ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

স্বপ্ন ভঙ্গ আম চাষীদের

প্রকাশিত: ০৬:২৮, ১৩ জুন ২০১৭

স্বপ্ন ভঙ্গ আম চাষীদের

সংবাদদাতা, মেহেরপুর ॥ সম্ভাবনাময় আম রফতানিতে ধাক্কা খেল মেহেরপুরের আম চাষিরা। চাষিদের সঙ্গে মৌখিক চুক্তি অনুযায়ী আম কিনতে গড়িমশি করছেন রফতানিকারকরা। ফলে বিদেশে রফতানির জন্য ব্যাগিং করা আম নিয়ে বিপাকে পড়েছেন জেলার আম চাষিরা। ২শ’ টন আম রফতানির লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও গেল ৫ দিনে রফতানিকারকরা আম কিনেছেন মাত্র ১২ টন। এরপর থেকে আর দেখা মিলছে না তাদের। সদুত্তর দিতে পারছে না কৃষি বিভাগও। গাছের আম পেকে পড়ে পড়ে নষ্ট হওয়ায় প্রতিনিয়তই লোকসানের পাল্লা ভারি হচ্ছে কৃষকদের। তবে রফতানিকারকরা জানিয়েছেন, সংগ্রহকৃত আমের মান যাচাইয়ের পর সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বাকি আম তারা কিনবেন কিনা। গত বছরে ব্যাগিং করে রফতানিকারকদের কাছ থেকে আমের ভাল দাম পাওয়ায় এবারও আম রফতানিতে উৎসাহিত হয় মেহেরপুরের আম চাষিরা। কৃষি বিভাগ ও রফতানিকারকদের নির্দেশনা মোতাবেক এবার ৯ লাখ আম আম ব্যাগিং করেন তারা। রফতানির জন্য ২৫ মে আম সংগ্রহ করার কথা ছিল তাদের। কিন্তু সেই আম সংগ্রহ শুরু করেন ৩১ মে থেকে। দাম দেয়া হয় কেজি প্রতি ৮৫ টাকা। অথচ গত বছর ছিল ৯৫ টাকা। এতে হতাশ হন আম চাষিরা। কারণ প্রতি কেজি আম রফতানিযোগ্য করে তুলতে খরচ হয়েছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা। তারপরও রফতানিকারকরা আম নেয়ার সময় ব্যাগিং করা আমের ৪০ ভাগ বাদ দিচ্ছেন। এতে ক্ষোভ বাড়তে থাকে কৃষকদের মাঝে। কিন্তু গত ৫ দিনে ১২ টন আম সংগ্রহ করার পর আর দেখা মিলছে না রফতানিকারকদের। আবার কোন কোন বাগানে এখনও শুরু হয়নি আম সংগ্রহ। ফলে গাছের আম গাছেই নষ্ট হতে শুরু হয়েছে। আম চাষিরা ভুগছেন চরম হতাশায়। বাড়তি খরচ করে ব্যাগিং করা আম তারা কোথায় বিক্রি করবেন তা নিয়ে চিন্তিত চাষিরা। কারণ স্থানীয় বাজারে বিক্রি করতে গেলে উৎপাদন খরচই উঠবে না। আম চাষি সাইদুর রহমান জানান, ২শ’ মেট্রিকটন আমের মধ্যে তিনি নিজেই উৎপাদন করেছেন ৫০ মেট্রিকটন। এর মধ্যে মাত্র ৭ মেট্রিকটন আম তার বাগান থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। বাকি আম নিয়ে তিনি কি করবেন কিছুই বুঝতে পারছেন। এছাড়াও রোজার সময় বাজারে আমের চাহিদাও কম। এতে প্রায় ১৫ থেকে ২০ লাখ টাকার লোকসান গুনতে হবে তাকে। কারণ প্রতিটি আমে ব্যাগ পরাতে খরচ হয়েছে ৫ টাকা করে। দুই লাখ ব্যাগে খরচ হয়েছে ১০ লাখ টাকা। সঙ্গে রয়েছে আনুষঙ্গিক খরচ। একই কথা জানালেন বুড়িপোতা গ্রামের আম চাষি সিরাজুল ইসলাম।
×