ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

সাফ ফুটবলের দল গঠনে কাদের প্রাধান্য দেবেন কোচ জেমি?

প্রকাশিত: ০৬:০৭, ৩১ আগস্ট ২০১৮

সাফ ফুটবলের দল গঠনে কাদের প্রাধান্য দেবেন কোচ জেমি?

স্পোর্টস রিপোর্টার, নীলফামারী থেকে ফিরে ॥ নীলফামারী জেলাকে বলা হয় ‘নীলের দেশ’। এই জেলার সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও ভূ-সংস্থান বেশ সমৃদ্ধ যা অন্যান্য জেলা থেকে এই জেলাকে কিছুটা হলেও আলাদা করেছে। দু শ’ বছর আগে এ অঞ্চলে নীল চাষের খামার স্থাপন করে ইংরেজ নীলকররা। এ অঞ্চলের উর্বর ভূমি নীল চাষের অনুকূল হওয়ায় দেশের অন্যান্য এলাকার তুলনায় নীলফামারীতে বেশি সংখ্যায় নীলকুঠি ও নীল খামার গড়ে ওঠে। ধারণা করা হয়Ñ স্থানীয় কৃষকদের মুখে ‘নীল খামার’ রূপান্তরিত হয় ‘নীল খামারি’তে। আর এই নীলখামারির অপভ্রংশ হিসেবে উদ্ভব হয় নীলফামারি নামের। আর এই নীলফামারির শেখ কামাল স্টেডিয়ামেই ২৯ আগস্ট অনুষ্ঠিত হয় প্রথম কোন ফিফা ফ্রেন্ডলি ম্যাচ। যাতে স্বাগতিক বাংলাদেশকে ১-০ গোলে হারিয়ে দেয় সফরকারী দল শ্রীলঙ্কা। এর আগে যুব দলের হয়ে এশিয়ান গেমস ফুটবলে ডাগআউটে দাঁড়ালেও সিনিয়র জাতীয় দলের হয়ে এই ম্যাচ দিয়েই অভিষেক হলো বাংলাদেশের ব্রিটিশ কোচ জেমি ডে’র। কোন সন্দেহ নেই, অভিষেকটা সুখকর হয়নি তার। দলের হারে তিনি হতাশ। বিশেষ করে আক্রমণভাগ নিয়ে। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমাদের দলের কয়েকজন তরুণ খেলোয়াড় এশিয়ান গেমস খেলে আসায় ক্লান্ত ছিল। সাফ টুর্নামেন্টের জন্য আমি আরও ভাল দল গড়ব। আমাদের কয়েকটি জায়গায় উন্নতি করতে হবে। বিশেষ করে স্ট্রাইকিং জোনে।’ এশিয়ান গেমসে ক’দিন আগে শক্তিশালী কাতারকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো নকআউট পর্বে উঠে ইতিহাস গড়েছিল বাংলাদেশ। এতে দেশের ফুটবলপ্রেমীরা হয়ে উঠেছিলেন আশান্বিত। কিন্তু লঙ্কানদের কাছে হেরে সেই আশার বেলুন গেছে চুপসে। প্রশ্ন উঠেছেÑ কোচ জেমি’র এই দল নিয়ে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে শিরোপা জেতার সামর্র্থ্য আছে কি না? মজার ব্যাপারÑ শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ম্যাচে জেমি এমন তিন ফুটবলারকে খেলিয়েছেন, যারা এশিয়ান গেমসের দলেই ছিলেন না। এরা হলেন : গোলরক্ষক শহীদুল আলম সোহেল (যার ভুলেই গোল হজম করে লঙ্কার কাছে হেরেছে বাংলাদেশ), মিডফিল্ডার জুয়েল রানা এবং স্ট্রাইকার নাবীব নেওয়াজ জীবন। শেষের দু’জনের ফিটনেস যে ছিল না তা তাদের খেলা দেখেই বোঝা গেছে। ফুটবলপ্রেমীদের ভাষ্য হচ্ছেÑ সাফের মতো আসরে এ রকম সিনিয়রদের নিয়ে দল গড়লে কোচ জেমি বিরাট ভুল করবেন। তার উচিত হবে এশিয়ান গেমসের দলটাকেই সাফ ফুটবলে খেলানো। এসব সিনিয়রকে নিয়ে আর চলে না। তবে ব্যতিক্রম জামাল ভুঁইয়া। জেমি অবশ্য সাফের জন্য ২০ সদস্যের দল চূড়ান্ত করতে আরও সময় নিতে চাচ্ছেন, ‘আরও ৪৮ ঘণ্টা দেখব আমি। তারপর দল চূড়ান্ত হবে। তবে ২০ সদস্যের দল চূড়ান্ত করা সহজ হবে না। শ্রীলঙ্কা ম্যাচের পর অবশ্য সবার পারফর্মেন্স দেখা হয়েছে। এখন শেষ সময়টুকুর অপেক্ষা।’ জেমি আরও বলেন, ‘সিনিয়র কিংবা জুনিয়র যারাই থাকুক না কেন, সেরা একাদশ বাছাই করতে হবে যারা ম্যাচ জিততে পারবে। আমিও চাই এমন একটি দল যারা একটি টিম হয়ে খেলতে পারবে। এশিয়ান গেমসেও যেমন ভাল হয়েছে। ঠিক সেভাবে সাফে ভাল করতে চাই।’ নীলফামারীতে নীল চাষ নয়, বাংলাদেশ দল গিয়েছিল ‘গোল-চাষ’ করতে। কিন্তু উল্টো গোল হজম করে সাফের আগে বাজে প্রস্তুতি সেরে রাখায় আসন্ন সাফে তারা কতটা ভাল ফল করবে তা নিয়ে সংশয় থেকেই যাচ্ছে। এখন দেখার বিষয়Ñ সাফের চূড়ান্ত দল গঠন করতে গিয়ে জেমি সিনিয়রদের চেয়ে কতটা বেশি প্রাধান্য দেন জুনিয়র ফুটবলারদের।
×