ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

নবীন আইনজীবীদের সনদ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান বিচারপতি

বার ও বেঞ্চের সমন্বয়েই সুষ্ঠু বিচার ব্যবস্থা গড়ে ওঠে

প্রকাশিত: ০৫:৪৮, ৮ এপ্রিল ২০১৮

বার ও বেঞ্চের সমন্বয়েই সুষ্ঠু বিচার ব্যবস্থা গড়ে ওঠে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বলেছেন, ‘বিচার প্রশাসনে আইনজীবী এবং বিচারক একে অন্যের পরিপূরক। বার ও বেঞ্চের সমন্বয়েই সুষ্ঠু বিচার ব্যবস্থা গড়ে উঠে। তাদের হাতে হাত দিয়ে এক সঙ্গে হাঁটতে হবে। বার এবং বেঞ্চ একই মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ। আইনজীবী এবং বিচারকরা একই আইনী দক্ষতাসম্পন্ন হলেও তাদের ভূমিকা আলাদা। এই দৃষ্টিকোণ থেকে দেখলে দুই পক্ষের মধ্যে অনৈতিক সম্পর্ক বা লেনদেনের সম্পর্ক নৈতিক ভিত্তিকে ধ্বংস করে। ফলে বার এবং বেঞ্চের নৈতিক ভিত্তিকে ধ্বংসের হাত থেকে আমাদের সুরক্ষা দিতে হবে। বিচার বিভাগের ভাবমূর্তি ক্ষুণœ হয় এমন কাজ করা যাবে না। নবীন আইনজীবীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আইনজীবী হিসেবে খ্যাতি অর্জন করতে হলে প্রয়োজন অধ্যবসায়। নিরলস শ্রম, সততা ও পেশার প্রতি আন্তরিকতা দিয়ে কাজ করলে তবেই সফলতা পাওয়া যায়। রাজধানীর অফিসার্স ক্লাবে বাংলাদেশ বার কাউন্সিল আয়োজিত ‘নবীন আইনজীবীদের সনদ প্রদান’ অনুষ্ঠানে শনিবার প্রধান অতিথির বক্তৃতায় প্রধান বিচারপতি এসব কথা বলেন। অন্যদিকে বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় আইনমন্ত্রী এ্যাডভোকেট আনিসুল হক বলেছেন, উচ্চ আদালতে বিচারপতি নিয়োগে আইনের খসড়া প্রস্তুত হয়েছে, শীঘ্রই এ খসড়া মন্ত্রিপরিষদে উপস্থাপন করা হবে। বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান সিনিয়র এ্যাডভোকেট আবদুল বাসেত মজুমদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তৃতা করেন- বার কাউন্সিলের এনরোলমেন্ট কমিটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বিচারপতি মোঃ নুরুজ্জামান, বার কাউন্সিলের সদস্য ও বার কাউন্সিলের এক্সিকিউটিভ কমিটির চেয়ারম্যান সিনিয়র এ্যাডভোকেট আবদুল মতিন খসরু এমপি, বার কাউন্সিলের নির্বাচিত সদস্য ও ফাইন্যান্স কমিটির চেয়ারম্যান সিনিয়র আইনজীবী শ.ম রেজাউল করিম, বার কাউন্সিলের সদস্য জেড আই খান পান্না। বার কাউন্সিলের সদস্য এ্যাডভোকেট নজিবুল্লা হিরু অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন। এছাড়াও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বার কাউন্সিলের সদস্য ও সুপ্রীমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক ব্যারিস্টার এএম মাহবুব উদ্দিন খোকনসহ বার কাউন্সিলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ, এনরোলমেন্ট কমিটির সদস্য বিচারপতি ভবানী প্রসাদ সিংহ, সুপ্রীমকোর্টের বিচারপতিগণ, সুপ্রীমকোর্টের সিনিয়র আইনজীবীসহ বিপুল সংখ্যক আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন আইনজীবীদের উদ্দেশে আরও বলেন, ‘আইন পেশায় জ্ঞান ও মেধা দিয়ে মক্কেলদের সহযোগিতা করতে হবে। এজন্য বেশি বেশি জ্ঞানের চর্চা করতে হবে। সেক্ষেত্রে তাদের কাছ থেকে পেশাগত অসদাচরণমূলক ব্যবহার কখনই কাম্য নয়।’ অনুষ্ঠানে নতুন আইনজীবীদের শপথবাক্য পাঠ করান অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন। বার কাউন্সিলের সনদ নেয়া নবীন আইনজীবীদের শুভেচ্ছা জানিয়ে প্রধান বিচারপতি বলেন, আইনজীবী হিসেবে সফলতা অর্জন করতে হলে প্রয়োজন অধ্যবসায়। নিরলস শ্রম, সততা ও পেশার প্রতি আন্তরিকতা দিয়ে কাজ করলে তবেই সফলতা পাওয়া যায়। আইনের শাসন ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় আইনজীবীদের ভূমিকা অপরিসীম। আইনী ও মৌলিক অধিকার সুরক্ষায় জনগণের প্রতি আইনজীবীদের দৃঢ় অঙ্গীকারের কথা স্মরণ করিয়ে আইনজীবীদের উদ্দেশে প্রধান বিচারপতি বলেন, আইনজীবীদের কখনই তাদের শপথ ভুলে যাওয়া উচিত নয়। আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, উচ্চ আদালতে বিচারপতি নিয়োগে নতুন আইন প্রণয়ন করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে এ আইনের খসড়া তৈরি করা হয়েছে। শীঘ্রই এ আইন মন্ত্রিপরিষদে উপস্থাপন করা হবে। তিনি বলেন, আইনজীবীরা রিটায়ার্ড বেনিফিট পাননা। তাই আইনজীবীদের বেনাভোলেন্ড ফান্ডকে আরও সমৃদ্ধ করতে তিনি ৪০ কোটি টাকা প্রদানের ঘোষণা দেন। তিনি জানান, বার কাউন্সিলের জন্য ১৫ তলা ভবন নির্মাণের কার্যক্রম চলছে। এটিও একনেকে পাস হচ্ছে বলে জানান আইনমন্ত্রী। আইনজীবীদের কল্যাণে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণে সরকার বদ্ধপরিকর। নতুন আইনজীবীদের শুভেচ্ছা জানিয়ে তিনি বলেন, আইন পেশা একটি গুরুত্বপূর্ণ পেশা। এখানে নিয়মিত অধ্যয়ন, সিনিয়রের সঙ্গে থেকে অভিজ্ঞতা অর্জন করতে হবে। তাহলে একজন আইনজীবী হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব। এ সময় তিনি তার আইনজীবী হওয়ার বিভিন্ন অভিজ্ঞতাও তুলে ধরেন। বার কাউন্সিলের এনরোলমেন্ট কমিটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বিচারপতি মোঃ নুরুজ্জামান বলেন, নবীন আইনজীবীদের সিনিয়রদের সঙ্গে কাজ করে অভিজ্ঞতা অর্জন করতে হয়। সিনিয়রদের আইনের বইয়ের সঙ্গে তুলনা করেন নবীনদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ভাল আইনজীবী হতে হলে সিনিয়রের সঙ্গে থাকার পাশাপাশি বিভিন্ন আইন, রেফারেন্স জানতে হবে। এ অনুষ্ঠানে ২০১৩ সালের ৬ এপ্রিল বার কাউন্সিলে যুক্ত হওয়া ৩ হাজার তিন শতেরও বেশি সদস্যের হাতে আইনজীবী হিসেবে অন্তর্ভুক্তির সনদ তুলে দেয়া হয়।
×