ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলাদেশ বিপজ্জনক দল ॥ স্মিথ

প্রকাশিত: ০৪:২৭, ১০ আগস্ট ২০১৭

বাংলাদেশ বিপজ্জনক দল ॥ স্মিথ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ প্রতিপক্ষ হিসেবে টাইগারদের ‘বিপজ্জনক’ বলে মনে করছেন স্টিভেন স্মিথ। ফক্সস্পোর্টসের এক কলামে অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক লিখেছেন, ‘ক্রিকেটে বাংলাদেশ এখন অবশ্যই বিপজ্জনক এক দল।’ বেতনভাতা নিয়ে বোর্ডের (সিএ) সঙ্গে কয়েকমাস ধরে চলা অচলাবস্থা মিটে যাওয়ায় খেলায় মন দিয়েছে অসিরা। বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়া দুই ম্যাচের টেস্ট (২৭ আগস্ট ও ৪ সেপ্টেম্বর) সিরিজ ঘিরে তৈরি অনিশ্চয়তাও কেটে গেছে। স্মিথের নেতৃত্বে ১৮ আগস্ট ঢাকায় আসবে কুলিন অসিরা। প্রথমবারের মতো ডাক পেয়েছেন আনকোরা লেগস্পিনারা মিচেল সোয়েপসন। তবে জায়গা হয়নি গত ভারত সফরে দুরন্ত বোলিং করে আলোচনায় উঠে আসা বর্ষীয়ান স্টিভ ও’কেফের। নিজের লেখা কলামে এসব নিয়েও অভিমত ব্যক্ত করেছেন তিন ফরমেটের অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক ও ক্রিকেটে সময়ের অন্যতম সফল এ ব্যাটসম্যান। সব পেছনে ফেলে খেলায় মনোযোগ দেয়ার কথা জানিয়েছেন তিনি। ‘বাংলাদেশ গত কয়েক বছরে উল্লেখযোগ্য উন্নতি করেছে। বিশেষ করে ঘরের মাঠে। গত বছর তারা ইংল্যান্ডকে পর্যুদস্ত করেছে।’ সম্মানের সঙ্গে অভিমত স্মিথের। অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক এখন তার দল নিয়ে ফিটনেস ও মনঃসংযোগের জন্য কাজ করছেন। পারিশ্রমিক নিয়ে বোর্ড খেলোয়াড় দ্বন্দ্ব মিটে যাওয়ায় ভীষণ স্বস্তিবোধ করছেন। পেশাদারী ক্যারিয়ার শুরুর পর তিনি কখনও এত দীর্ঘ সময় ক্রিকেটের বাইরে থাকেননি। স্মিথ বলেন, ‘প্রায় দুই মাস ব্যাট হাতে নিইনি, এটা আমার ক্ষেত্রে বিরল। কখনও এতটা দীর্ঘ সময় ক্রিকেটের বাইরে ছিলাম না, এ কারণে ব্যাট ধরতে মুখিয়ে আছি।’ বাংলাদেশ সফরের জন্য ডারউইনে আজ থেকে সাতদিনের অনুশীলন ক্যাম্প শুরু করবে অস্ট্রেলিয়া দল। পূর্ণশক্তির স্কোয়াড নিয়েই মুশফিকুর রহীমদের মুখোমুখি হবেন স্মিথ। স্কোয়াডে রয়েছেন ডেভিড ওয়ার্নার, উসমান খাজা, ম্যাথু রেনশদের মতো পরীক্ষিত ব্যাটসম্যান। জস হ্যাজেলউড, প্যাট কামিন্স, নাথান লেয়নদের নিয়ে বোলিং বিভাগও বৈচিত্র্যপূর্ণ। তবে ও’কেফেকে বাইরে রেখে নবাগত সোয়েপসনের অন্তর্ভুক্তি, স্পিনিং-অলরাউন্ডার এ্যাগারকে ফেরানো। এ নিয়ে সমালোচনা হচ্ছে। স্মিথ বলেন, ‘বছরের শুরুতে পুনে টেস্টে সে খুব ভাল বল করে ম্যাচ জিতিয়েছিল। যখন উইকেট পায়নি তখনও ওর ভূমিকা ছিল কার্যকর। কিন্তু এখন সামনে তাকানোর সময় হয়েছে। সোয়েপসন-এ্যাগার সে কারণেই সুযোগ পেয়েছে’। অধিনায়কের যুক্তি, ও’কেফে এখনই কিছুটা বুড়িয়ে গেছে। ভারতে আমাদের খেলা আবার চার বছর পর। ততদিনে অনিশ্চয়তায় থাকতে চাই না। এর মধ্যেই তারুণদের তৈরি করে নিতে হবে।’ গেল ফেব্ররুয়ারি-মার্চের ভারত সফরে স্টিভেন ও’কেফে ছিলেন অস্ট্রেলিয়ার সারপ্রাইজ প্যাকেজ। স্পিনের বিপরীতে ওস্তাদ কোহলি-পুজারাদের ঘূর্ণি বলেই কাবু করেছিলেন ও’কেফে। এই বাঁহাতি স্পিনার পুনে টেস্টের দুই ইনিংস মিলিয়ে ৭০ রানে নিয়েছিলেন ১২ উইকেট। সিরিজে ওই একটা টেস্টই জিতেছিল স্মিথরা। অথচ উপমহাদেশে পরের সফরে এবার দলেই রাখা হয়নি তাকে। ৩২Ñএর ওপরে বয়স একটা যুক্তি, তবে ও’কেফের বাদ পড়ার জন্য মাঠের বাইরের বাজে আচরণই বেশি দায়ী। গত এপ্রিলে একটি এ্যাওয়ার্ড পার্টিতে মদ্যপ অবস্থায় অসি কর্মকর্তাদের নিয়ে আজেবাজে মন্তব্য করেছিলেন। এই ঘটনায় পরের সামারে ম্যাটাডোর ওয়ানডে কাপে তাকে নিষিদ্ধ করে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া। জরিমানাও করা হয়েছে ২০ হাজার ডলার। এর আগেও মদ্যপ অবস্থায় তার বিরুদ্ধে অসংলগ্ন কথা বলার অভিযোগ ছিল। বাংলাদেশ সফর থেকে বাদ পড়ে তার খেসারত দিলেন ক্রেজি চরিত্রের প্রতিভাবান এ স্পিনার। স্থানীয় বিশ্লেষকদের অনেকে তাকে বাদ দেয়ার সমালোচনা করে বলেছেন, ‘আচার আচরণ একটা ইস্যু, তবে এজন্য ভাল পারফর্ম করা কাউকে বাদ দেয়া অন্যায় ও অবিচার। এই মুহূর্তে সে-ই অস্ট্রেলিয়ার সেরা বাঁহাতি স্পিনার।’ পরিসংখ্যান আসলেই ও’কেফের পক্ষে কথা বলে। ৮ টেস্টে ২৭.৩০ গড়ে ৩৩ উইকেট নিয়েছেন। অন্যদিকে ২ টেস্টে এ্যাগারের শিকার মাত্র ২ উইকেট। প্রথমশ্রেণীতে ৭০ ম্যাচে ও’কেফের আছে ২৪৪ উইকেট।
×