ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

অবশেষে স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁধ নির্মাণ

প্রকাশিত: ০৬:৩৮, ২ জুন ২০১৭

অবশেষে স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁধ নির্মাণ

নিজস্ব সংবাদদাতা, কলাপাড়া, ১ জুন ॥ অবশেষে নিজস্ব অর্থায়নে নিজামপুর গ্রামের শত শত কৃষক প্রায় দেড় কিলোমিটার রিং বেড়িবাঁধ নির্মাণ করেছেন। তিন বছর আমন ফসল পায়নি তারা। গ্রামসংলগ্ন ভাঙ্গা বেড়িবাঁধটি মেরামত না করায় অন্তত এক হাজার কৃষক-জেলে পরিবারের দুরবস্থার যেন শেষ নেই। প্রতি কানি জমিতে এক হাজার টাকার অর্থ সহায়তা দিয়ে নিজেদের ওই তহবিলে রিং বেড়িবাঁধটির মাটি দেয়ার কাজ শেষ করেছেন। এখন ড্রেসিং করা বাকি। কোন উপায় না পেয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাছে ধর্ণা দিয়ে কাজ হয়নি। অবশেষে এমনটি করলেন। পুরান মহিপুর গ্রামের একাংশের চাষীরাও এদের সঙ্গে অংশ নিয়েছেন। নদীর পাড় ঘেঁষা বাড়িগুলোর মালিকরা ভাঙ্গা বাঁধে মাটি দিয়ে নিজের দিকের ঢেউ ঠেকানোর জন্য ব্লক প্লেসিং করছেন। এদের প্রশ্নÑ কার কাছে যাবেন। কেউ তাদের দুর্দশার কথা শোনেননি। টানা তিনটি বছর আমনের আবাদ হয়নি। জীবনের দুর্বিষহ অবস্থা কাটাতে অবশেষে কৃষকরা এমন উদ্যোগ নিলেন। সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ওয়াপদা থেকে মহিপুর যাওয়ার নিজামপুর ও পুরান মহিপুর সিলকোট সড়কের থেকে নিজামপুর বেড়িবাঁধ পর্যন্ত প্রায় দেড় কিলোমিটার এলাকার রিং বেড়িবাঁধ করার জন্য বেকু মেশিনে মাটি দেয়া হয়েছে। অন্তত অস্বাভাবিক জোয়ারের ঝাপটায় ভেতরে প্লাবিত না হয় এতটা উঁচু করে মাটি দেয়া হয়েছে। এখন মাটির ড্রেসিংয়ের কাজ চলছে। মনের ভেতর এসব মানুষের তুষের আগুনের কষ্ট সত্ত্বেও হাসিমুখে জীবনযুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছেন। সরকারের বেড়িবাঁধ মেরামত নিয়ে এসব মানুষের বিরূপ ধারণা। তারপরও দুটি গ্রামের মানুষ ধারদেনায় সংগ্রহ করা টাকায় করেছেন রিং বেড়িবাঁধ। শুধু জীবনের প্রয়োজনে, পেটের ক্ষুধা মেটানোর জন্য আমন আবাদের লক্ষ্য নিয়ে এমন রিং বেড়িবাঁধ করেছেন এসব বিপদাপন্ন মানুষ। পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল খায়ের জানান, সরকারের উর্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে নিজামপুরসহ গোটা পোল্ডারের নির্মাণকাজ করার প্রস্তাব পাঠানো রয়েছে। এমনকি এ বছর জরুরী মেরামত করার পরিকল্পনাও রয়েছে বলে এই প্রকৌশলী জানালেন।
×