ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

গাজীপুর সিটি নির্বাচন ইসি ও সরকারের জন্য এসিড টেস্ট ॥ মওদুদ

প্রকাশিত: ০৬:০৩, ২৪ জুন ২০১৮

গাজীপুর সিটি নির্বাচন ইসি ও সরকারের জন্য এসিড টেস্ট ॥ মওদুদ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন সরকার ও নির্বাচন কমিশনের (ইসি) জন্য এসিড টেস্ট বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ। শনিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসা ও জামিনের দাবিতে ‘ইয়ুথ ফোরাম’ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। খালেদা জিয়াকে একটা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন মামলায় সাজা দেয়া হয়েছে দাবি করে সরকারের উদ্দেশে মওদুদ বলেন, যতই আটকে রাখেন কোন লাভ হবে না। একদিন খালেদা জিয়াকে ছাড়তেই হবে। আমরা তাকে নিয়েই নির্বাচনে যাব। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হলে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বেই দেশে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে। তিনি বলেন, জুন মাস শেষ। ডিসেম্বর বাদ দিলে বাকি থাকে মাত্র চার মাস। আমি বিশ্বাস করি দেশের মানুষ আবার ঐক্যবদ্ধ হয়ে গণআন্দোলন করে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনবে। মওদুদ আহমদ বলেন, আমরা দেখব গাজীপুর সিটি নির্বাচনে তারা কি করে। খুলনার মতো যদি গাজীপুরে নির্বাচন হয় তবে তার পরিণতি হবে ভয়ঙ্কর। তাই গাজীপুর সিটি নির্বাচন দেখেই আমরা পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেব। এই নির্বাচনের পরে আমরা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেব রাজশাহী, বরিশাল ও সিলেট সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে অংশগ্রহণ করব কিনা। মওদুদ বলেন, তিন সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের জন্য আমরা মনোনয়ন দেব, সবকিছুই করব। কিন্তু গাজীপুরের নির্বাচন দেখেই পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেব। নির্বাচনের সময় খুব বেশি একটা নেই। সুতরাং এখন সময় এসেছে প্রতিরোধ গড়ে তোলার। অন্যায়, অত্যাচার, জুলুম, নির্যাতন, বিচারবহির্ভূত হত্যা ও মিথ্যা মামলা প্রতিহত করার শক্তি অর্জন করতে হবে। বর্তমান নির্বাচন কমিশনের ওপর আস্থা রাখা যায় না মন্তব্য করে মওদুদ বলেন, বিএনপি নেতা ও জাতীয় সংসদের সাবেক চীফ হুইপকে পেটানোর পরও গাজীপুরের এসপি হারুনের প্রমোশন হয়েছে। তাকে সরিয়ে দেয়ার দাবি করলেও নির্বাচন কমিশন সেটা করেনি। যে নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে একজন এসপিকে বদলি করতে পারে না, সে কমিশনের ওপর কিভাবে মানুষ আস্থা রাখবে। আওয়ামী লীগ আগামী জাতীয় নির্বাচন বানচালেরও ষড়যন্ত্র করতে পারে এমন অভিযোগ করে মওদুদ বলেন, এ ব্যাপারে আমাদের সজাগ থাকতে হবে। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতা হারাতে চাইবে না, হারালে তারা যে লাখ লাখ কোটি টাকা বানিয়েছেন, মানুষকে অত্যাচার-নির্যাতন করেছেন সবকিছু ধরা পড়ে যাবে। সেই ভয়ে তারা নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করতে পারে। ভোটারদের আস্থা অর্জনের কথা প্রধানমন্ত্রীর যথার্থ উপলব্ধি ॥ আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী ভোটারদের আস্থা অর্জনের যে কথা বলেছেন তা প্রধানমন্ত্রীর যথার্থ উপলব্ধি বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। শনিবার দুপুরে নয়াপল্টন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন। রিজভী বলেন, সরকারের প্রতি ভোটারের আস্থা শূন্যের কোটায়। তিনি বলেন, বিএনপি সমঝোতার মাধ্যমে গণতান্ত্রিক পদ্ধতি অব্যাহত রাখায় বিশ্বাসী। কিন্তু আওয়ামী নেতারা শোনে কম, বলে বেশি। আর বিএনপি নেতারা বলে কম, শোনে বেশি। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় চিরস্থায়ী থাকার গ্যারান্টি হিসেবে পার্শ্ববর্তী দেশকে অনেক কিছু দিয়েছেন আর বিএনপি নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসার জন্য জনগণের ওপর নির্ভর করে। রিজভী বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, বর্তমান সরকার বিএনপির মতো নির্বাচন প্রক্রিয়ায় বিশ্বাসী নয়। দলের কর্মীদের একথা মাথায় রাখতে হবে। প্রধানমন্ত্রী অকপটে সত্য কথাই বলেছেন। অবশ্যই বিএনপির মতো নির্বাচন প্রক্রিয়ায় বিশ্বাস করে না আওয়ামী লীগ। কারণ বিএনপি বহুদলীয় গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে আর আওয়ামী লীগ একদলীয় বাকশালে বিশ্বাস করে। বিএনপি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের নিশ্চয়তা দেয় আর আওয়ামী লীগ প্রতিদ্বন্দিতাহীন নির্বাচনে বিশ্বাস করে। রিজভী বলেন, আওয়ামী লীগ লুটপাট, দখল, ব্যাংকের টাকা তসরুপ, খুন, জখম, বেআইনী হত্যা, গুম, সন্ত্রাসীদের লালন-পালন, ভোট জালিয়াতি এবং একের পর এক ভোটারবিহীন নির্বাচন করাতে ভোটারদের আস্থা শূন্যের কোটায় চলে গেছে। তাই এখন প্রধানমন্ত্রী একটু উপলব্ধি করতে পারলে দেশের গণতন্ত্রের জন্য মঙ্গলজনক হবে। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এ বি এম মোশাররফ হোসেন, সহ-প্রচার সম্পাদক আসাদুল করিম শাহীন, সহ-দফতর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু, বেলাল আহমেদ প্রমুখ।
×