ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

পদাবলী কীর্তন একেবারেই ম্লান ॥ কিরণ চন্দ্র রায়

প্রকাশিত: ০৬:০৪, ২৯ অক্টোবর ২০১৬

পদাবলী কীর্তন একেবারেই ম্লান ॥ কিরণ চন্দ্র রায়

সঙ্গীত শিল্পী কিরন চন্দ্র রায়। দীর্ঘদিন ধরে বাংলা লোকসঙ্গীত ও ভক্তিগীতির অমিয়ধারায় নিজেকে সিক্ত করার পাশাপাশি শ্রোতাদের মন জয় করে চলেছেন। বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের বানারে শিল্পীর কণ্ঠে ধারণকৃত প্রাচীন ভক্তিগীতি পদাবলী কীর্তনের সংকলন ‘মেঘ যামিনী’ এ্যালবামটি প্রকাশিত হবে বেঙ্গল আর্টস প্রিসিঙ্কটে আজ সন্ধ্যা ৬টায়। অনুষ্ঠানে তিনি সঙ্গীত পরিবেশন করবেন। এ্যালবাম ও গান নিয়ে কথা হয় তার সঙ্গে। ‘মেঘ যামিনী’ এ্যালবাম সম্পর্কে বলুন। কিরণ চন্দ্র রায় : মধ্যযুগীয় বৈঞ্চব পদাবলী থেকে ১০টি গান নিয়ে তৈরি হয়েছে ‘মেঘ যামিনী’ এ্যালবামটি। এগুলো হচ্ছে-মাধব বহুত মিনতি করি (বিদ্যাপতি), ঢল ঢল কাঁচা অঙ্গের লাবণি (গোবিন্দ দাস), সই কেবা শুনাইল শ্যাম-নাম (দ্বিজচ-ীদাস), রূপ লাগি আঁখি ঝুরে (জ্ঞান দাস), সুখের লাগিয়া এ ঘর বাঁধিনু (জ্ঞান দাস), গোঠে আমি যাব মাগো (বলরাম দাস), আজু রজনী হম ভাগে গমওল (বিদ্যাপতি), মেঘ যামিনী চললি কামিনী (গোবিন্দ দাস), ঐ বেণু বাজে (অজ্ঞাত) ও অল্প বয়সে মোর (যদু)। সব গানের যন্ত্রানুষঙ্গ পরিচালনা করেছেন ভারতের দুর্বাদল চট্টোপাধ্যায়। এ্যালবামটি নিয়ে আপনি কেমন আশাবাদী? কিরণ চন্দ্র রায় : বাংলা গানের আদি যুগের গান হচ্ছে কীর্তন। সাধারণত রাধাকৃষ্ণের লীলা ও গৌরাঙ্গের জীবনগাথার বিভিন্ন পর্যায় অবলম্বনে কীর্তন রচনা করা হয়। সঙ্গীত নিয়ে যে তর্ক-বিতর্ক হয়, আমি মনে করি তার সমাধানে আমার এ এ্যালবামের গানগুলো খুবই উপযোগী ভূমিকা পালন করবে। আমি খুবই আশাবাদী শ্রোতাদের গানগুলো ভিন্ন এক রস এনে দেবে। এতে শ্রোতারা সুরের বৈশিষ্ট্য ও গানের বাণী সব মিলে নতুনত্বের স্বাদ পাবে, যা সবার চিত্ত জয় করবে বলে আমি প্রত্যাশা করি। আমাদের দেশে পদাবলী কীর্তনের বর্তমান অবস্থা কেমন? কিরণ চন্দ্র রায়: আমার মনে হয় পদাবলী কীর্তনের অবস্থা একেবারেই ম্লান। এটা বাংলাদেশের জন্য খুবই দুঃখজনক। বাংলা সংস্কৃতিকে লালন করতে হলে, কীর্তনের চর্চা অবশ্যই করণীয়। নতুনরা কীর্তন গানের প্রতি তেমন আকৃষ্ট নয় কেন? কিরণ চন্দ্র রায় : এ গানের প্রতি আকৃষ্ট না হওয়ার পেছনে একটাই কারণ, আর তা হচ্ছে বাংলা লোক গান ও কীর্তনের কোন পৃষ্ঠপোষকতা নেই। লোক গানে আধুনিক বাদ্যযন্ত্র ব্যবহারে আপনার অভিমত কি? কিরণ চন্দ্র রায় : এটাও দৈনদশার পরিচয়। আমরা যদি আমাদের বাংলা গানে শাশ্বত যন্দ্র সঠিকভাবে ব্যবহার করতে পারি তাহলে বিদেশী যন্দ্রের কোন প্রয়োজন নেই। আমাদের উচিত লোকজযন্ত্র ব্যবহার করে নতুনদের এ গানে উৎসাহ দেয়া। সংস্কৃতির জানালা খোলা। কিন্তু দেখতে হবে কতটুকু গ্রহণ করলে আমার স্বকীয়তা নষ্ট হবে না। সেটুকু মাথায় রেখে অগ্রসর হতে হবে। লালনের গানের সুর-বাণী অক্ষত রেখে বুঝে আধুনিক বাদ্যযন্ত্র ব্যবহার করা যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে যদি পরিমিতি বোধ না থাকে তাহলে সে গানের জন্য অনেক ক্ষতির কারণ হবে। গানের ক্ষেত্রে দেখতে হবে আমাদের সংস্কৃতি যেন নষ্ট না হয়। Ñগৌতম পা-ে
×