ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ঢাকা মেডিক্যালের ওটিতে দুই ডাক্তারের হাতাহাতি

প্রকাশিত: ০৬:১৪, ১০ মে ২০১৮

ঢাকা মেডিক্যালের ওটিতে দুই ডাক্তারের হাতাহাতি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারে রোগী নেয়া মানেই সর্বোচ্চ সতর্কতা ও পেশাদারিত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করা। এখানে চিকিৎসকের বিন্দুুমাত্র ভুলত্রুটি, গাফিলতি ও অমনোযোগে সর্বনাশ ঘটতে পারে রোগীর। প্রতিটি ডাক্তার ও নার্সকে এ ছবক দেয়া হয় ইন্টার্নির সময়ই। কিন্তু বুধবার এমন গুরু দায়িত্বের কথা ভুলে গিয়ে দুই ডাক্তারের মধ্যে ঘটে গেছে হাতাহাতি ও বাগ্বিত-া। তাদের এমন অস্বাভাবিক ও উন্মত্ত আচরণ দেখে টেবিলে শুয়ে থাকা রোগী চরম ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়েন। এমন অবিশ্বাস্য কা- ঘটেছে ঢাকা মেডিক্যালের জরুরী বিভাগের অপারেশন থিয়েটারে। ওই রোগীকে অচেতন করা নিয়ে তাদের মাঝে প্রথমে বাগ্বিত-া পরে হাতাহাতি। এমনকি দু’জন চিকিৎসক ঘুষাঘুষিতেই উদ্যত হন। ঘটনার আকস্মিকতায় হতবাক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এতে হস্তক্ষেপ করতে হয়েছে ঢামেক পরিচালক ও অধ্যক্ষকেও। বুধবার দুপুর দেড়টার দিকের এই ঘটনায় হাসপাতাল জুড়ে তোলপাড়ের সৃষ্টি হয়। পরে পরিচালক ও অধ্যক্ষের হস্তক্ষেপে ঘটনার মীমাংসা হয়। হাসপাতালের প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, খাদ্যনালীতে সমস্যাগ্রস্ত এক নারীকে অস্ত্রোপচারের জন্য সার্জারি ইউনিট-৩ এর চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে জরুরী বিভাগের তৃতীয় তলার ২নং অপারেশন থিয়েটারে নেয়া হয়। স্বভাবতই অপারেশনের আগে ওই নারীকে সাময়িকভাবে অচেতনের জন্য এ্যানেস্থেসিয়া দেয়া নিয়ে সার্জারির চিকিৎসক ডাঃ শওকতের সঙ্গে এ্যানেস্থেসিয়া চিকিৎসক ডাঃ ইব্রাহীমের কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে বেডে শুয়ে থাকা রোগীর সামনেই ডাঃ ইব্রাহীমকে মারধর করা হয়। খবর পেয়ে ওটিতে ছুটে যান সিনিয়র চিকিৎসকরা। ঢামেক পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল একেএম নাসির উদ্দিনও ছুটে যান সেখানে। এরপর কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক খান মোঃ আবুল কালাম আজাদের সঙ্গে জরুরী বৈঠকে বসেন চিকিৎসকরা। এ সময় সার্জারি ইউনিটের সব ওটিই বন্ধ ছিল। চালু ছিল কেবল ইমার্জেন্সি ওটি। পরে ঢামেক পরিচালক, অধ্যক্ষসহ সংশ্লিষ্টরা একসঙ্গে বসে বিষয়টির সুরাহা করে দিলে চিকিৎসকরা কাজে ফিরে যান। এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে ঢামেক অধ্যক্ষ খান মোঃ আবুল কালাম আজাদ বলেন, রোগীকে অ্যানেস্থেসিয়া দেয়াকে নিয়ে ওটিতে ডাঃ শওকত ও ডাঃ ইব্রাহীমের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায় তাদের মধ্যে মৃদু হাতাহাতিও হয়। পরে ঢামেক পরিচালকসহ আমরা একসঙ্গে বসে বিষয়টি মীমাংসা করে দিয়েছি। সবাই কাজে ফিরে গেছেন। অধ্যক্ষ বলেন, এক মিনিটের জন্যও হাসপাতালের চিকিৎসা সেবা বন্ধ করা যাবে না। কারণ জাতীয় সত্তার পরিচয় হচ্ছে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। ভবিষ্যতে এ ধরনের কীর্তিকলাপ সম্পর্কে সতর্ক দৃষ্টি রাখা হবে।
×