ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

শেরপুরে দুই ইউএনওর সিম ক্লোন করে চাঁদা দাবি

প্রকাশিত: ০৬:৩৪, ১৯ জুন ২০১৭

শেরপুরে দুই ইউএনওর সিম ক্লোন করে চাঁদা দাবি

নিজস্ব সংবাদদাতা, শেরপুর, ১৮ জুন ॥ শেরপুরের ২ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) ব্যবহৃত সরকারী মোবাইল ফোনের সিম ক্লোন করে জনপ্রতিনিধিসহ বিভিন্নজনের কাছে চাঁদা দাবির ঘটনা ঘটেছে। ২ ইউএনওই তাদের ফেসবুক পেজে বিষয়টি সম্পর্কে সকলকে সতর্ক করেছেন। জানা যায়, নালিতাবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তরফদার সোহেল রহমানের সরকারী মোবাইল ফোন থেকে শনিবার বিকেলে উপজেলার ৫ ইউপি চেয়ারম্যানকে ফোন দিয়ে সরকারী বিভিন্ন কর্মসৃজন প্রকল্পে (টিআর, কাবিখা, কাবিটা প্রকল্প) বিশেষ বরাদ্দ দেয়ার নামে তাদের কাছে চাঁদা দাবি করা হয়। এরপর ওই ইউপি চেয়ারম্যানগণ অপর প্রান্ত থেকে আসা কণ্ঠ শুনে সন্দিহান হলে তারা সন্ধ্যার পর সরাসরি ইউএনওর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। ইউএনও বিষয়টি শুনতে পেরে যোগাযোগ করেন সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যানসহ অন্যদের সঙ্গে। এরপর নিশ্চিত হওয়া যায় যে ইউএনওর মোবাইল ফোনের সিমটি ক্লোন করেছে দুর্বৃত্তরা। রবিবার ওই ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে নালিতাবাড়ীর রাজনগর ইউপি চেয়ারম্যান ফারুক আহমেদ বকুল বলেন, তার কাছে ইউএনওর সরকারী মোবাইল ফোন দিয়ে বিভিন্ন প্রকল্পের অতিরিক্ত বরাদ্দ পাইয়ে দেয়ার নামে টাকা দাবি করা হয়। কিন্তু কণ্ঠটি ইউএনওর কণ্ঠ মনে না হওয়ায় আমি সতর্ক হয়ে যাই। এরপর শুনি আরও কয়েকজন চেয়ারম্যানের কাছে একইভাবে চাঁদা দাবি করা হয়েছে। একই অবস্থার শিকার হয়েছেন ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এজেডএম শরীফ হোসেন। শনিবার তার সরকারী মোবাইল ফোনটিও দ্বিতীয় দফায় ক্লোন করে দুর্বৃত্তরা। এরপর সন্ধ্যার দিকে কয়েক জনপ্রতিনিধি তাদের কাছে কৌশলে চাঁদা দাবি করায় তাকে ওই বিষয়টি জানালে তিনি সিম ক্লোনের বিষয়টি নিশ্চিত হন। পানছড়ি সংবাদদাতা পানছড়ি, খাগড়াছড়ি থেকে জানান, পানছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) মোবাইল নম্বর ক্লোন করে টাকা দাবি করা হয়েছে। রবিবার সকাল থেকে ৪ ইউপির চেয়ারম্যানের মুঠেফোনে ফোন করে টাকা চাওয়া হয় বলে জানা যায়। চেংগী ইউপি চেয়ারম্যান কালাচাঁদ চাকমা, পানছড়ি ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ নাজির হোসেন, লতিবান ইউপির চেয়ারম্যান কিরণ ত্রিপুরা ও উল্টাছড়ি ইউপি চেয়ারম্যান বিজয় চাকমা জানান, রবিবার সকাল সাড়ে দশটার দিকে ০১৮৩৬৩৯৪৭০৪ নম্বর থেকে ফোন আসে। ফোন রিসিভ করা মাত্রই অন্য প্রান্ত থেকে বলে আমি ইউএনও বলছি, আপনার ইউনিয়নে জিআর, টিআর ও কাবিখার অতিরিক্ত বরাদ্দ এসেছে। একটু পরে ইউএনওর সরকারী নম্বর থেকে ফের ফোন করে আপনারা প্রস্তুত থাকেন বলেই কেটে দেয়। কিছুক্ষণ পর আবারও ০১৮৩৬৩৯৪৭০৪ থেকে ফোন করে বলা হয় সরকারী নম্বরের ব্যালেন্স শেষ হয়ে যাওয়ায় এই নম্বর থেকে ফোন দিলাম এবং এটাই বিকাশ নম্বর। প্রতিটি মোবাইলে ফোন করে ৪০ হাজার ও ২০ হাজার করে টাকা দাবি করা হয়। কেউ কেউ টাকা দেয়ার প্রস্তুতিও নেয়। ৩ সদর পানছড়ি ইউপি চেয়ারম্যান প্রতারক চক্রের কণ্ঠ বুঝতে পেরে তাদের বলে ইউএনর কণ্ঠ তো অন্য রকম কেমন জানি সন্দেহ লাগছে। এই কথা বলার সঙ্গে সঙ্গেই প্রতারক চক্র মোবাইল বন্ধ করে দেয়। এ বিষয়ে পানছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ আবুল হাশেম বলেন, এখন পর্যন্ত কারও কাছ থেকে প্রতারণা করে টাকা নিতে পারে নাই তা নিশ্চিত হয়েছি। বিষয়টি উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছেন বলে জানান।
×