ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সড়ক-রেল-নৌ পথে মানুষ আর মানুষ;###;রেলপথে স্বস্তি, সড়কপথে বিড়ম্বনা;###;ট্রাক-পিকাপেও যাত্রী বহন

ঝুঁকি নিয়ে বাড়ি ফেরা

প্রকাশিত: ০১:৪১, ২৩ জুন ২০১৭

ঝুঁকি নিয়ে বাড়ি ফেরা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ট্রাক, পিকআপ থেকে শুরু করে ট্রেনের ছাদ-বাম্পার-ইঞ্জিন, বাসের ছাদ সবখানেই মানুষ আর মানুষ। পথের এমন চিত্র বলে দেয় দরজায় কড়া নাড়ছে ঈদ। তাই বাড়ি ফেরার তাড়া। যে যেভাবে পারছেন ছুটছেন প্রিয় জনের কাছে। বৃহস্পতিবার থেকেই ঈদের ছুটি শুরু। রাতভর ঢাকা থেকে গন্তব্যের উদ্দেশ্যে ছুটে গেছেন অনেকেই। ভোর থেকে বাস-লঞ্চ-রেল স্টেশনে ঘরমুখো যাত্রীদের ঢল নামে। বাস টার্মিনালে পর্যাপ্ত গাড়ি নেই। তাই বাসের ছাদেও ছিল ঠাঁসা যাত্রী। তবে ছাদের ভাড়া সিটের থেকে কিছুটা কম। পণ্যবাহি পরিবহনের উপরেও গাদাগাদি করে যাত্রী পরিবহন করতে দেখা গেছে বিভিন্ন মহাসড়কে। পথে-পথে পরিবহনের জন্য যাত্রীদের অপেক্ষা করতে দেখা গেছে। ঠাঁই নেই লঞ্চগুলোতেও। যাত্রী বেশি হওয়ায় সবগুলো লঞ্চই ঝুঁকি নিয়ে সদরঘাট ছেড়েছে। মাওয়া-কাওড়াকান্দিসহ দেশের গুরুত্বপূর্ণ সবকটি ফেরীঘাটে দীর্ঘ লাইনের জট ছিল দিনভর। ঢাকা-চট্টগ্রাম-সিলেট-টাঙ্গাইল-সয়মনসিংহ চারটি মহাসড়কেই থেমে থেকে যানজটের ভোগান্তি হয়েছে। তবে কমলাপুর থেকে বেশিরভাগ ট্রেন যথাসময়ে ছেড়ে গেছে। সড়কপথে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তি হয়েছে ঢাকা-টাঙ্গাইল ও চট্টগ্রাম পথের যাত্রীদের। রাজধানীর বাস টার্মিনালের চিত্র ॥ শুক্রবার সকাল থেকে রাজধানীর তিনটি আন্তঃনগর বাস টার্মিনাল ও কমলাপুর রেল স্টেশনে মানুষের ব্যাপক ভিড় দেখা গেছে। এবার ঈদের সরকারী ছুটি ২৫ থেকে ২৭ জুন পর্যন্ত। তার আগে দুদিন শুক্র আর শনিবার থাকায় কার্যত বৃহস্পতিবার বিকাল থেকেই শুরু হয়েছে ঈদযাত্রা। বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মেঘনা সেতুতে যানজট দেখা গেলেও শুক্রবার ভোরে কমে এসেছিল। কিন্তু সকালে সেতুতে একটি ট্রাক বিকল হওয়ায় ফের লেগেছে জট। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যানজট পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কাঁচপুর হাইওয়ে থানার ওসি শেখ শরীফুল হাসান। মাওয়া মহাসড়কেও তেমন যানজট নেই বলে সায়েদাবাদ থেকে বরিশাল-খুলনা অঞ্চলগামী বাসগুলোর কাউন্টারকর্মীরা জানিয়েছেন। উত্তরের পথে টাঙ্গাইলে মহাসড়কে গাড়িগুলোর গতি ধীর হওয়া ছাড়া আর তেমন অভিযোগ পাওয়া যায়নি। একইচিত্র মহাখালী থেকে ময়মনসিংহগামী বাসের ক্ষেত্রেও। ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে বিভিন্ন রুটের যানবাহনের ভিড় থাকলেও সকালে নারায়ণগঞ্জের ভুলতায় তেমন যানজট দেখা যায়নি। মহাসড়কে ট্রাক, কভার্ড ভ্যান বন্ধ রাখার সরকারী সিদ্ধান্ত থাকলেও তা মানা হচ্ছে না। সকালে ঢাকা বাইপাস সড়কে প্রচুর ট্রাক-কভার্ড ভ্যান চলতে দেখা গেছে। সদরঘাটের লঞ্চ টার্মিনালে ভিড় বাড়ে বেলা ১১টার পর থেকেই। দক্ষিণাঞ্চলগামী লঞ্চগুলো দুপুরের পর থেকে ঘাট ছাড়তে শুরু করে। শুক্রবার বিকেল থেকে রাজধানী কিছুটা ফাঁকা হতে শুরু করে। গত কয়েকদিন যে পরিমান যানজটের ভোগান্তি হয়েছে তাও এসেছে সহনীয় পর্যায়ে। তবে মার্কেট ও বিপনী বিতানগুলো কেন্দ্র করে কিছুটা জটলা রয়েছে। পথ নিয়ে শঙ্কা ॥ টার্মিনালগুলো থেকে বেশিরভাগ বাস ঠিক সময়ে ছেড়েছে। তবে গাবতলীর বাস কাউন্টারগুলো থেকে অগ্রিম টিকেট দেয়া হয়েছিল। কিছু বাস সড়কে যানজটের কারণে পৌছাতে বিলম্ব হয়। ছাড়েও কিছুটা দেড়িতে। সড়কে যানজটের আশঙ্কা নিয়েই রওনা হয়েছেন যাত্রীরা। গাবতলীর কয়েকজন কাউন্টার ব্যবস্থাপক জানিয়েছেন, সকাল ৯টা পর্যন্ত তারা নির্ধারিত সময়ে বাসগুলো ছাড়তে পেরেছেন। তবে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে চলাচলে ধীরগতির কারণে পরে সমস্যা দেখা দিতে পারে। এসআর ট্রাভেলেসের এজিএম টি আর প্লাবন বলেন, “আমাদের হাতে গাড়ি ছিল, সেগুলো সকাল ৯টা পর্যন্ত ঠিক সময়ে ছাড়তে পেরেছি। কিন্তু যানজটের কারণে গতকাল বিকালের দিকে যাওয়া গাড়ি ফিরতে দেরি হচ্ছে। এরপর থেকে লেট হবে।’’ তিনি বলেন, “আমরা খোঁজ নিয়ে জেনেছি, যমুনা ব্রিজ থেকে এদিকে কালিয়াকৈর পর্যন্ত যানজট রয়েছে। রাস্তার যে যানজট সেটাকে স্বাভাবিক ভাবেই দেখছেন শ্যামলী পরিবহনের কল্যাণপুর কাউন্টারের ব্যবস্থাপক সেলিম শিকদার। উত্তরবঙ্গমুখী বাসের এই কাউন্টার ব্যবস্থাপক বলেন, ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে যানজট যেটা আছে সেটা স্বাভাবিকই বলতে হবে। কালকের যাওয়া গাড়িগুলো অনেকটা ঠিক সময়ে ফিরে আসছে। রাস্তায় যে পরিস্থিতি আছে সেটা অন্যান্য সময়ের মতোই। রাস্তা একেবারে ক্লিয়ার না থাকলেও গাড়ি ভালোভাবে ফিরে আসছে। এটা বজায় থাকলে ঠিক সময়ে গাড়ি ছেড়ে যেতে পারবে। মহাখালী থেকে ময়মনসিংহ ও উত্তরাঞ্চলের বাস চালকরা জানিয়েছেন, টঙ্গী থেকে জয়দেবপুর পর্যন্ত যেতে সবচেয়ে বেশি সমস্যা হচ্ছে। টাঙ্গাইল থেকে চন্দ্রা, কালিয়াকৈড়, আশুলিয়া সহ ৭টি পয়েন্টে যানবাহনের জটলা হচ্ছে। বিকেলে পাটুরিয়া- দৌলতদিয়া ঘাটে দীর্ঘ জট ছিল। আরিচা সড়কে ছিল যানবাহনের ধীরগতি। ট্রেনের ছাদেও মানুষ ॥ ঝুঁকি নিয়ে বাসের ছাদে যেমন মানুষ ছিলো ব্যতিক্রম ছিলো না ট্রেনেও। অগ্রিম টিকেট নেয়া যাত্রীদের অনেকে নিজ আসনে বসার সুযোগ পাননি। এর কারণ হলে বাড়তি মানুষের ভীড় কমলাপুর রেল স্টেশনে। শুক্রবার ৬০টি ট্রেন বিভিন্ন গন্তব্যে ছেড়ে গেছে। প্রায় ৬০ হাজার মানুষ বাড়ি যাবার সুযোগ পেয়েছেন। তবে স্ট্যান্ডিং ও ছাদের মানুষ এই হিসেবের মধ্যে আসবে না। মঙ্গলবার সময়সূচী এলোমেলো হয়ে গেলেও পরদিনই সামলে ওঠেছিল রেলওয়ে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকেও কমলাপুর রেল স্টেশন থেকে ট্রেনগুলো মোটামুটি সময় ধরে ছেড়ে যায়। যাত্রী সংখ্যা বেশি হওয়ায় নিয়ম ভেঙে প্রায় সব ট্রেনের ছাদেই মানুষকে চড়তে দেখা গেছে। কমলাপুরের স্টেশন ম্যানেজার সিতাংশু চক্রবর্তী বলেন, দুপুর পর্যন্ত ২৭টি ট্রেন ছেড়ে গেছে। অধিকাংশ ট্রেনে যাত্রীর প্রচন্ড চাপ লক্ষ্য করা গেছে। এই সময় পর্যন্ত প্রায় সবগুলো ট্রেন নির্ধারিত সময়ে স্টেশন ছেড়ে যায় বলে তার দাবি; যদিও রংপুর এক্সপ্রেসকে নির্ধারিত সময়ের দুই ঘণ্টা পর ছাড়তে দেখা যায়। যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে এই ট্রেনের বিলম্ব হয়েছে। রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর উপ-পরিদর্শক (এসআই) সালাহ উদ্দিন ভূইয়া বলেন, গতকাল (বৃহস্পতিবার) দুপুরের পর থেকে যাত্রী চাপ বেড়ে গেছে। এই চাপ সারা রাত ছিল, সকালের ট্রেনগুলোতে আরও বেড়েছে। কমলাপুর রেলস্টেশনের আনসার কমান্ডার ইয়ার হোসেন বলেন ট্রেনগুলো সময়সূচী অনুসারেই ছেড়ে যাচ্ছে। তবে গত দুই দিনের চেয়ে আজ যাত্রীদের অনেক বেশি ভিড়। তিনি জানান, খুলনার উদ্দেশে সকাল ৬টা ২০ মিনিটে সুন্দরবন এক্সপ্রেস ছেড়ে গেছে। এরপর সিলেটের উদ্দেশে সকাল ৬টা ৩৫ মিনিটে পারাবত এক্সপ্রেস, চট্টগ্রামের উদ্দেশে সকাল ৭টায় সোনার বাংলা এক্সপ্রেস, কিশোরগঞ্জের উদ্দেশে এগারসিন্দুর ৭টা ১৫ মিনিটে, দেওয়ানগঞ্জের উদ্দেশে তিস্তা ৭টা ৩০ মিনিট, চট্টগ্রামের উদ্দেশে মহানগর প্রভাতি ৭টা ৪৫ মিনিটে ছেড়ে গেছে। চলাহাটির উদ্দেশে নীলসাগর এক্সপ্রেস নির্ধারিত সকাল ৮টার পরিবর্তে ৮টা ২০ মিনিটে ছেড়ে যায়। যাত্রীচাপের কারণে কোনো কোনো ট্রেন নির্ধারিত সময়ের চেয়ে ১০ থেকে ২০ মিনিট দেরি করে ছেড়ে যাচ্ছে বলে নিরাপত্তাকর্মীরা জানিয়েছেন। ভেতরে গাদাগাদির পাশাপাশি বেশিরভাগ ট্রেনের ছাদে করে ঝুঁকি নিয়ে বহু মানুষ ভ্রমণ করছেন। ট্রেন ছেড়ে দেয়ার সময়ও কেউ কেউ দৌড়ে উঠছেন। এ বিষয়ে সিতাংশু বলেন, ট্রেনের ছাদে যাতে কেউ না উঠে সেই জন্য আমরা বার বার নিষেধ করছি, সচেতনতামূলক মাইকিং করছি, আমাদের লোকেরা ছাদে না উঠতে যাত্রীদের বাধাও দিচ্ছে, তারপরও যাত্রী চাপের কারণে ঠেকিয়ে রাখা যাচ্ছে না। এসআই সালাহ উদ্দিন বলেন, “ছাদে যাতে কেউ না উঠে সেজন্য আমরা যাত্রীদের ভয়ভীতি দেখাচ্ছি; কিন্তু কোনো কাজে আসছে না।’’ এদিকে, জয়দেবপুর ও বিমানবন্দর রেল স্টেশনে মইয়ের ব্যবসা জমজমাট। যাত্রী প্রতি ১০টাকায় মই দিয়ে ট্রেনের ছাদে ওঠানোর চিত্র দেখা গেছে দিনভর। অনেকে বাম্পারে ঝুলেও গন্তব্যেও দিকে রওনা দেন। কমলাপুর রেল স্টেশন থেকে নির্ধারিত সময়ে ট্রেন ছাড়ায় যাত্রীরা সন্তুষ্ট বলে দাবি করেছেন রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক। ঈদ সামনে রেখে শুক্রবার দুপুরে কমলাপুরে ঘরমুখো রেলযাত্রীদের সঙ্গে কথা বলার পর সাংবাদিকদের একথা বলে তিনি। মুজিবুল হক বলেন, সব ট্রেন সঠিক সময়ে যাত্রা করেছে। বিভিন্ন রুটের ট্রেনের যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা বলেছেন, সঠিক সময়ে ট্রেনে যেতে পারছেন। এজন্য (তারা) সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। শুক্রবার বিকাল ৩টা পর্যন্ত কমলাপুর রেল স্টেশন থেকে একটি বাদে সবগুলো (২৭টি) ট্রেন নির্ধারিত সময়ে ছেড়ে গেছে জানিয়ে রেলমন্ত্রী বলেন, যান্ত্রিক ক্রটির জন্য রংপুর এক্সপ্রেস কিছুটা দেরিতে ছেড়েছে। রেল কর্মকর্তারা সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করায় নির্ধারিত সময়ে ট্রেন ছেড়ে যাচ্ছে বলে দাবি করেন তিনি। ঝুঁকি নিয়ে রেলের ছাদে যাত্রী পরিবহনের বিষয়ে রেলমন্ত্রী বলেন, আইনে নাই, এরপরেও ঈদ উপলক্ষে ছাদে ওঠে। আমরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে বলেছি, যাত্রীদের গায়ে হাত বুলিয়ে বোঝাতে, যেন তারা ছাদে না ওঠেন। চাপ বেড়েছে সদরঘাটে ॥ শুক্রবার সকালে সদরঘাটে লঞ্চ যাত্রীর চাপ দেখা গেলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কিছুটা কমে যায়। দুপুরের পর আবার চাপ বাড়ে। সাধারণত সকালে চাঁদপুরসহ নিকট গন্তব্যের লঞ্চগুলো ঢাকা ছেড়ে যায়। মাঝে বিরতির পর বিকালে শুরু হয় বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালীসহ দূর গন্তব্যের লঞ্চগুলোর যাত্রা। বিআইডব্লিউটিএ’র পরিবহন পরিদর্শক (টিআই) হুমায়ূন কবির বলেন, ভোর থেকে সাড়ে ৮টা পর্যন্ত যাত্রীর চাপ ছিল। কাল ১০টা পর্যন্ত ২৫টি লঞ্চ ছেড়ে যায় সদরঘাট থেকে। বৃহস্পতিবার সারাদিনে লঞ্চ ছেড়েছিল ৮২টি। শুক্রবার এই সংখ্যা কিছুটা বেড়েছে। যাত্রীদের দুর্ভোগ কমাতে ঘাটে পুলিশ পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে বলে জানান কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক (অপারেশন) মো. মওদুদ হাওলাদার। তিনি বলেন, ঢাকা মহানগর পুলিশের ২৩৬ সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন সদরঘাটে। এছাড়া নৌ পুলিশ, কোস্টগার্ড, র্যা ব সদস্যের সঙ্গে বিএনসিসির স্বেচ্ছাসেবকরাও রয়েছে। বআইডব্লিউটিএর যুগ্ম পরিচালক জয়নাল আবেদীন জানান, ঘাটের পরিস্থিতি সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে দেখছেন তারা। কোথাও ধরনের অপ্রীতিকর কিছু দেখা গেলে সঙ্গে সঙ্গে তার সমাধান করা হচ্ছে। ঝুঁকি নিয়ে ট্রাকে বাড়ি ফেরা ॥ ঈদ উপলক্ষে উত্তরের পথে ঢাকা থেকে ছেড়ে যাওয়া যানবাহনের চাপ কমলেও গাড়ির সংকট দেখা দেয়ায় অনেকেই ট্রাকে করে রওনা হচ্ছেন। গাজীপুর থেকে ঢাকা-টাঙ্গাইল ও ঢাকা-ময়মনসিংহ সড়কে বাস তুলনামূলক কম দেখা গেছে। ট্রাক ও ভারী যান চলাচলের পাশাপাশি অনেককেই বাস না পেয়ে ট্রাকে যেতে দেখা গেছে। কোনাবাড়ি হাইওয়ে থানার ওসি মোহাম্মদ হোসেন সরকার জানান, তিনি ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে কালিয়াকৈর উপজেলার চন্দ্রায় দায়িত্ব পালন করছেন। বৃহস্পতিবার দুপুরের পর থেকে চন্দ্রা, সফিপুর, কোনাবাড়ি ও আশপাশের এলাকায় শুক্রবার ভোর পর্যন্ত গাড়ির চাপ বেশি ছিল। সেই তুলনায় সকালে বাস ও অন্যান্য গাড়ির সংখ্যা কম। একই তথ্য জানালেন নাওজোর মহাসড়ক পুলিশ ফাঁড়ির ওসি আব্দুল হাই। তিনি আরও বলেন, বাস না থাকায় অনেককেই রাস্তার পাশে অপেক্ষা করতে দেখা গেছে। অনেকেই ট্রাক, পিকআপ বা বিকল্প পরিবহনে করে চলে যাচ্ছে। সেহরি খাওয়ার পর অনেকেই শুক্রবার ভোরে বাড়ির পথে রওনা হওয়ায় ভোরে যাত্রীদের ভিড় থাকলেও সকাল নাগাদ রাস্তা ফাঁকা হয়ে আসে বলে পুলিশ মনে করছে। মাওনা হাইওয়ে থানার ওসি মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, গত দুই দিনে যেসব গাড়ি যাত্রী নিয়ে উত্তরে গেছে তারা এখনও ঢাকায় ফিরতে পারেনি বলেও গাড়ির সংখ্যা কিছুটা কম। গাজীপুরের ভোগড়া বাইপাসে হানিফ পরিবহনের কাউন্টারে গিয়ে দেখা গেছে, বাসের অপেক্ষা করছেন আগাম টিকেট কাটা যাত্রীরা। নতুন করে কেউ টিকেট পাচ্ছে না। ১২ জুন আগাম টিকেট বিক্রি শুরুর কদিনেই শেষ হয়ে যায় বলে জানান কাউন্টারে টিকেট মাস্টার শাহদত হোসেন। তিনি বলেন, ঢাকা থেকে গাজীপুরে আসতে যানজটে পড়ে গাড়ির শিডিউল ঠিক রাখা যাচ্ছে না। এ কারণে প্রতিটি গাড়ি ছাড়তে দুই-তিন ঘণ্টা দেরি হচ্ছে। গাজীপুরের চান্দনা-চৌরাস্থা, কোনাবাড়ি, চন্দ্রাসহ বিভিন্ন স্পটে শত শত যাত্রীকে গাড়ির জন্য অপেক্ষা করতে দেখা গেছে। ঢাকা-ময়মনসিংহ-টাঙ্গাইল-নরসিংদী-সুনামগঞ্জ সহ আশপাশের জেলার যাত্রীদের পণ্যবাহি পরিবহনে ওঠে বাড়ি যেতে দেখা গেছে।
×