ করে। এর উপরে রয়েছে মোট সাতটি উর্ধমুখী তীর্যক এবং একটি চক্রাকার হুইল। যেখানে উর্ধমুখী ৬টি তীর্যক স্বাধীনতার মুক্তি সনদ ৬ দফা এবং সপ্তম ১৬ ফুট উচ্চতার তীর্যকটি ১৬ ডিসেম্বরের প্রতীকী নির্দেশ করে। এরপর চক্রাকার হুইলটি সামনে চলার অঙ্গীকারের প্রতীক এবং এর ভিতরে থাকা লাল বৃত্তের মাঝে বাংলাদেশের মানচিত্রটি মুক্তিযুদ্ধকালীন বাংলাদেশের পতাকার নির্দেশ করে। সবার উপরে রয়েছে উড্ডয়মান ৪টি শ্বেত শুভ্র পায়রা যা সংবিধানের মূল ৪ স্তম্ভের প্রতীকী নির্দেশ করে। স্মারকটির দ্বিতীয় অংশে রয়েছে বায়ান্ন থেকে একাত্তরের সমগ্র ইতিহাসের মূল মহানায়ক জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানের আবক্ষ ভাস্কর্য। সর্বশেষ অংশে রয়েছে ২টি বেষ্টনী। প্রথম বেষ্টনীতে পুরো স্তম্ভটি ৭১ ফুট সমবাহু ত্রিভূজের মধ্যে আবদ্ধ যা একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধকে নির্দেশ করে। এর পরে রয়েছে আরও একটি ত্রিকোনাকার বেষ্টনী যার দৈর্ঘ (৯০ী৩) ফুট অর্থাৎ মোট ২৭০ ফুট যা মুক্তিযুদ্ধের নয় মাস (৯ী৩০) মোট ২৭০ দিনের নির্দেশক। বেষ্টনীর ঢেউ আকৃতি দৃঢ় পদে সামনে চলার প্রতীক এবং বেয়নেট আকৃতি মুক্তিযুদ্ধে ব্যবহৃত বেয়োনেটের প্রতীকী নির্দেশ করে। ভাস্কর্যে ফুটে ওঠা বাঙালীর এসব সংগ্রামের, স্বাধীনতার প্রতীকীগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী, তরূন প্রজন্মসহ অসংখ্য বাঙালীর প্রেরণার উৎস।
×