ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

বিজয় দিবসের আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী

উন্নয়ন ও মর্যাদা অক্ষুণ্ণ রাখতে চাই ক্ষমতার ধারাবাহিকতা

প্রকাশিত: ০৫:২৯, ১৮ ডিসেম্বর ২০১৬

উন্নয়ন ও মর্যাদা অক্ষুণ্ণ রাখতে চাই ক্ষমতার ধারাবাহিকতা

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা দেশের উন্নয়নের অগ্রযাত্রা অব্যাহত ও সারাবিশ্বে অর্জিত মর্যাদা অক্ষুণ্ণ রাখতে দেশের জনগণ আবারও আওয়ামী লীগসহ মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বাধীন জোটকে ক্ষমতায় আনবে বলে দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, নির্বাচন ও আন্দোলনে পরাজিতদের (বিএনপি-জামায়াত জোট) জনগণ কেন ভোট দেবে? এসব খুনী, যুদ্ধাপরাধী, আলবদর-আলশামসরা যাদের আমরা বিচার করেছি তারা ক্ষমতায় এলে দেশে একাত্তরের মতোই গণহত্যা চালাবে। এটাও দেশবাসী ভাল করেই বোঝে। তাই বিশ্বব্যাপী বাংলাদেশের মর্যাদার ধারা অক্ষুণœ ও উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে জনগণ মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী আওয়ামী লীগ ও তার জোটকে আবারও ভোট দিয়ে ক্ষমতায় আনবে। জনগণের প্রতি সে আস্থা ও বিশ্বাস আওয়ামী লীগের রয়েছে। ষড়যন্ত্রের পথ ছেড়ে গণতান্ত্রিক পথে আসার জন্য বিএনপি চেয়ারপারর্সন খালেদা জিয়ার প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নির্বাচন ও আন্দোলনে পরাজিত বিএনপি নেত্রী ভাল করেই জানেন দেশের জনগণ তাকে ভোট দেবে না। এ কারণে এখন উনি (খালেদা জিয়া) এমন অবস্থা চাইছেন যাতে কেউ নাগরদোলায় চড়িয়ে কিংবা কোলে তুলে নিয়ে গিয়ে তাকে ক্ষমতায় বসাবে। উনি সে চেষ্টাও করেছিলেন। কিন্তু সে দোলা নিয়ে আর কেউ আসবে না, কোলে তুলে কেউ তাকে ক্ষমতায় বসিয়েও দেবে না। যাদের আশা করেন, তারাও তার ডাকে সাড়া দেবে না। কাজেই গণতন্ত্রে বিশ্বাস করলে নানা কথা না বলে গণতন্ত্রের চর্চা করুন। মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে শনিবার রাজধানীর খামারবাড়ির কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। নির্বাচন কমিশন নিয়ে কথা বলার আগে ‘আয়নায় নিজের চেহারা’ দেখার জন্য খালেদা জিয়ার প্রতি আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ভোট চুরির অপরাধে যাকে (খালেদা জিয়া) দেশের জনগণ ক্ষমতা থেকে টেনে নামিয়েছিল, তিনি এখন নির্বাচনের শুদ্ধতা নিয়ে কোন মুখে কথা বলেন? এসব কথা বলার আগে ক্ষমতায় থাকতে কী করেছেন তা আয়না দিয়ে নিজের চেহারা দেখুন। একমাত্র আওয়ামী লীগই দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রাম করে দেশের মানুষের ভোট ও ভাতের অধিকার নিশ্চিত করেছে। তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে বিএনপি রাষ্ট্রপতির কাছে প্রস্তাব পাঠিয়েছে। রাষ্ট্রপতি তাদের ডেকেছেন। সব দলের সঙ্গে আলোচনা করেই রাষ্ট্রপতি সিদ্ধান্ত নেবেন। কিন্তু আমাদের দেশের জনগণের ওপর আমার পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস রয়েছে। জনগণই আওয়ামী লীগের মূল শক্তি। তাই আমরা যে উন্নয়ন ও অগ্রগতির যাত্রা শুরু করেছি তা অব্যাহত রাখতে, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার অব্যাহত, স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে সমুন্নত রাখতে আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস, দেশের জনগণ আবারও আমাদের ভোট দিয়ে দেশ সেবার সুযোগ দেবে। আওয়ামী লীগ জনগণের উন্নয়ন ও কল্যাণে কাজ করেছে। কাজেই জনগণ আবারও আওয়ামী লীগকেই ক্ষমতায় আনবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেনÑ শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী, সভাপতিম-লীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সিলেট সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র বদরউদ্দীন আহমেদ কামরান, কেন্দ্রীয় নেতা নুরুল ইসলাম ঠা-ু, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাদেক খান ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ। সভা পরিচালনা করেন কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ ও উপ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমীন। দেশের অগ্রযাত্রা ও বিশ্বে সৃষ্ট মর্যাদা অক্ষুণœ রাখতে দেশের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সকল শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী প্রশ্ন রেখে বলেন, অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারীরা কিভাবে গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে? যারা স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে না, বঙ্গবন্ধুর খুনীদের বিচার না করে পুরস্কৃত করে, তারা কিভাবে ন্যায় ও নৈতিকতায় বিশ্বাসী হতে পারে? যারা একাত্তরের ঘাতক, বুদ্ধিজীবী হত্যাকারী যুদ্ধাপরাধীদের মন্ত্রী বানিয়ে লাখো শহীদের রক্তস্নাত জাতীয় পতাকাকে অপমানিত করে তারা কিভাবে শান্তিতে বিশ্বাসী হতে পারে? তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় থেকে অত্যাচার-নির্যাতন, সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদ সৃষ্টি, দুর্নীতি-অর্থ পাচার ও দুঃশাসন ছাড়া দেশবাসীকে আর কিছুই দিতে পারেনি, আজ তারা নির্বাচন কমিশন নিয়ে কথা বলে। তাদের ১৫ ফেব্রুয়ারি প্রহসনের নির্বাচন, জিয়াউর রহমানের প্রহসনের হ্যাঁ-না ভোট, ’৮১ সালে নির্বাচনের নামে প্রহসন এবং ২০০১ সালে গ্যাস বিক্রির মুচলেকা দিয়ে ষড়যন্ত্রের নির্বাচন করার কথা কি বিএনপি নেত্রী ভুলে গেছেন? কিন্তু দেশবাসী ভোলেনি, কোনদিনই ভুলবে না। আমরা দীর্ঘ সংগ্রাম করে জনগণের যে ভোটের অধিকার ফিরিয়ে এনেছি, সে ভোটের অধিকার নিয়ে আর কেউ ছিনিমিনি খেলতে পারবে না। দেশের এ গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রাখতে হবে। গ্যাস বিক্রি করতে রাজি হলে ২০০১ সালের নির্বাচনেও ক্ষমতায় আসতে পারতামÑ এমন কথা জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ওই নির্বাচনের আগে গ্যাস বিক্রি করার জন্য নানাভাবে চাপ দেয়া হয়। তৎকালীন মার্কিন রাষ্ট্রপতিও আমাকে ডেকে নিয়ে ওই প্রস্তাব দেন। কিন্তু আমি সাফ জানিয়ে দিয়েছিলাম, দেশের মানুষের গ্যাসের চাহিদা মিটিয়ে আগামী ৫০ বছরের জন্য রিজার্ভ রেখে যদি উদ্বৃত্ত থাকে সে গ্যাস বিক্রি করব। ক্ষমতা আমার কাছে বড় নয়, দেশ ও জনগণের স্বার্থই আমার কাছে বড়। তিনি এ প্রসঙ্গে আরও বলেন, ‘২০০১ সালের নির্বাচনের আগের মুহূর্তে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টার বাংলাদেশে এসে আমাকে ও খালেদা জিয়াকে গ্যাস প্রসঙ্গ নিয়ে বৈঠকে বসেন। আমার সঙ্গে সাধারণ সম্পাদক প্রয়াত জিল্লুর রহমান এবং বিএনপির ওই সময়ের মহাসচিব আবদুল মান্নান ভূঁইয়া সেখানে উপস্থিত ছিলেন। সেখানে গ্যাস বিক্রির জন্য প্রস্তাব দেয়া হলে আমি স্পষ্ট করে বলে দেই যে, দেশের মানুষের এতটুকু স্বার্থহানি হোক সেটা আমি হতে দেব না। ক্ষমতার লোভে দেশের সম্পদ বিক্রি করব, সেই আমি নই। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ওই বৈঠকে সাফ এটা জানিয়ে দিয়ে চলে এলেও খালেদা জিয়া কিন্তু আসেননি। উনি ক্ষমতার লোভে গ্যাস বিক্রির চুক্তি করে আসেন। তখন কিন্তু আমি একটি কথাই বলেছিলাম, আল্লাহ জন বুঝে ধন দেন। তারা একুটও গ্যাস পাবে না, বিক্রিও করতে পারবে না, পারেওনি। কারণ আমি জানতাম, তারা গ্যাস পাবে না, তো দেবে কী? এ কারণে ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ বেশি ভোট পেলেও ক্ষমতায় আসে বিএনপি। কিন্তু ক্ষমতায় এলেও বিএনপি নেত্রী কিন্তু গ্যাস বিক্রি করতে পারেননি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের যে বিচার আমরা শুরু করেছি, তা অব্যাহত রাখতে হবে। সরকার দেশে উন্নয়নের যে গতিধারা সৃষ্টি করেছে, তার ধারাবাহিকতাও অব্যাহত রাখতে হবে। আমরা উন্নয়নের চলমান প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন করে দেশকে এগিয়ে নিতে চাই। ধর্ম-বর্ণ-গোত্র নির্বিশেষে সবার অধিকার বাস্তবায়ন হবে, সবাই মিলে শান্তিপূর্ণ দেশে বসবাস করবে। ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ আমরা গড়ে তুলতে চাই। বাংলাদেশের যে মর্যাদা বিশ্বব্যাপী গড়ে উঠেছে, সেই মর্যাদাও ধরে রাখতে হবে। এই ধারা অব্যাহত রাখতে দেশের জনগণ আমরা যারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশ গড়ে তুলেছি- সেই আওয়ামী লীগ ও আমাদের জোটকে আবারও ভোট দিয়ে ক্ষমতায় আনবে। এটা আমি দৃঢ়ভাবেই বিশ্বাস করি। আন্দোলনের নামে বিএনপি-জামায়াত জোটের নৃশংসতা, মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা ও সারাদেশে চালানো ধ্বংসযজ্ঞের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগের বিগত সরকারের উন্নয়ন ও অগ্রগতি দেখেই বিএনপি ভীত হয়ে পড়ে। ক্ষমতায় থাকতে তারা হত্যা, সন্ত্রাস, জঙ্গীবাদ সৃষ্টি, মানি লন্ডারিং, যুদ্ধাপরাধীদের মন্ত্রী বানিয়ে জাতীয় পতাকাকে অবমাননা, ১০ ট্রাক অস্ত্রের চোরাচালান, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা ছাড়া আর কিছুই করতে পারেনি। তাদের কেন জনগণ ভোট দেবে? এটা খালেদা জিয়া ভাল করেই বুঝতে পেরেছিলেন যে নির্বাচনে জনগণ তাদের ভোট দেবে না। এ কারণে নির্বাচনে না এসে উনি আন্দোলনের নামে নির্বিচারে মানুষ হত্যা করিয়েছেন। তিনি বলেন, সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত ঘরে ফিরব না এ কথা বলেন খালেদা জিয়া ঘরে নিজে নিজেই বন্দী থেকে হুকুম দিয়ে দিয়ে জীবন্ত শত শত মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করিয়েছেন। একটি জীবন্ত মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা কোন সুস্থ মস্তিকের মানুষ করতে পারে না। এই বীভৎসতা কাজটিই করে গেছেন খালেদা জিয়া ও তার কুলাঙ্গার পুত্র। কিন্তু শত শত মানুষকে হত্যা করেও উনি সফল হতে পারেননি। নাকে খত দিয়েই বিএনপি নেত্রীকে আদালতে আত্মসমর্পণ করে ঘরে ফিরতে হয়েছে। তাই যারা আন্দোলন ও নির্বাচনে পরাজিত তাদের জনগণ কেন ভোট দেবে? ২০০৯ থেকে এ পর্যন্ত গত প্রায় পৌনে সাত বছরে বর্তমান সরকারের উন্নয়ন ও অগ্রগতির চিত্র তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলেই দেশের মানুষ তাদের সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা ও অধিকার পায়, আর হত্যা-ক্যু ও ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করে তারা দেশকে লুটেপুটে খায়। দেশকে ধ্বংস করে দেয়। তিনি বলেন, ক্ষমতায় থেকে আমরা যতগুলো কাজ করেছি তার সবগুলোই দেশের মানুষের কল্যাণের জন্য করেছি। আজ সব ধরনের সূচকে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। বিএনপির রেখে যাওয়া ৩২শ’ মেগাওয়াট বিদ্যুত দিয়ে যাত্রা শুরু করে আমরা এখন ১৫ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুত উৎপাদনের সক্ষমতা অর্জন করেছি। দেশের ৭৮ ভাগ মানুষ এখন বিদ্যুত সুবিধা পাচ্ছে। তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, মাত্র পৌনে সাত বছরে আমরা দেশের এতো উন্নয়ন করেছি, ২১ বছর ধরে ক্ষমতা দখলকারীরা কী করেছে? প্রধানমন্ত্রী কারোর নাম উল্লেখ না করে বলেন, বাঙালীর জাতির দুর্ভাগ্য যে, বার বার সংগ্রাম করে তারা অধিকার আদায় করে, ষড়যন্ত্র করে তা আবার ছিনিয়ে নেয়া হয়। দেশের অনেক জ্ঞানী-গুণী কিছু মানুষ আছে যারা প্রায়শই এসব চক্রান্তের সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়ে। এদের দেশের মানুষের সঙ্গে বেইমানি করার চিহ্ন আমরা বার বারই দেখেছি। এদের ক্ষমতার মোহ এতই যে, এরা বরাবরই ষড়যন্ত্রকারীদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে দেশকে পিছিয়ে দেয়, দেশের কষ্টার্জিত গণতন্ত্রকে হরণ করতে চায়। ২০০৮ সালে নির্বাচনের সময় ব্যর্থ হওয়া উপদেষ্টারাই এখন টকশোতে যান, কথা বলেন এমন অভিযোগ তুলে শেখ হাসিনা এর সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, তারা টকশোতে গেলে বলা উচিত কী কারণে তারা ব্যর্থ হয়েছিলেন। সে সময় কেন এমন ঘটেছিল। তখন তারা কেন ব্যর্থ হয়েছিল তা কখনও বলেননি। তিনি বলেন, যারা নির্বাচন করার দায়িত্ব নিয়ে নির্বাচন করতে পারে না তারা কীভাবে উপদেশ দেয় বুঝি না। তখন বিএনপি-জামায়াত জোটের কারণেই তারা নির্বাচন করতে পারেননি, এ কারণেই দেশে ওয়ান ইলেভেনের সৃষ্টি হয়েছিল যোগ করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী তাঁর ৫০ বছরের রাজনৈতিক অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে উল্টো পথে পরিচালিত করা হয়েছিল। ২১ বছর পর ক্ষমতায় এসে আমরা ইতিহাস বিকৃতির হাত থেকে দেশকে রক্ষা করেছি। এবারের বিজয় দিবসে তরুণ-যুবা-ছাত্র-জনতার যে বাঁধভাঙ্গা জোয়ার ও উল্লাস আমি দেখেছি। আমার দলের বিজয় শোভযাত্রার কারণে আমাকে জ্যামে আটকে থাকতে হয়েছে। দেশের মানুষ সঠিক ইতিহাস জানতে পেরেছে বলেই মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে এমন জোয়ারের সৃষ্টি হয়েছে। আমার ৫০ বছরের রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা থেকে আমি বলতে পারি, আর কোনদিন কেউ দেশের প্রকৃত ইতিহাসকে বিকৃত করতে পারবে না। দেশের প্রকৃত চেতনা জাগ্রত হয়েছে বলেই দেশ উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাচ্ছে। এই অগ্রযাত্রা থেকে কোন অপশক্তিই দেশবাসীকে আর বঞ্চিত করতে পারবে না। আগামী ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে দেশকে ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত-সমৃদ্ধশালী বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা আমরা গড়ে তুলবই।
×