ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

প্যারিস সম্মেলন থেকে ট্রাম্পের প্রতিও জরুরী বার্তা

একতরফা পদক্ষেপ নেবেন না ॥ ইসরাইল ও ফিলিস্তিনকে ফ্রান্স

প্রকাশিত: ০৬:৫৫, ১৭ জানুয়ারি ২০১৭

একতরফা পদক্ষেপ নেবেন না ॥ ইসরাইল ও ফিলিস্তিনকে ফ্রান্স

মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ে রবিবার প্যারিসে আন্তর্জাতিক শান্তি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে স্বাগতিক দেশ ফ্রান্স একতরফাভাবে কোন পদক্ষেপ না নেয়ার জন্য ইসরাইল ও ফিলিস্তিনী উভয়পক্ষকে সতর্ক করে দিয়েছে। পরবর্তী মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজনীতি হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার যে উদ্যোগ নিয়েছেন তা হিতে বিপরীত হতে পারে বলে ফ্রান্স হুঁশিয়ার করে দিয়েছে। খবর ওয়াশিংটন পোস্ট, এএফপি ও বিবিসি অনলাইনের। প্যারিস সম্মেলনে ৭০টির মতো দেশের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন। তবে যাদের জন্য এই সম্মেলন আয়োজন করা অর্থাৎ ইসরাইল ও ফিলিস্তিনী কর্তৃপক্ষ তাদের কেউ সম্মেলনে কোন প্রতিনিধি পাঠায়নি। ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ‘নিষ্ফল’ বলে সম্মেলন প্রত্যাখ্যান করেছেন। উদ্বোধনী অধিবেশনে ফরাসী পররাষ্ট্রমন্ত্রী জ্যঁ মার্ক আরাউলত বলেন, ‘দুই রাষ্ট্র সমাধানই যে ইসরাইল ও ফিলিস্তিন সঙ্কটের একমাত্র সমাধান এই সম্মেলনের মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় দ্ব্যর্থহীন ভাষায় সে কথা আবারও পুনর্ব্যক্ত করছে।’ ট্রাম্প ইসরাইলে মার্কিন দূতাবাস তেলআবিব থেকে জেরুজালেমে সরিয়ে আনার যে ঘোষণা দিয়ে রেখেছেন তা শান্তি প্রক্রিয়ার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে বলে তিনি সতর্ক করে দেন। এর অর্থ হবে জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী হিসেবে মেনে নেয়া। আরাউলত ট্রাম্পকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘যখন আপনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হবেন তখন আপনি এ রকম একটি ইস্যুতে একগুঁয়ের মতো একতরফাভাবে সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন না। আপনাকে অবশ্যই শান্তি প্রতিষ্ঠার মতো উদ্যোগ নিতে হবে।’ সম্মেলন থেকে আরব ও ইউরোপের প্রতিনিধিরা ট্রাম্পের উদ্দেশে দুই পৃষ্ঠার একটি বার্তা দিয়েছেন। এতে তারা শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য দুই রাষ্ট্র সমাধানের আশা জিইয়ে রাখার আহ্বান জানিয়েছেন। সম্মেলনে অংশ নেয়া মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি অধিকৃত ভূখ-ে বসতি নির্মাণ অব্যাহত রাখার জন্য ইসরাইলের সমালোচনা করে বলেন এই পদক্ষেপে শান্তি উদ্যোগের প্রতি নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। তিনি বলেন, তার টিম সম্মেলনের যৌথ ইশতেহারের ভাষার ওপর জোর দিয়েছে। যেখানে ইসরাইলীদের বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনীদের হামলারও নিন্দা জানানো হয়েছে। এক্ষেত্রে আরও ভারসাম্যপূর্ণ করা হয়েছে। প্যারিসে সম্মেলন নিছক আনুষ্ঠানিক একটি সম্মেলন হলেও এর প্রতীকী গুরুত্ব রয়েছে। কারণ যুক্তরাষ্ট্রে ক্ষমতার পালাবদল ঘটতে চলার এক সপ্তাহের কম সময় বাকি থাকতে সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হলো। মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি আলোচনা বিষয়ক যে কোন উদ্যোগে তৃতীয় পক্ষের উপস্থিতি ইসরাইল সমর্থন করে না। ইহুদী রাষ্ট্রটি মনে করে, একমাত্র ইসরাইল ও ফিলিস্তিনীদের মধ্যে সরাসরি আলোচনার মাধ্যমে বিদ্যমান সঙ্কট নিরসন করা সম্ভব। প্যারিস শান্তি আলোচনা প্রধান উদ্যোক্তা ছিলেন ফরাসী প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওঁলাদ। সম্মেলনে অংশগ্রহণের জন্য তিনি নেতানিয়াহু ও ফিলিস্তিনী কর্তৃপক্ষের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসকে স্বাগত জানিয়েছিলেন। কিন্তু তাদের কেউ এতে আসেননি বা তবে কোন প্রতিনিধিও পাঠাননি। নেতানিয়াহু ‘নিষ্ফল’ বলে শনিবার সম্মেলন প্রত্যাখ্যান করেন।
×