ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

জমজমাট ঈদবাজার

চট্টগ্রামে গাউন আর ক্যাপে তুষ্ট তরুণীরা

প্রকাশিত: ০৬:৩৫, ১০ জুন ২০১৭

চট্টগ্রামে গাউন আর ক্যাপে তুষ্ট তরুণীরা

মাকসুদ আহমদ, চট্টগ্রাম অফিস ॥ ঈদের আনন্দ অনেকটা পোশাকনির্ভর হয়ে পড়েছে। টিনেজ থেকে শুরু করে শিশুদের মাঝেও পোশাকের বাহার কাজ করছে প্রতিনিয়ত। ডিজিটাল এ যুগে এসে তৃতীয় প্রজন্মের দেখাদেখি রঙিন পোশাকে প্রৌঢ়দের অনেকেই নিজেদের সাজাতে চায়। ফলে টিনেজদের সঙ্গে ছুটছে তারাও। বিভিন্ন শপিংমল ছাড়াও পছন্দসই পোশাক পাওয়া না গেলে ইন্ডিভিজুয়্যাল শোরুমগুলোতে পছন্দের পোশাকের জন্য ঢু মারছে ক্রেতারা। পোশাকে চাকচিক্য চায় তরুণীরা। তবে এবার টুপিস-থ্রিপিস নয় গাউন আর ক্যাপ এর মাত্রা সবচেয়ে বেশি। বিভিন্ন ধরনের গাউন আর ক্যাপ ডিজাইনের জামা নজর কাড়ছে তরুণীদের। তৃতীয় প্রজন্মের এসব টিনেজরা রঙের সঙ্গে কাজের যেমন মিল খোঁজে তেমনি ঐসব পোশাক পরিধানেও নানা অর্নামেন্টসের প্রতি উদগ্রীব থাকে। এর পেছনে কাজ করছে নিজেদের সাজিয়ে তোলার প্রয়াস। কথায় আছে ছেলেরা সুন্দর। তাই তাদের সাজতে হয় না। কিন্তু মেয়েদের সুন্দরী সাজাতে প্রয়োজন পোশাকের পাশাপাশি নানা হারবাল প্রক্রিয়ার ছোঁয়া। প্রতিবছরই ঈদে নতুন চমক নিয়ে হাল ফ্যাশনের ডিজাইনের পোশাক নামে ভারতীয় ছবি ও আইটেম গার্লদের নামকে কেন্দ্র করে। আর বাঙালী পরিবারের মেয়েরা ঝুঁকে পড়ে এসব নামের উপর ভিত্তি করে পোশাকের খোঁজে। সে ফাঁকে অসাধু ব্যবসায়ী ও ডিজাইনাররা নাম বিকিকিনির মধ্য দিয়ে নিজেদের অবস্থান চাঙ্গা করে নেয়। মূলত দেশীয় সাজে, দেশীয় তৈরি পোশাকের প্রতি সচেতন নাগরিকদের নানা বুলি শেষ পর্যন্ত ভেস্তে যায় বিভিন্ন শোরুমের ডিসপ্লেতে সাজানো পোশাকের ভিড়ে। তরুণ সমাজের মধ্যে এবার টি শার্ট, পলো টি শার্ট, ক্যাজুয়্যাল টি শার্ট, ফরমাল টি শার্ট, ফতুয়া ও পাঞ্জাবি কমন আইটেমে পরিণত হয়েছে। তবে পাঞ্জাবির সঙ্গে তরুণরা এখন ওড়না ব্যবহারের যে ফ্যাশন তুলে ধরেছে তাতে শিশুরাও পাঞ্জাবির সঙ্গে তাদের চাহিদা মেটাতে অভিভাবকদের নজরে দিয়ে বিচরণ করছে মার্কেটগুলোতে। নগরীর বিভিন্ন শপিংমলগুলোর মধ্যে আফমী প্লাজা, ফিনলে শপিংমল, খুলশী টাউন সিটি, সানমার, আমিন সেন্টার, আখতারুজ্জামান সেন্টার, চিটাগাং শপিং সেন্টার ছাড়াও একক শোরুমের মধ্যে ক্যাটস আই, সৃষ্টি, চন্দ্রবিন্দু, অঞ্জনস, সালসা বিলসহ নামীদামী বেশকিছু ডিসপ্লে এবার তরুণদের জন্য ভাল কালেকশন রেখেছে। আড়ংয়ের ফতুয়া ও পাঞ্জাবি কালেকশনে তরুণদের অবস্থান একধাপ এগিয়ে। চট্টগ্রামে প্রায় ২শ’য়ের কাছাকাছি শপিংমল ও মার্কেট এবং ইন্ডিভিজুয়্যাল শোরুমে ঈদের কেনাকাটায় ব্যস্ত ক্রেতারা। নগরীর সবচেয়ে বেশি একক শো রুম দেখা যাচ্ছে চকবাজার, জিইসি ও আগ্রাবাদ কেন্দ্রিক। ফ্যাশনের পাল্লা ভারি করতে আড়ংয়ের মতো ক্ষুদ্র কুটির শিল্পে তৈরি হাতের নকশী কালেকশনেও টিনেজদের পিছুটান নেই। এদিকে, বিভিন্ন ক্রেতারা নগরীর পাইকারি বাজার ও খুচরা বাজারের তুলনা করতে গিয়ে ঈদের পোশাকের দাম অন্যবারের তুলনায় অনেক বেশি বলে দাবি করেছেন। কিন্তু বিক্রেতারা বলছেন ফ্যাশনের কথা চিন্তা করতে গিয়ে কস্টিং বেড়ে গেছে। তাই দাম তুলনামূলকভাবে ততটা নাগালের বাইরে নয়। মেয়েদের পোশাকের ক্ষেত্রে রঙের যেমন ছোঁয়া থাকতে হবে বর্তমান ফ্যাশনের আলোকে তেমনি ডিজাইন ও কাটিংয়ে বৈচিত্র্যপূর্ণ না হলে পোশাকের আগ্রহ কমে যায়। পোশাকে কটন, সিল্ক, মসলিন, লিলেন কটন, এন্ডি সিল্ক ও এন্ডি কটন কাপড়ে এবারের তরুণীদের আকর্ষণ কাড়তে ডিজাইনাররা তৈরি করেছে হরেক রকমের ফ্যাশনেবল পোশাক। কাটিং ও ডিজাইনে এসেছে নতুনত্ব। কিন্তু বুটিকস হাউসগুলো ব্যক্তিগত উদ্যোগে গড়ে উঠলেও ঐতিহ্য টিকিয়ে রাখতে আগের তুলনায় অনেকটা এগিয়ে গেছে বলে চট্টগ্রামে ক্রেতা সাধারণের অভিমত। কটন, সিল্ক, হাফসিল্ক, মসলিন কাপড়ে হ্যান্ড এমব্রয়ডারি, মেশিন এমব্রয়ডারি ও বল্ক প্রিন্টের শাড়িতে গৃহিণীদের মাতোয়ারা করতে বিক্রেতাদের টার্গেট থাকবে চাঁদ রাত পর্যন্ত। এদিকে, স্যালোয়ার কামিজের অর্ডার নেয়া বন্ধ করে দিয়েছে দামীদামী দর্জিরা।
×