স্টাফ রিপোর্টার ॥ আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোটের শরিক দলগুলোর মধ্যে অনেকেই এরশাদের নেতৃত্বাধীন সর্ববৃহৎ রাজনৈতিক জোট ‘সম্মিলিত জাতীয় জোট’-এ যোগ দেয়ার কথা জানিয়েছেন বিরোধী দলের জাপার নেতারা। আগামী কিছুদিনের মধ্যেই দুই জোটের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ একাধিক শরিক দল নির্বাচনী এই জোটে যোগ দেয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। গত সাত মে ৫৯ দলের সমন্বয়ে আনুষ্ঠানিক রাজনৈতিক জোটের ঘোষণা দেন স্বৈরশাসক হিসেবে খ্যাত হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। দল অনেক। এর মধ্যে মাত্র দুটির নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধন রয়েছে। এই জোটের নেতৃত্বে রয়েছে জাতীয় পার্টি। সোমবার সম্মিলিত জাতীয় জোটের লিয়াজোঁ কমিটির প্রথম সভা আহ্বান করা হয়। এরশাদের বনানী কার্যালয়ে এ বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সম্মিলিত জাতীয় জোটের প্রধান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদও উপস্থিতি ছিলেন। সভায় সভাপতিত্ব করেন সম্মিলিত জোটের প্রধান মুখপাত্র ও জাতীয় পার্টির মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার এমপি।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে জোটের পক্ষে জনমত বাড়াতে সম্মিলিতভাবে বিভিন্ন জেলায় সভা-সমাবেশের আয়োজন করা। এছাড়া বিভাগীয় পর্যায়ে মহাসমাবেশের আয়োজনের প্রস্তাবও এসেছে। অনেকেই বলছেন, জনসমর্থন বাড়াতে হলে বিএনপি-জামায়াত জোটের ভোট ব্যাংকে হানা দিতে হবে। এ জন্য ইসলামী ধারার রাজনীতির পক্ষে মত দেন অনেকে। এরই ধারাবাহিকতায় রমজান মাসে কিছু কর্মসূচী নেয়ারও সিদ্ধান্ত হয়। এছাড়াও আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে হেফাজতে ইসলামের সমর্থন আদায়ের বিষয়টিও আলোচনায় আসে। বৈঠকে যোগ দেয়া জাতীয় পার্টির একাধিক নেতা জানিয়েছেন, বৈঠকে জাপার প্রার্থী সঙ্কটের বিষয়টিও আলোচনায় এসেছে। বলা হয়েছে, সর্বোচ্চ ১৫০টি আসনে দলের যোগ্য প্রার্থী রয়েছে। বাকি আসনগুলোতে ভাল কোন প্রার্থী নেই। অর্থাৎ প্রার্থী সঙ্কট নিয়ে দলটিকে বহুদিন ধরেই চলতে হচ্ছে। তাই যেসব আসনে জাপার যোগ্য প্রার্থী নেই সেগুলোতে শরিক দলগুলোর যোগ্য প্রার্থীদের নামের তালিকা প্রস্তুত করতেও বলা হয়েছে।
বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, বাংলাদেশে নির্বাচন এলেই জোটের একটা প্রবণতা দেখা দেয়। সর্বসম্মতিক্রমে সারাদেশে সম্মিলিত জাতীয় জোটের লিয়াজোঁ কমিটির বিভাগ, জেলা, মহানগর, উপজেলা, পৌরসভা লিয়াজোঁ কমিটি গঠন করা হবে। দেশবাসীকে ঐক্য করাই আমাদের সম্মিলিত জাতীয় জোটের প্রচেষ্টা। রমজান মাসকে সামনে রেখে একযোগে সহমত থেকে কাজ করা আমাদের লক্ষ্য।
জোটের এই মুখপাত্র বলেন, আগামীতে আরও চমক আছে অপেক্ষা করুন। সম্মিলিত জাতীয় জোটের সঙ্গে আরও একাধিক রাজনৈতিক দল যোগ দেবে। কারণ তারা আমাদের ওপর আস্থা রাখতে চায়। আমরাও চাই গ্রহণযোগ্য দলগুলো আমাদের সঙ্গে আসুক। এতে জনসমর্থন বাড়বে। তিনি বলেন, এরশাদ সরকারের ৯ বছরের শাসনামলের উন্নয়ন এবং ভাল কাজ দেশের মানুষ এখনও ভোলেনি। এরশাদ সরকারের আমলে চাঁদাবাজি, অবৈধ দখলবাজি, গুম, হত্যা, শিশু ধর্ষণ, নারী ধর্ষণ, সমাজের অবক্ষয় ছিল না। এই জোটের মধ্য দিয়েই দেশের শান্তি, উন্নয়ন ও অগ্রগতির চেষ্টা থাকবে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সম্মিলিত জোটের মুখপাত্র রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, বিএনপির ২০৩০ ভিশন প্রত্যেক দলেরই রণকৌশল থাকে এবং সেটাই তারা প্রকাশ করছেন। এ সম্পর্কে আমার মন্তব্য নেই। তিনি অন্য এক প্রশ্নের উত্তরে বলেন, আমাদেরও ভিশন থাকবে নতুন নামে, মানুষের চাহিদা অনুসারে। জোটের মুখপাত্র আরও বলেন, আওয়ামী লীগ ও বিএনপির জোট থেকে আমাদের এই সম্মিলিত জাতীয় জোটে একাধিক রাজনৈতিক দলের যোগদানের সম্ভাবনা রয়েছে।
লিয়াজোঁ কমিটির সভায় উপস্থিত ছিলেনÑ জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও লিয়াজোঁ কমিটির সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ এমপি, সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা এমপি, আলহাজ সাহিদুর রহমান টেপা, এস এম ফয়সল চিশতী, তাজুল ইসলাম চৌধুরী এমপি, মেজর (অব) খালেদ আখতার।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: