ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

যমুনায় বালু উত্তোলন ॥ ঝুঁকিতে হার্ড পয়েন্ট

প্রকাশিত: ০৪:১১, ১০ মার্চ ২০১৭

যমুনায় বালু উত্তোলন ॥  ঝুঁকিতে হার্ড পয়েন্ট

স্টাফ রিপোর্টার, বগুড়া অফিস ॥ যমুনা পাড়ের সারিয়াকান্দিতে বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও তীর রক্ষায় বহু কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত শক্ত কাঠামোর (হার্ড পয়েন্টে) অতি নিকটে বালি উত্তোলন শুরু হয়েছে। মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে হার্ড পয়েন্ট। এ অবস্থায় নদীর পানি সামান্য বাড়লেই যে কোন মুহূর্তে ধসে যেতে পারে হার্ড পয়েন্ট। তা ঘটলে বড় ধরনের বিপর্যয় নেমে আসবে বগুড়াসহ নদী তীরের পুরো উত্তরাঞ্চলে। বগুড়া অঞ্চলে উচ্চ শক্তির শ্যালোইঞ্জিন দিয়ে মাটির গভীরে থেকে বেপরোয়াভাবে বালি উত্তোলনে ভূগর্ভের শিলাস্তর ও কাঠামো এলোমেলো হয়ে ভূমিকম্পের ভয়াবহ ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। এবার বালিদস্যুদের হাত পড়েছে নদীর তীরে যেখানে চর জেগেছে। তাদের হাত থেকে রেহাই পাচ্ছে না হার্ড পয়েন্টও। সারিয়াকান্দি ধুনট সোনাতলা এলাকায় যমুনার ও বাঙালী তীরের এলাকা ও চরগ্রামকে নদী ভাঙ্গন ও বন্যার হাত থেকে রক্ষায় গত শতকের ৯০-এর দশকের মধ্য ভাগে বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) নির্মাণ করে হার্ড পয়েন্ট। ব্যয় হয় প্রায় এক হাজার কোটি টাকা। বগুড়া ও সিরাজগঞ্জে নির্মিত হার্ড পয়েন্ট ও রিভেটমেন্ট তীর ভাঙ্গন থেকে রক্ষা করে বিশাল এলাকা। সারিয়াকান্দির কালিতলা গ্রোয়েনের কাছে নির্মিত হার্ড পয়েন্ট অনেক দুর্যোগ থেকে রক্ষা করে। তীরের ভাঙ্গন ও বন্যা অনেকটা রোধ হয়ে যায়। কিছুদিন ধরে যমুনায় বিচ্ছিন্নভাবে চর জেগে উঠছে। হার্ড পয়েন্টের কাছে অনেকটা জায়গা জুড়ে চর জেগেছে। যারা উচ্চ শক্তির শ্যালোইঞ্জিনে ও বেশি ব্যাসার্ধের পাইপে ভূগর্ভের স্তর থেকে বালি উত্তোলন করত তাদের দৃষ্টি পড়েছে সরকারের মালিকানাধীন যমুনায়। হার্ড পয়েন্টের কাছে এমন ভাবে আড়াআড়ি করে বালি তুলে নেয়া হচ্ছে যা হার্ড পয়েন্টেকেই ক্ষতি করছে। হার্ড পয়েন্টের কাঠামোর নিচে যে জায়গাটিতে সেøাপ হয়ে নদীর মধ্যে গিয়ে পয়েন্টকে ধরে রেখেছে চর জেগে ওঠায় তার নিচেই কোদাল দিয়ে বালি তুলে নেয়া হচ্ছে। প্রতিদিন কয়েক শ’ শ্রমিক এই বালি তুলে ট্রাকে ভরে দিচ্ছে। সেই বালি বিক্রি হচ্ছে অবকাঠামো নির্মাণ কাছে। খোঁজ খবর করে জানা যায় এই বালি উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় ট্রাকে করে যাচ্ছে। নদীকে বিপন্নের মধ্যে ফেলে দিয়ে এক শ্রেণীর বালি ব্যবসায়ী অবৈধভাবে হার্ড পয়েন্টের অতি নিকটে থেকে বালি তুলে নিচ্ছে। প্রশাসনের সামনে প্রতিদিন এই ঘটনা ঘটছে। কারও নজরদারি নেই। এলাকার লোকজন জানায় প্রতিদিন ভোর থেকে শুরু হয়ে সন্ধ্যা পর্যন্ত বালি তোলা হয়। বিভিন্ন জায়গা থেকে ট্রাক গিয়ে সেই বালি তুলে নিয়ে যায়।
×