ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

শেষ হলো বিজ্ঞান মেলা

খুদে বিজ্ঞানীদের দারুণ সব উদ্ভাবন, সম্ভাবনাময় আগামী

প্রকাশিত: ০৬:০৪, ২৭ জুন ২০১৮

খুদে বিজ্ঞানীদের দারুণ সব উদ্ভাবন, সম্ভাবনাময় আগামী

মোরসালিন মিজান ॥ কোন যুগান্তকারী উদ্ভাবন নয়। বড় কা- কেউ ঘটিয়ে ফেলেনি। উপস্থাপন করা প্রকল্প নিয়ে হুলস্থুল হয়েছে বলেও শোনা যায়নি কোথাও। তাতে কী? জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মেলার স্বতন্ত্র আবেদন। এ আবেদনের কারণেই আগারগাঁওয়ে ছুটে এসেছিলেন বিজ্ঞান মনস্করা। তিনদিনের মেলায় খুদে বিজ্ঞানীরা নিজেদের দারুণ সব আবিষ্কার তুলে ধরে। গত রবিবার শুরু হওয়া মেলা মঙ্গলবার শেষ হয়েছে। হ্যাঁ, তাৎক্ষণিক পাওয়া সামান্য। তবে ভবিষ্যতের সোপান তৈরিতে এ মেলা বড় ভূমিকা রাখবে বলেই আশা। বিজ্ঞান মনস্ক প্রজন্ম গড়া জরুরী। এই জরুরী কাজ এগিয়ে নিতে ‘মেধাই সম্পদ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিই ভবিষ্যত’ স্লোগানে মেলার আয়োজন করে জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জাদুঘর। জাদুঘর ভবনে ৩৯তম জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মেলা চলে টানা তিনদিন। জাতীয় বিজ্ঞান অলিম্পিয়াড এবং জাতীয় বিজ্ঞান বিষয়ক কুইজ প্রতিযোগিতা নিয়ে ছিল ব্যাপক আগ্রহ উত্তেজনা। সারাদেশ থেকে আসা বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। জেলা পর্যায়ের জুনিয়র, সিনিয়র এবং বিশেষ গ্রুপে প্রথম স্থান অধিকারীরা নিজেদের অভিনব আবিষ্কার নিয়ে মেলায় আসে। গাইড, তরুণ ও অপেশাদার খুদে বিজ্ঞানীরা প্রকল্প উপস্থাপন করে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মেলায় মোট ১৯২টি প্রকল্প প্রদর্শন করা হয়। এছাড়া বিজ্ঞান অলিম্পিয়াডে ২৫৬ জন এবং বিজ্ঞান বিষয়ক কুইজ প্রতিযোগিতায় ৭২জন প্রতিযোগী অংশগ্রহণ করে। সুদুরের জেলা কক্সবাজার থেকে মেলায় এসেছিল রুবাইদা ও কিরণা চাকমা। কাউখালী ডিগ্রী কলেজের শিক্ষার্থীরা জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মেলায় বিদ্যুত সাশ্রয়ে তাদের উদ্ভাবিত নতুন কৌশল উপস্থাপন করে। তারা এমন একটি সেন্সর বোর্ড তৈরি করে যেখানে সূর্যের আলো পড়লে স্বয়ংক্রিয়ভাবেই ভাল্বের আলো নিভে যায়। সন্ধ্যা ঘনিয়ে এলে স্বয়ংক্রিয়ভাবেই জ্বলে উঠে বাতি। যথাসময়ে ভাল্ব জলা এবং নেভার কারণে বিদ্যুত অপচয় কমে। না, একটি দুটি নয়। বহু উদ্ভাবন। দেখে চমকিত না হয়ে পারা যায় না। অন্যান্য আয়োজনের মধ্যে ছিল সায়েন্স শো ও বিজ্ঞান বিষয়ক নাটকের প্রদর্শনী। মেলার দ্বিতীয় দিন সন্ধ্যায় সকলেই উপভোগ করেন সায়েন্স শো। শওকত লাভলী নির্দেশিত বিজ্ঞান বিষয়ক নাটকটিও ছিল উপভোগ্য। সমাপনী দিনে মঙ্গলবার ছিল পুরস্কার বিতরণী। এদিন বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেয়া হয়। পুরস্কার তুলে দেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান। এ সময় তিনি বলেন, সরকার বিজ্ঞানচর্চার মাধ্যমে বিজ্ঞানমনস্ক জাতি গঠন এবং বিজ্ঞানের উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এর অংশ হিসেবেই মেলাটির আয়োজন। অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের প্রশংসা করে তিনি বলেন, আমাদের দেশের ছেলেমেয়েরা অত্যন্ত মেধাবী। তারা বিজ্ঞান চর্চার মাধ্যমে, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে এ দেশকে বিশ্বের বুকে উন্নত দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করবে। মেলায় প্রদর্শিত প্রকল্পগুলোকে বাস্তবে কাজে লাগানোর জন্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সবধরনের সহায়তা দেয়া হবে বলেও জানান তিনি। অনুষ্ঠানে বিজ্ঞান জাদুঘরের মহাপরিচালক স্বপন কুমার রায় জানান, বিজ্ঞান জাদুঘর বর্তমানে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মেলার আয়োজন করে থাকে। আগামী বছর থেকে উদ্যোগটি ইউনিয়ন পর্যায়ে সম্প্রসারিত করা হবে। এভাবে তৃণমূলের শিক্ষার্থীদের বিজ্ঞান চর্চায় উৎসাহিত করা হবে বলে জানান তিনি।
×